আঞ্চলিকশীর্ষ নিউজ

‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ প্রতারনায় অভয়নগরে নারীর স্বর্ণালঙ্কার লুট


মালিক উজ জামান, যশোর : ভয়াবহ মাদক নেশা স্কোপোলামিন। অপরাধ জগতে যার নাম ডেভিলস ব্রেথ বা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’। সেই ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামক ভয়াবহ মাদক টার্গেটকৃত নারী বা পুরুষের নিঃশ্বাসে প্রয়োগের মাধ্যমে ‘মাইন্ড কন্ট্রোল’ করে তাদের সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে একটি চক্র।
২০ অক্টোবরের ঘটনা। সেদিন দুপুরে যশোরের অভয়নগরে এমনই একটি চক্রের খপ্পরে পড়ে আনুমানিক দেড় লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার খুইয়েছেন দুই নারী। এ ঘটনায় শুক্রবার (২১ অক্টোবর) রাতে অভয়নগর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী দুইজন হলেন, উপজেলার সরখোলা গ্রামের আব্দুল্লাহ আল মামুনের স্ত্রী রুকাইয়া রিশা ও খুলনার ফুলতলা উপজেলার দামোদর গ্রামের আব্দুল মান্নান মোড়লের স্ত্রী কাকলী খাতুন। সম্পর্কে কাকলী খাতুনের ননদ রুকাইয়া রিশা।
কাকলী খাতুন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার সময় ফুলতলা শ্বশুরবাড়ি থেকে অভয়নগরে বাবার বাড়ি যাবার উদ্দেশ্যে আমি ও আমার ননদ ফুলতলা বাজারে সিএনজি স্ট্যান্ড পৌঁছায়। এবং অভয়নগরের নওয়াপাড়াগামী একটি সিএনজিতে উঠি। এসময় বোরকা পরা এক নারীও সিএনজিতে উঠে আমাদের পাশে বসেন। এরপর ওই নারী আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরণের কথা বলতে শুরু করেন। নওয়াপাড়ার কাছাকাছি পৌঁছালে ওই নারী আমাদের মুখের সামনে একটি কাপড় নাড়িয়ে কথা বলা বন্ধ করেন। এরপর থেকে আমরা ওই নারীর কথায় চলতে শুরু করি। দুপুর ১২ টার দিকে নওয়াপাড়া নূরবাগে পৌঁছালে ওই নারী আমাদেরকে একটি ভ্যানে উঠতে বলেন। আমার মনে আছে ওই সময় ভ্যানচালককে সরখোলা গ্রামে আমার বাবার বাড়ির ঠিকানা বলেছিলাম। পরে নওয়াপাড়া রেল স্টেশন সংলগ্ন রেলগেট থেকে ওই নারীর এক সহযোগি ভ্যানে ওঠেন। বুইকারা স্কুলের কাছে ফাঁকা স্থানে পৌঁছালে তারা আমাদের গলায়, কানের ও হাত থাকা স্বর্ণগুলো খুলে দিতে বলেন। আমরা দুইজন তখন সেন্স হারিয়ে বোবা হয়ে স্বর্ণালঙ্কারগুলো খুলে ওই নারীর হাতে দিয়েছিলাম। এরপর তারা সরখোলার একটি রাস্তায় আমাদেরকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। খুলে দেওয়া স্বর্ণালঙ্কারের মূল্য আনুমানিক দেড় লাখ টাকা।’
কাকলী খাতুনের ভাই রুকাইয়া রিশার স্বামী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ‘দুপুর আনুমানিক ২ টার সময় খবর পেয়ে বোন ও স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে আসলে তারা ঘুমিয়ে পড়েন। ওইদিন রাতে তাদের ঘুম ভাঙলে সবকছিু জানতে পারি। এ ব্যাপারে শুক্রবারে আমি নিজে বাদি হয়ে অভয়নগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।’
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম শামীম হাসান জানান, ‘এধরণের মাদক সম্পর্কে কিছুই জানিনা। অভিযোগ খতিয়ে দেখে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button