যশোরে নেতার চারিপাশে হাতা ভরা
মালিক উজ জামান :
নেতার চারিপাশে থাকে ওরা
স্ব অনুসারীরা বলে ভীমসেন চ্যালা
মনছুট বড়ের ভাষায় তারা চামুন্ডা
বিরোধী বলে নাকি ওদের প্রায় ফাতরা
গালি দিলে বাঙালী হয় বটে আলকাতরা
সবাই ধরে রাখে, মাঝে মধ্যে চড় থাপ্পড়
অনুশোচনা নেই তাই সে ব্যাটা ভাবে পাপড়
হাতি শালে না থাকলেও ফানুস রাখে ফুলিয়ে
শুনে শুনে ভুক্তভোগীর মাথা যায় সেথা গুলিয়ে
যদি ধরে আনতে বলে কখনো ঐ বড় ভাই
বেঁধে ধরে আনে মার ধোর তারপর হায় হায়
এভাবেই চলছে সেই আদি থেকে বাংলা জুড়ে
নেতার মন জুগিয়ে আসে তালিকায় ভূইফোঁড়ে
যত অনিষ্ট এসবে এখন বেশ জোরে রাজনীতিতে
আর তাই ফাঁটল দেখা যায় সমাজ নিয়ম নীতিতে।
যশোর জুড়ে এখন রাজনীতির মাঠে নেতার সাথে জুটেছে হোতা। লোকে বলে ওরা চ্যালা চামুন্ডা। কি পৌরসভার মেয়র, কি কাউন্সিলর সবার সাথেই জুটে যাচ্ছে এসব অপ্রয়োজনীয় ‘ক্যাডার’। যার সাথে থাকে তিনি বলেন ওরা আমার ক্যাডার। প্রাণ বাঁচাতে সাথে রাখতে হয়।
মানুষজনের অভিযোগ, শুধু শহরেই নয়, গ্রামেগঞ্জেও এই হাতার দেখা মিলছে। গ্রামের মেম্বরের সাথে থাকছে। থাকছে মহিলা সংরক্ষিত মেম্বরের সাথেও। ওয়ার্ড রাজনৈতিক সরকারি দল, সরকার দলীয় অঙ্গসংগঠনেও তাদের বেশ জোরালো উপস্থিতি। বিরোধী দলের নেতাদের সাথেও থাকছে এসব ভূইফোড় ব্যাটা।
জেলা পর্যায়ের রাজনৈতিক দলের সভাপতি, সাধারন সম্পাদকের সাথে তো থাকেই। চ্যালা থাকছে দলীয় ক্যাডার যার কোন পদ নেই তার সাথেও।
যশোর পৌরনাগরিকের অভিযোগ রাজনীতি দুরে যাক, এমনকি কিশোর গ্যাং ঠ্যারোদের সাথেও থাকছে এসব গ্যারাই চ্যালা চামুন্ডা। গ্যাং প্রধান বা তার সেকেন্ড ইন কমান্ডও এসব চ্যালা চামুন্ডা ছাড়া চলতে পারেনা।
যশোর শহরের এক পরিচিত রাজনৈতিক কর্মী বললেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সাথে দেখা করতে গেলেও চ্যালার রকমারি ঠ্যালা সামলাতে হয়। অনেক সময় দেখাই মেলে না। তাহলে বলুন দেখি মেয়রের সাথে দেখা করার ঝক্কিটা কত। আর যদি যশোর-৩ আসনের এমপির সাথে বা প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যরে সাথে দেখা করার ব্যাপার স্যাপার হয় তাহলে তো আমার হয়রানির শেষ নেই। অথচ দেখেন বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করাটাও এত ঝক্কি ঝামেলার ছিল না। সেই বঙ্গবন্ধুর সাধের বাংলাদেশে এখন পাতি চ্যালা চামুন্ডা বোঝাই।
চা বিড়ি খায় সাধাসিধে মানুষ ‘রশিদ বাগচী’। আর আছে মানুষের ভালবাসায় ‘প্রফেসর রশিদ’ বললেন, আটা চালের স্লিপ আনতে গেছিলাম। সে যে কি হয়রানি ভাই। তবে ওসব হয়রানি মোটেও মানেননা ইদ্রিস। তিনি বলেন, ওসব খ্যাতা ট্যাথার মাতব্বরি দেখবোনা। আমার কম্বল চাল আ্টার প্রয়োজন নেই। চ্যালা চামুন্ডা নেতারা গুলে গুলে খাকগে যাক। আমি গরীব মানুষ কষ্ট করে আয় করি। নিজ আয়ের টাকা দিয়ে সংসার চালায়। ওসব চ্যালা চামুন্ডা যদি না সরাতে পারে তবে নেতাগিরি ওদের শীঘ্রই কুপোকাৎ হবে।
রিক্সাচালক লস্কর বললেন, চ্যালার ছড়াছড়ি নেতাদের ডেরায়। তেঁতুলতলা, কাঁঠালতলা, বকুলতলা থেকে শুরু করে কাজীপাড়া, ঘোপ, ঝুমঝুমপুর সর্বত্র রাজনৈতিক নেতা বা জনতার নেতা সবার কাছেই চ্যালা চামুন্ডা বোঝাই। এমনকি তা স্টেশনেও রয়েছে। যেমন রয়েছে চাঁচড়া, আরবপুর, পালবাড়ি, এমনকি সকল ইউনিয়ন পরিষদ, রাজনৈতিক অফিস, শ্রমিক কার্যালয় সর্বত্রই নেতার সাথে চ্যালা চামুন্ডার ছড়াছড়ি।
এসব দেখে সমাজ কুলির গলায় এবার গানের কলি
‘ এ কি রাম হায় বিধি বাম
ওরে বাবা ভাদু নেতা শীঘ্র থাম
তুমি যদি না আপন তবে যায় ছুটে কাম
আমিও বনে যাবো করে তোমায় প্রণাম।’