চট্টগ্রামশীর্ষ নিউজ

কর্ণফুলীতে ইউনিয়ন যুবলীগে জায়গা পেতে ‘বিতর্কিতদের’ দৌঁড়ঝাপ

জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটিতে পদ পদবী পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ‘বিতর্কিতরা। সম্মেলনকে কাজে লাগাতে অনেক হাইব্রিড ও কিছু বিতর্কিত লোকজন যারা কিংবা মামলার আসামি ও মাদক-চোরাকারবারি ব্যবসায় জড়িতরাও তদবির চালাচ্ছেন। তাঁরা পদ বাগিয়ে নিতে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। দীর্ঘ ৯ বছর পর তৃণমূল ইউনিয়নের কমিটি হচ্ছে। এতে জায়গা পেতে তাঁরা জোরালো প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। কারণ কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের নেতাদের সাথে দীর্ঘদিন যাবত জড়িত থাকলেও তিন ইউনিয়নের প্রায় কয়েক শতাধিক নেতাকর্মীদের কোন পব-পদবি নেই। এদের মধ্যে ত্যাগী ছাত্রনেতা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে নানা অপকর্মে জড়িত বিতর্কিতরাও।

অতীতে তাঁরা শুধু নিজেদের নামের পাশে যোগ করে শান্ত ছিলেন সংগঠক, তৃণমূল কর্মী ও ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা নামে বিশেষণ। এসব বিশেষণ ছাড়া তাঁদের নামের পাশে কোন পদ পদবি নেই। তারপরও স্ব স্ব নেতার বলয়ে তাঁরা রাজনীতি করেছেন। অনেকে হতাশায় রাজনীতি থেকে সরে গেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুবলীগের কমিটিতে সভাপতি-সম্পাদক পদপ্রত্যাশী একাধিক নেতা বলেন, ‘অতীতে কোন ছাত্ররাজনীতি কিংবা বঙ্গঁবন্ধুর আদর্শের অনুসারি না হয়েও যদি চরপাথরঘাটা-জুলধা ইউনিয়ন কমিটিতে কেউ কেউ বড় পদ পদবী পেয়ে যান। তাহলে আমাদের স্থান কোথায় থাকবে ? নাকি আমরা সহযোগি সংগঠনের জুনিয়র নতুনদের নেতৃত্বে রাজনীতি করে যাবো বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন তাঁরা।

এসব সাবেক ছাত্রনেতারা আরও বলেছেন, দল সকলের কার্যক্রম বিবেচনা করে দলীয় সাংগঠনিক পদ পদবি দিলে দলের প্রতি আস্থা বাড়বে সাধারণ মানুষের। রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দিয়ে কমিটি দিলে আগামী জাতীয় নির্বাচনী বৈতরণী পার করা সহজ হবে। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও কর্ণফুলীতে ভূমিমন্ত্রীর হাতকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করতে ও দলকে সুসংগঠিতের জন্য ত্যাগী ও পরিশ্রমী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করে ইউনিয়ন কমিটি দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন সাবেক ছাত্রনেতারা।

তবে আদৌও কি কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগ শিগগরই ইউনিয়ন কমিটিতে এ রকম যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের পদ পদবি দিতে পারবেন? না প্রচার প্রচারণার ভিড়ে বাণিজ্য হবে পকেট কমিটির। যদিও বিতর্কিতদের ভিড়ে দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকা নেতাকর্মীরা যুবলীগের দায়িত্ব আসতে চেষ্টা-তদবির করছেন।

কেনোনা, গত একযুগ থেকে ইউনিয়ন যুবলীগের ক্ষীণ অবস্থানকে গতিশীল ও সক্রিয় করতে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় এবং ত্যাগী নেতৃত্বদের দরকার। যদিও কর্ণফুলী উপজেলায় যুবলীগ বলতেই সোলায়মান তালুকদারের অনুসারিদের বুঝানো হয়। প্রকৃতপক্ষে অন্যান্য নেতাদের অনুসারি তেমন মাঠে-ময়দানে সক্রিয় না। কারণ কর্ণফুলীতে যুবলীগকে শক্তিশালী করার পিছনে সোলায়মান-সেলিমের অনেক অবদান রয়েছে বলে তৃণমূল স্বীকার করেন। এমনকি জুলধা চরপাথরঘাটা যুবলীগের ইউনিয়ন কমিটিগুলোতে দুই নেতার অনুসারীরা দুটি বলয়ে বিভক্ত হয়ে পদ পদবি ভাগাভাগি করেছেন বলেও শোনা গিয়েছিল।

তিন ইউনিয়ন কমিটি কেমন হবে জানতে চাইলে কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম হক বলেন, ‘আসলে এ ব্যাপারে মন্ত্রী মহোদয় ও জেলা কমিটির সাথে পরামর্শ করে যারা ছাত্রলীগ করে রাজপথে ছিল তাঁদেরকেই মূল্যায়ন করা হবে। বিতর্কিত কেউ কমিটিতে স্থান পাবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনীতি করলে তো আবার বিতর্কিত থাকবে। এখানে একেক গ্রুপ একেক জনকে ঘায়েল করেন। আবার রাজনীতি যারা করে তাঁদের দোষও বেশি, কারণ কমিটি করতে গেলে আমাদের বিভিন্ন নেতাদের তদবির রাখতে হয়। তারপরও চেষ্টা করব যাতে বিতর্কিত কেউ কমিটিতে স্থান না পায়।’

এ ব্যাপারে কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি নাজিম উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘যারা ত্যাগী, ছাত্র রাজনীতি করে ওঠে এসেছে, ওখান থেকে যাচাই বাছাই করে কমিটির পদে আনা হবে। আমার সুস্পষ্ট কথা যারা মামলা-হামলার আসামি, ইয়াবা ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি তারা কোনো মতেই কমিটিতে স্থান পাবেন না।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button