খেলাবিশেষ খবর

অনিয়ম, দুর্নীতি ধরিয়ে দেবার জন্য অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা জরুরী : ক্রীড়া উপদেষ্টা

ঢাকা, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ (বাসস) : রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে দেশের অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো ক্রীড়াঙ্গনেও শুরু হয়েছে সংস্কার কার্যক্রম। তারই অংশ হিসেবে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আজ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন। ক্রীড়াঙ্গনে অনিয়ম, দূর্নীতি ধরিয়ে দেবার জন্য সাংবাদিকদের অনুসন্ধানী রিপোর্টের উপর জোড় দেবার আহবান জানিয়েছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। পাশাপাশি বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতারও আহবান জানিয়েছেন।
দেশের বিভিন্ন মিডিয়ার ক্রীড়া বিভাগের প্রধান, যুগ্ম ক্রীড়া সম্পাদক, দেশের শীর্ষ ক্রীড়া সাংবাদিকরা এই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন। ক্রীড়াঙ্গনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুচিন্তিত মতামত এসময় সাংবাদিকদের কাছ থেকে উঠে এসেছে। যার আলোকে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ^াস দিয়েছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।
শুরুতেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নানা আর্থিক অনিয়মের বিষয়টি উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অধিভুক্ত হয়েও এই বোর্ডের উপর এনএসসির তেমন কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অভিভাবক সংস্থা হয়ে ক্রিকেট বোর্ডের অডিটের বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফেডারেশন ও সকল ক্রীড়া সংস্থার অভিভাবক। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নিজের সেই স্বকীয়তা হারিয়েছে। অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কারেই যেন ক্রীড়া পরিষদের পূর্ণ মনোযোগ। অবকাঠামো খাতে টেন্ডার প্রক্রিয়া ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এসব প্রক্রিয়ায় সরকারি দলের প্রভাব ছাড়াও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারী যুক্ত থাকার অভিযোগ বেশ পুরনো। ফেডারেশনের সংস্কারের পাশাপাশি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অনিয়ম তদন্তের বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আয়ের অন্যতম উৎস স্টেডিয়ামে দোকান। সেই দোকান থেকে ইজারাদার অনেক অর্থ পেলেও খোদ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এই আয় থেকে বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ভাড়া দেয়া দোকানের প্রকৃত মালিকের নাম ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রকাশের দাবি উঠেছে আলোচনা সভায়।
বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থার আর্থিক অনিয়মের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে এসেছে। সারা বছর গুটিকয়েক প্রতিযোগিতা আয়োজনে কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকায় এই সংস্থা থেকে কখনই কোন জাতীয় দলের খেলোয়াড় উঠে আসেনি। তাহলে এই ধরনের সংস্থা চলমান থাকার আদৌ কোন প্রয়োজন আছে কিনা সেই বিষয়টিও উত্থাপিত হয়েছে।
সাংবাদিকদের মতামত, পর্যবেক্ষণ ও অভিযোগ শুনে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া বলেন,‘আপনাদের গঠনমূলক মন্তব্য আমরা পর্যালোচনা করব। ক্রীড়াঙ্গনে আপনারা দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছেন। আপনাদের পর্যবেক্ষণকে আমরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করি। এজন্য সার্চ কমিটিতে দুই জন এবং জেলা পর্যায়েও ক্রীড়া সাংবাদিক প্রতিনিধি রেখেছি। সার্চ কমিটি ফেডারেশনগুলো পর্যালোচনা করে আমাদের প্রতিবেদন দেবে। আমরা এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘দুর্নীতি মূলত হয় সিন্ডিকেট গঠন করার কারণে। প্রতিটি জায়গায় যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয় তারা নিজেদের মধ্যে সিন্ডিকেট করে ফেলে। সেভাবেই নিজেদের মধ্যে ভাগ ভাটোয়ারা করে সবকিছু পরিচালনা করে। সিন্ডিকেট যাতে না হতে পারে সেরকম একটা ব্যবস্থা করা হবে। আমরা তো প্রতিটি জায়গায় কিংবা উপজেলায় ধরে ধরে ঠিক করতে পারবো না। সেই জায়গায় সিন্ডিকেট যেন না হতে পারে সেই ব্যবস্থা হিসেবে স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠক, ছাত্র প্রতিনিধি রেখেছি। উপজেলাগুলোতে যেসব ছাত্র প্রতিনিধি ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে কাজ করে, তাদের রাখা হচ্ছে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button