বিশেষ খবরলাইফস্টাইল

যশোরের বাজার নানা ফলে ভরপুর

Colourful fruit and vegetable market stall in a rustic display

মালিক উজ জামান, যশোর : বাংলার পল্লী কবি জসিমউদ্দীন তার মামার বাড়ি কবিতায় লিখেছেন, ‘ঝড়ের দিনে মামার দেশে আম কুড়াতে সুখ
পাকা আমের মধূর রসে রঙিন করি মুখ’।
এই কবিতা জ্যৈষ্ঠ মাস তথা মধুমাস মাসকে মনে করিয়ে দেয়। বাংলায় এটি গ্রীষ্ম কাল বা ফলের কাল হিসাবে পরিগণিত হয়। বৈশাখ শেষ হয়েছে। এখন জ্যৈষ্ঠ মাস। সুস্বাদু ফলের অধিক সরবরাহ থাকায় সবার কাছে মাসটি মধুমাস নামেই পরিচিত। বছর জুড়ে কমবেশি ফল পাওয়া গেলেও সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় এই সময়ে। এবারো বিভিন্ন রসালো ফল নিয়ে মধু মাসের আগমন। রসালো ফলে এখন ভরপুর যশোরের বাজার। ফলের মধ্যে আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, জামরুল, তরমুজ, আনারস, পেয়ারা, পেঁপে ছাড়াও এ মাসে মিলবে লটকন, বাঙ্গিসহ রসালো সব ফল। লিচু, তরমুজ, বাঙ্গি এবং কিছু কাঁঠাল এরই মধ্যে বাজারে চলে এসেছে। আমের দেখাও মিলেছে বাজারে।
ষড়ঋতুর বাংলাদেশে গ্রীষ্মের গরম হাওয়ায় মধুরসে ভরা বিভিন্ন জাতের ফলের মিষ্টি সৌরভ নিয়ে আগমন হয়েছে জ্যৈষ্ঠের। জ্যৈষ্ঠের দাবদাহে সারা দেশ মেতে উঠছে পাকা ফলের মিষ্টি রসে। মধু মাসের মিষ্টি ও সুস্বাদু ফল মিশে আছে আমাদের ঐতিহ্যের সাথে। প্রতি বছরের মতো এবারও গ্রীষ্মকালীন মৌসুমী ফলে ছেয়ে গেছে যশোর শহরের বিভিন্ন ফলবাজার। শহর ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি বাজারেই গ্রীষ্মকালীন মৌসুমী ফলের সমারোহ। এসব ফলের মধ্যে রয়েছে লিচু, কাঁঠাল, আম, তালের শ্বাস, আনারস ইত্যাদি। এছাড়া মৌসুম শেষ হওয়ায় বিদায়ের পথে থাকা বেল, বাঙ্গি ও তরমুজের মতো ফলও দেখা যাচ্ছে বাজারগুলোতে।
এসব ফলের গন্ধ সুবাস ছড়াচ্ছে প্রতিটি বাজারে। গ্রীষ্মকালীন মৌসুমী ফলের মধ্যে বর্তমানে বাজারে ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে লিচু। এছাড়া শহরের প্রায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লায়ও ভ্যানে করে মৌসুমী ফল বিক্রি হচ্ছে। বাজার থেকে কিছুটা কম দামে ফল বিক্রি হচ্ছে ভ্যানে ভ্রাম্যমাণ দোকান গুলোতে। শহরের প্রাণকেন্দ্র দড়াটানায় দেখা যায়, বিক্রেতারা ব্যস্ত সময় পার করছেন ফল বিক্রিতে। তারা মূল দোকানের সামনের অংশে মৌসুমী ফল রেখে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন। এই বাজারে বেশি বিক্রি হচ্ছে লিচু। তবে লিচু পরিপূর্ন হলেও আম মাত্রই আসতে শুরু করেছে বাজারে। ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ফল বাজারের বেশির ভাগ অংশ থাকবে মিষ্টি ও রসালো আমের দখলে। শহরের পুরাতন বাস্ট্যান্ড মনিহার, এইচএমএম রোড, কাঠেরপুল, রেলস্টেশন, চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, চেকপোষ্ট চাঁচড়া, পালবাড়ী এলাকায় বিক্রি হচ্ছে ফল। এছাড়া সকল উপজেলা বাজার বা গুরুত্বপূর্ন বাজারে রসালো এসব ফল বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে, সদর উপজেলার রুপদিয়া, রাজারহাট, পুলেরহাট, সাড়াপোল, সতীঘাটা, কুয়াদা, হামিদপুর, ফতেপুর বাজার।
যশোর ফল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন জানান, বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে লিচু। প্রকার ভেদে প্রতি একশ লিচু বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ৩০০ টাকায়। পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এর মনিহার সিনেমা হলের বিপরীতে প্রতিদিন সকালে পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে লিচু। তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২০০ টাকা পিস। তবে একটু দাম কমেছে অশনি প্রভাবে বৃষ্টির কারণে। কিছু কিছু আম পাওয়া যাচ্ছে এখন। এক সপ্তাহ পরে পুরোদমে সব ধরনের আম পাওয়া যাবে।
ফল ব্যবসায়ীরা জানান, আমের বেচাকেনা এখনো জমেনি। তবে লিচুর এখন ভরা মৌসুম। তাই লিচুর ব্যবসা জমজমাট। দড়্টানা ব্রিজর পূর্বপাশে এক ফল ক্রেতা বলেন ৩০০ টাকা দিয়ে ১০০ মোজাফফর লিচু কিনেছি। তিনি বলেন ২২০ টাকায় বোম্বাই লিচু পাওয়া যাচ্ছে। কাঠেরপুল এলাকার ফল বিক্রেতারা জানান ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত প্রতি পিস তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। আমের বেচাকেনা জমে উঠবে আগামী সপ্তাহ থেকে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button