অর্থ ও বাণিজ্যবিশেষ খবর

বিগত এক বছরে দেশে ব্যবসা পরিবেশের উন্নতি হয়নি: সিপিডি

বিগত এক বছরে দেশে ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি হয়নি বলে জানিয়েছে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

‘বাংলাদেশের ব্যবসায় পরিবেশ: উদ্যোক্তা জরিপ ২০২২’ নামের এক জরিপের ফলাফলে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি। এতে বলা হয়, ‘২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে দেশে ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি হয়নি।’

রবিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

তিনি বলেন, সারাবিশ্বের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এমনটি হয়েছে। খাদ্যপণ্য ও জ্বালানির বাজারের অস্থিরতা। ফলে মূল্যস্ফীতিতে সবাই হাবুডুবু খাচ্ছে। দেশে জ্বালানি তেলের দামও বেড়েছে। এতে চাপে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ব্যবসায়ী পরিবেশের অবনতি স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পথকে মসৃণ হতে দেবে না। বিষয়গুলো মাথায় রেখে এখনই নীতি-কৌশল ঢেলে সাজানো প্রয়োজন। আগামী নির্বাচনে এ বিষয়টি রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনি ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত।

জরিপের ফলাফল বলছে, ২০২১ সালের মতো ২০২২ সালেও দুর্নীতিকেই প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করছেন ব্যবসায়ীরা। জরিপে অংশ নেওয়া উদ্যোক্তার হার ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ।

দুর্নীতির খাতভিত্তিক তথ্য চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, আমদানি ও রফতানি প্রক্রিয়া সেবার ক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশ, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ পেতে ৪৯ শতাংশ, লাইসেন্স পেতে ৫৪ শতাংশ, কর প্রদানে ৪৮ শতাংশ দুর্নীতি হয়।

ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে দুর্নীতির বাইরে বড় বাধা হিসেবে অবকাঠামো দুর্বলতা এবং অর্থসংকটের কথা বলেছেন ব্যবসায়ীরা। এ ক্ষেত্রে অবকাঠামো দুর্বলতার কথা বলেছেন ৪৪ দশমিক ৬ শতাংশ। অর্থপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতার কথা বলেছেন ৪৩ দশমিক ১ শতাংশ। সম সংখ্যক উত্তরদাতা সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমলাদের অদক্ষতার কথা বলেছেন। আর ৩৮ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতা মূল্যস্ফীতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের অস্থিরতাকে ২০২২ সালে ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে বড় বাধা বলে মত দিয়েছেন।

এছাড়া সরকারের নীতির অস্থিতিশীলতা, কর ব্যবস্থার জটিলতা ও উচ্চহারের করকাঠামকে দায়ী করেছেন যথাক্রমে ৩৫, ২৬ ও ২৫ শতাংশ উত্তরদাতা। দেশ থেকে অর্থপাচার হচ্ছে বলে মনে করেন ৪৪ শতাংশ উত্তরদাতা। তারা মনে করেন পাচার বন্ধে সরকারের উদ্যোগ যথেষ্ট নয়।

দেশের প্রধান ব্যবসাকেন্দ্র ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জের ৭৪ জন শিল্প উদ্যোক্তা এবং শীর্ষ কর্মকর্তাদের মতামতের ভিত্তিতে জরিপের ফলাফল নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে অংশ নেওয়া উদ্যোক্তাদের মধ্যে বৃহৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র এই তিন ক্যাটাগরির প্রতিনিধি রয়েছেন।

গত বছরের এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে জরিপটি পরিচালনা করা হয়। ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) গবেষণায় সহায়তা দিয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button