১১ নভেম্বর যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী যশোরের নেতা-কর্মীরা সম্মেলনের দিন ক্ষণের আশায়
মালিক উজ জামান, যশোর : আগামী ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। যশোর জেলা যুবলীগের নেতা-কর্মীরা আশায় বুক বেঁধেছেন ‘হয়তো প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে এবার জেলা যুবলীগ সম্মেলনের তারিখ তারা জানতে পারবেন। অনেকেই বলেছেন, ২০ বছর ধরে আছি, আর যুবলীগ করতে চাইনা। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে যশোর জেলা যুবলীগের কমিটি হয় না। একযুগ ধরে অপেক্ষায় আর কত!
ইতিহাস ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর শেখ ফজলুল হক মনি কর্তৃক বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। সামনে সেই দিন। হাতে রয়েছে মাত্র ১৮/১৯ দিন। যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ দীর্ঘদিন যুবলীগের কর্মী হয়েছেন যুবলীগ করবেন বলে। জেলা সম্মেলন যদি ১৬ থেকে বছর দীর্ঘ অপেক্ষা হয়, যশোরের কোন কোন ইউনিয়নে ৪০ বছর ধরে কমিটি হয় না যুবলীগের। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল যশোর জেলা যুবলীগের। কিন্তু সম্মেলন হয়নি। পরবর্তীতে তাঁরিখও জানানো হয়নি। পদ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে সিভি নেয়া হয়েছে ৭/৮ মাস আগে। এখনো পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারিনি কেন্দ্রীয় যুবলীগ। যশোর জেলা যুবলীগের নতুন কমিটি চান তৃণমূল কর্মী ও সাবেক ছাত্রনেতারা।
দেড়যুগ পর যশোর জেলা যুবলীগের নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ৩ থেকে ৬ জানুয়ারির মধ্যে যুবলীগের প্রধান কার্যালয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও সর্বশেষ শিক্ষা সনদের ফটোকপিসহ জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) জমা দিতে বলা হয়েছে। ১ জানুয়ারি যুবলীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের সিভি আহ্বান করা হয়। ২৩ জানুয়ারি যশোরে জেলা যুবলীগের সম্মেলন হবে বলে বছরের ২০২১ সালের ডিসেম্বর বর্ধিত সভায় ঘোষণা করা হয়। যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বর আনোয়ার হোসেন জানান, তৃণমূলের ইউনিটগুলোর দাবির ভিত্তিতে বর্ধিত সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল।
২৩ জানুয়ারি সম্মেলন হবে হয়নি। তবে সভাপতি-সম্পাদক পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে আলোচনায় আছেন যশোর জেলা যুবলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক, যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ রায়, যুবলীগ নেতা মঈনুদ্দীন মিঠু, যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েল, যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আরিফুল ইসলাম রিয়াদ, যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল, যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী, যশোর পৌর ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহিদুর রহমান মিলন, ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী আলমগীর কবীর সুমন, সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়াও আলোচনায় রয়েছেন আরো কয়েকজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। আলোচনায় রয়েছেন ফন্টু চাকলাদার।
২০০৩ সালের ১৯ জুলাই যশোর জেলা যুবলীগের সম্মেলন হয়। এতে মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী সভাপতি ও জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু সাধারণ সম্পাদক হন। ৫৩ সদস্যের সে কমিটির মেয়াদ ২০০৬ সালে শেষ হয়। এরপর পেরিয়ে গেছে ১৬ বছর। তিন মাসের আহ্বায়ক কমিটিতে চার বছর পার হয়েছে সবগুলো উপজেলায়। ২০১৭ সালের ২১ মার্চ যশোর সদর ও শহর যুবলীগ, ২৯ মার্চ বাঘারপাড়া ও অভয়নগর উপজেলা এবং এপ্রিল ও মে মাসে মণিরামপুর, কেশবপুর, চৌগাছা ও ঝিকরগাছা উপজেলা যুবলীগের তিন মাস মেয়াদি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় যুবলীগ। তিন মাসের সেই আহ্বায়ক কমিটি পাঁচ বছর পার হয়েছে। সর্বশেষ পহেলা ডিসেম্বর যশোর জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভা হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বর শেখ সোহেল উদ্দিন। তবে সেসব এখন অতীত। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী সামনে। আর তাই আবার যশোর জেলা যুবলীগ সম্মেলনের দিন ক্ষণ পাওয়ার আশায় নেতা-কর্মীরা। এছাড়া তাদের আর যে কিছুই করার নেই।