বিশেষ খবর

৩০ মার্চ পদ্মায় পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে

আরেকটি স্বপ্ন জয়ের দ্বারপ্রান্তে পদ্মা সেতু। পাথরবিহীন রেললাইনে মাত্র একটি স্লিপার বসানো বাকি। ৭ মিটারের সেই স্লিপারটি সফলভাবে বসানো হলে শতভাগ সম্পন্ন হবে মূল সেতুতে পাথরবিহীন রেললাইন স্থাপনের কাজ।

চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জরুরিভিত্তিতে বিমানে করে প্রয়োজনীয় একমাত্র স্লিপারটি নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছে। শিগগিরই এটি এসে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীল প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম।

২৭ মার্চ, সোমবার সকালে তিনি বলেন, ছিদ্র ডিজাইন অনুযায়ী স্লিপারটি মিলছে না। রেললাইন নিখুঁতভাবে নির্মাণ একেবারে শেষ পর্যায়ে আছে। কিন্তু শেষ মুভমেন্ট জয়েন্টের বিশেষ এই স্লিপারটি যথাযথ না হওয়ায় দেরি হচ্ছে।

পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। দীর্ঘ এই রেল সেতুতে মোট ৮টি মুভমেন্ট জয়েন্ট রয়েছে। এরমধ্যে ৭টি যথাযথভাবে স্থাপন হয়েছে। বাকি জয়েন্ট স্থাপন করা হলেও রেললাইন ঢালাই করার জন্য ও শতভাগ কাজ সম্পন্ন করার জন্য এই স্লিপারের বিকল্প নেই।

প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, মূল সেতুতে ১১ হাজার ১৪০টি স্লিপার স্থাপন হয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের স্টিলের স্লিপারগুলো ছাড়া বাকিগুলো কংক্রিটের তৈরি। কংক্রিটের সেসব স্লিপার তৈরির জন্য চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফরিদপুরের ভাঙ্গা পুরনো রেল স্টেশনের পাশে ফ্যাক্টরি স্থাপন করেছে। শুধু সেতুর স্লিপারই নয়, পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের ১৭২ কিলোমিটার রেললাইন তৈরি জন্য সব স্লিপার তৈরি করেছে এখানে।

তবে বিশেষ তাপামাত্রায় মুভমেন্ট জয়েন্ট এবং স্টিলের স্লিপারগুলো চীন থেকে তৈরি করে আনা হয়।

২৬ মার্চ রবিবার বাকি অংশের কংক্রিটিং হয়ে গেলে ৭২ ঘণ্টা কিউরিংয়ের জন্য অপেক্ষার পর আগামী ৩০ মার্চ মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু অতিক্রম করে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে ভাঙা পর্যন্ত। এর মধ্যদিয়ে পদ্মা সেতুর আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে।

পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক-১ ব্রিগেডিয়ার সাঈদ আহমেদ বলেন, পদ্মা নদীতে সেতু নির্মাণ একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। আবার সেই সেতুতে রেল সংযোগ করা আরেকটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। যেকোনো জিনিস তৈরির সময় টেবিলে যা করা হয় সেটা বাস্তবে সেভাবে হয়ে ওঠে না। এ জন্য প্রথমদিকে কিছুটা সমস্যা ছিল। যা আমরা সংশোধন করেছি। এখানে সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করেছি। কংক্রিট আনার আগে, প্রেসিং করার সময় ও পরে- সবসময় সবগুলো বিষয় আমরা টেস্ট করছি। তারপর সেটা ব্যবহার করছি। পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপনের কাজের অগ্রগতি প্রায় ৯৯ শতাংশ। আর মাত্র একদিনের মধ্যেই শতভাগ কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হবে।

সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয়রা বলছেন, পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলে নতুন অধ্যায়ের সূচনা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। দেশের অর্থনীতিতে যুগান্তকারী এক অধ্যায়ের শুরু করবে নতুন এই রেল নেটওয়ার্ক। এই রেল নেটওয়ার্ক পায়রা বন্দরের সঙ্গেও যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button