অর্থ ও বাণিজ্যশীর্ষ নিউজ

রফতানি আয় ৩ কোটি ৬৭ লাখ মার্কিন ডলার মৎস্য সপ্তাহে সুখবর যশোরের মৎস্য খাতে


মালিক উজ জামান, যশোর : ‘নিরাপদ মাছে ভরবে দেশ-বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্যে রোববার সারা দেশে শুরু হয়েছে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২। মাছের সূতিকাগার যশোর এ তাই এখন রমরমা আনন্দ মাছ চাষী ও ব্যবসায়ীদের। মৎস্য সপ্তাহের শুরুতেই সুখবর দিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। যশোর জেলায় ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে চাহিদার তুলনায় ১ লাখ ৫৯ হাজার ২৬৯ দশমিক ১৪ মেট্রিকটন বেশি উৎপাদন হয়েছে। মাছের চাহিদা ছিল ৬৫৫৮৯ মেট্রিকটন। মাছ উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ২৪ হাজার ৮৫৮ দশমিক ১ মেট্রিকটন। উদ্বৃত্ত মাছের মধ্য থেকে গত অর্থবছরে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৯,৩০১ দশমিক ৮৯ টন মাছ রফতানি হয়, যা থেকে ৩ কোটি ৬৭ লাখ ৭০ হাজার ১৫৫ মার্কিন ডলার এসেছে, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩৪৬ কোটি টাকা।
৮৭৬৪ মেট্রিকটন মাছ আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৫৮ লাখ ৭৮ হাজার ৮৫২ মার্কিন ডলার। যশোর জেলায় কার্পজাতীয় মাছের রেণু উৎপাদন হয় ৬৯ দশমিক ২৮ টন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ৫০ দশমিক ৩৮ টন রেণু জেলার বাইরে যায়। এছাড়া রুই-জাতীয় মাছ ১ লাখ ৫৩ হাজার ২০৪ দশমিক ৬৯ টন, পাঙাশ ১৫,৫৩৯ দশমিক ১০ টন, তেলাপিয়া ২৫,৬৪০ দশমিক ৪৭ টন, কৈ ১৩০২ দশমিক ৪৮ টন, শিং ও মাগুর ১০৪১ দশমিক শূন্য ৯ টন, গুলশা ৮১৭ দশমিক ৫৬ টন, পাবদা ৯৮২ দশমিক শূন্য ৭ টন, গলদা চিংড়ি ৮ হাজার ৭৯ দশমিক ৮১ টন, বাগদা চিংড়ি ৩৫৪ টন এবং অন্যান্য মাছ ১৭,৮৯৭ দশমিক ১৪ টন উৎপাদন হয়েছে। মনোসেক্স তেলাপিয়ার পোনা ৮০২ দশমিক ২০ লাখ ও কার্পজাতীয় পোনা ১৪,১১৮ দশমিক ৭৭ লাখ টন উৎপাদন হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। যশোর থেকে যেসব মাছ রফতানি হচ্ছে তার মধ্যে পাবদা, পারশে, তেলাপিয়া, পাঙাশ, কৈ, টেংরা ও গজার অন্যতম। রফতানি করা এসব মাছের মধ্যে ৭০ শতাংশ পাবদা মাছ।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে জেলা মৎস্য ভবনে সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে এ তথ্য জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ। তিনি জানান, জেলায় মোট চিংড়ি উৎপাদন ৮,৪৩৪ দশমিক ৩০ মেট্রিকটন। মৎস্যচাষি রয়েছে ৮৮,৭৬২ জন, বিক্রেতা ৩,৪৫৩ জন, পোনা বিক্রেতা ১,১৫৫ জন, মৎস্যজীবীর সংখ্যা ৪১,৭৭৩ জন, নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১৭,১৮১ জন, মৎস্য খাদ্য কারখানা ৫টি, খাদ্য আমদানি কারক ২ জন ও মৎস্য খাদ্য বিক্রেতা ২০৮ জন। এবারের মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে ২৪ জুলাই রোববার সকালে র‌্যালি,এরপর আলোচনা সভা, স্থানীয় পর্যায়ের সফল মৎস্যচাষী, ব্যক্তি, উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে পুরস্কার বিতরণ। বেলা ১২ টায় পোনা মাছ অবমুক্তকরণ, সন্ধ্যা ছয়টায় মৎস্য সেক্টরে বর্তমান সরকারের অগ্রগতি ও সাফল্য বিষয়ে নির্মিত প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন, ২৫ জুলাই প্রান্তিক পর্যায়ে মৎস্য চাষী ও মৎস্যজীবীদের সাথে মতবিনিময়, ২৬ জুলাই অবৈধ জালের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, ২৭ জুলাই উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এলাকার মৎস্যচাষিদের মাছ চাষ বিষক বিশেষ পরামর্শ সেবা প্রদান, পুকুরের মাটি ও পানি পরীক্ষা। ২৮ জুলাই সুফল ভোগীদের প্রশিক্ষণ,বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ। ২৯ জুলাই জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের মূল্যায়ন ও সমাপণী অনুষ্ঠান। সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা মৎস্য অফিসের সহকারী পরিচালক মাহাবুবুর রহমান, মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রের উধ্বর্তন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশরাফুল হক। উপস্থিত ছিলেন মৎস্য সাদু পানি উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অনিক তালুকদার, সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সাইদুর রহমান, জেলা মৎস্য জীবীলীগের আহবায়ক আবু তোহা প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button