আঞ্চলিকশীর্ষ নিউজ

রাঙ্গুনিয়ায় প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ, মামলার সাত দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি আসামি

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় এক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষনের অভিযোগে মো. বখতিয়ার (২১) নামে এক তরুনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (২২ আগষ্ট) প্রতিবন্ধী কিশোরীর পিতা মো. ইউনুস বাদী হয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলাটি করেন। কিন্তু মামলার সাতদিন পেরুলেও আসামি ধরা ছোঁয়ায় বাইরে হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন কিশোরীর পরিবার। এর আগে রোববার (২০ আগষ্ট) বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর নতুন পাড়া (চামবা ঘুণ) এলাকায় একটি পাহাড়ে ধর্ষণের শিকার হয় ১৬ বছর বয়সী বাক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ওই কিশোরী।
প্রতিবন্ধী কিশোরীর বাড়ি দক্ষিণ রাজানগর খোরশেদ তালুক ছাবের চৌকিদার বাড়ি। মামলার বিবাদী তরুণের বাড়ি একই ইউনিয়নের খোরশেদ তালুক নতুন পাড়া এলাকায়। সে ওই এলাকার মৃত আবু সৈয়দের পুত্র।
প্রতিবন্ধী কিশোরীর পিতা মো. ইউনুস জানান, আমার মেয়ে জন্ম থেকেই বুদ্ধি ও বাক প্রতিবন্ধী। আমি আমার মেয়েকে নিয়ে পাহাড়েই থাকি। ঘটনার দিন সকাল ১০ টার দিকে আমার মেয়ে ১০ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে খোরশেদ তালুক দোকানে আসে। পরে ২টার দিকে সে বাড়ি না ফেরায় খুঁজতে বের হয়। তাকে দোকানের পাশ্ববর্তী একটি ঘরের কার্নিশে দেখতে পায়। পরে তাকে বাড়িতে চলে যেতে বলি। সে ওঠে বাড়ির দিকে রওনা দেয়। এর একটু পরেই মামলার সাক্ষী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নুরু ড্রাইভার আমাকে বলে তার মেয়েকে বখতিয়ার পাশ্ববর্তী পাহাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। ঘটনাস্থল থেকে আমার মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যায়। আমার মেয়ে ইশারায় বলেন তাকে মুখ চেপে ধরে নিয়ে টেনে পাহাড়ে নিয়ে গেছে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে বিষয়টি অবগত করি। কিন্তু তিনি কোন সুরহা করেননি। বরং একদিন আমাকে ঘুরিয়েছে। পরে আমার মেয়েকে নিয়ে দক্ষিণ রাজানগর ইউপি চেয়ারম্যান আহমদ সৈয়দ তালুকদার’র কাছে যায়। তিনি আমাকে তৎক্ষনাৎ থানায় যেতে পরামর্শ দেন। পরে থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করি এবং সেদিন আমাকে আর মেয়েকে থানায় রাখা হয়। পরদিন মেয়ের মেডিকেল টেস্ট করেন।  কিন্তু আজ ছয়দিন পেরিয়ে গেলেও আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এদিকে প্রথমে ঘটনা সাজানো নাটক বলে দাবী করেন বখতিয়ারের পরিবার। তার পরিবারের পক্ষে তার ভগ্নীপতি মো. সেলিম জানান, আমাদের ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা নাটক সাজিয়েছে। এক পর্যায়ে তিনি দোষ শিকার করে বাদী পক্ষের সাথে সামাজিকভাবে মিমাংসার জন্য বসতে চেয়েছেন বলে জানান। কিন্তু তারা আর্থিক লেনলেনে রাজি হচ্ছেনা বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রাশেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে আমি তাদেরকে চেয়ারম্যান মহোদয়ের কাছে পাঠিয়ে দিই। পরে পুলিশ এসে তদন্ত করে গেছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আহমদ সৈয়দ তালুকদার বলেন, প্রতিবন্ধী কিশোরীকে নিয়ে তার বাবা আমার কাছে এসেছিল। আমি দ্রুত তাদের থানায় যেতে পরামর্শ দিই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক এস আই মো. আবু বক্কর ভূঁইয়া জানান, প্রাথমিকভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা আসামিকে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছি।
এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, মামলার পর তরুণীর মেডিকেল টেস্ট করা হয়েছে। তবে রিপোর্ট এখনো হাতে আসেনি। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button