প্রযুক্তিবিশেষ খবর

মেট্রোরেলে ফেলা যাবে না পিক-থুতু, বহন করা যাবে না পোষা প্রাণী

রাজধানীবাসীর বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সকাল ১১টায় উত্তরার দিয়াবাড়িতে দেশের প্রথম মেট্রোরেল পরিষেবা উদ্বোধন করেন প্রধামন্ত্রী।

ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। সংস্থাটি জানিয়েছে, শুরুতে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। পৌনে ১২ কিলোমিটারের এই পথ মেট্রোরেলে পাড়ি দিতে সময় লাগবে ১০ মিনিট ১০ সেকেন্ড।

ডিএমটিসিএল জানায়, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলার সময় ট্রেনগুলো মাঝপথে কোথাও থামবে না। ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটারের এই পথে ৯টি স্টেশন থাকলেও উত্তরা ও আগারগাঁওয়ের যাত্রী ছাড়া অন্যরা এ সুবিধা পাবেন না। পরে চলাচলের সময় বাড়ানো হবে এবং চাহিদা অনুযায়ী ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে।

অবকাঠামো থেকে শুরু করে যার সবকিছুই তৈরি করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে। একইভাবে মেট্রোরেলে যারা চড়বেন তাদেরও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এর নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। স্টেশনের মেইন প্লাটফর্ম, কনকোর্স লেভেল ও ট্রেন, সবখানেই যাত্রীদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। মেনে চলতে হবে নির্দেশিকা। অন্যথায় নিয়ম ভঙ্গের অপরাধে পড়তে হবে শাস্তির মুখে।

মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মেট্রোরেলে পোষা প্রাণী বহন করা যাবে না; বিপজ্জনক কোনো বস্তুও বহন করা যাবে না। ট্রেন বা স্টেশনের কোথাও ফেলা যাবে না পানের পিক বা থুতু। প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনে খাবার খাওয়া ও যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলা যাবে না। ফোনের লাউড স্পিকার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে এবং বৃহদাকার ও ভারী মালপত্র বহন করতে নিষেধ করা হয়েছে।

এছাড়া ট্রেন দেখার জন্য প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোরে (প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো যাত্রীর দুর্ঘটনা ঠেকাতে বিশেষ দরজা) ঝুঁকতে নিষেধ করা হয়েছে। ট্রেনের দরজায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতেও নিষেধ করা হয়েছে। ট্রেনের ভেতর একাধিক আসন দখলে রাখতে নিষেধ করা হয়েছে এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের চলাচলের জন্য নির্ধারিত হলুদ ট্যাকটাইল (বিশেষ ধরনের হলুদ টাইলস) পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে নিষেধ করা হয়েছে।

এর পাশাপাশি কিছু পরামর্শও দিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তাকর্মীদের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা, সহযাত্রীকে প্রয়োজনে সহায়তা প্রদান করা, মনোযোগ দিয়ে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা শোনা, সর্বক্ষেত্রে ভদ্রতা ও সৌজন্য বজায় রাখা এবং নিজ গন্তব্য সম্পর্কে তথ্য পেতে মেট্রো ম্যাপের সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ডিএমটিসিএল।

মেট্রোরেলের সম্পদ বিনষ্টকারী বা নির্দেশিকা অমান্যকারী যাত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হিসেবে ডিএমটিসিএল ম্যানেজার (সিভিল অ্যান্ড পি-ওয়ে) মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা মেট্রোরেলে চড়ে অভ্যস্ত নই। তাই প্রথমদিকে আমরা মানুষকে কাউন্সেলিং করব। এ জন্য আমাদের প্রতিটি স্টেশনের কনকোর্স লেভেলে ডিটেনশন রুম আছে।

তিনি আরও বলেন, প্রথমদিকে মানুষজন ভুল করবে। ভুলের অবশ্য মাত্রাও আছে। কেউ ইচ্ছাকৃত ক্ষতি করতে চাইলে তাকে আমরা আটক করে ডিটেশন রুমে রাখব। সেখানে তাদের আমরা কাউন্সেলিং করব। যদি দেখা যায়, কাউন্সেলিংয়ে সন্তোষজনক ফল আসে তাহলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। না হলে পুলিশে দিয়ে দেওয়া হবে। ডিটেনশ রুমের দায়িত্বে থাকবে মেট্রোরেলের নিজস্ব পুলিশ ডিপার্টমেন্ট। আমরা প্রথমেই কাউকে বড় শাস্তি দেবো না। স্টেশন এবং ট্রেন সার্বক্ষণিক সিসিটিভির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এছাড়া সার্ভিলেন্স টিম থাকবে। তারা দেখবে কে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল করছে, কে ভুলবশত করছে।

যদি কেউ ইচ্ছাকৃত বারবার ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করে তবে তাকে সরাসরি ডিটেনশন রুমে রেখে পুলিশে দিয়ে দেওয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button