বিশেষ খবররাজনীতি

বিএনপি অবৈধ দল : প্রধানমন্ত্রী

দেশের সংবিধান ও সেনা আইন লঙ্ঘন করে জিয়াউর রহমানের নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা এবং সেনাপ্রধান হিসেবে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অবৈধভাবে বিএনপি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল।

বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই হত্যকাণ্ডটা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশোধ হিসেবে নেয়া হয়েছিলো বলে মনে হয়। জাতির পিতা নিজের জীবনটা উৎসর্গ করেছিলেন এদেশের মানুষের জন্য। সেই ৫৩ সালে ভাষা আন্দোলনের প্রতিবাদ দিয়ে শুরু, এরপর ধাপে ধাপে মুক্তিযুদ্ধের ডাক। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে বিশ্বে যে সম্মান হয়েছিলো ১৫ আগস্টের মাধ্যমে তা ধূলিসাৎ হয়ে যায়।

বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়া জড়িত না থাকলে মোশতাক কখনো এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারতো না উল্লেখ করে তিনি বলেন, জিয়া যে জড়িত তা প্রমাণিত সত্য। কারণ ১৫ আগস্টের ঘটনার পরপরই সংবিধান লঙ্ঘন করে মোশতাক যেমন রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেয় এবং জিয়াউর রহমান তাকে সমর্থন দেয়। এবং জিয়াউর রহমানকে মোশতাক সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে ঘোষণা দেয়। মোশতাককে হটিয়ে জিয়াউর রহমান নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেয়। বেইমানদের স্থান বেশিদিন থাকে না। কাজেই সেই ক্ষমতায় এসেই ওই ইনডেমনিটিকে আইনে পরিণত করার জন্য এই বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে খেলা শুরু হয়। সংবিধান ও সেনা আইন লঙ্ঘন করে জিয়াউর রহমান একধানে সেনাপ্রদান আবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করে। আর হ্যাঁ না ভোট অর্থাৎ ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা জিয়াই শুরু করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার-সদস্যদের হত্যা করে। বিমান বাহিনীর শত শত অফিসারদের হত্যা করেছে। হত্যা করে লাশ কারো কাছে দেয়নি, গুম করে ফেলেছিল। এখনো তাদের পরিবার তার লাশ খুঁজে ফেরে কোথায় তাদের কবর। তবে পাপ বাপকেও ছাড়ে না। যেভাবে জিয়া বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে সেও কিন্তু খুন হয়। তার লাশের কিন্তু কোনো খবর নাই। সংসদ ভবনে যে কবর দেয়া হয়েছে সেখানে জিয়ার কোনো লাশ নেই। জেনারেল এরশাদ সেই কথা কিন্তু বলে গেছে। সে বলেছে, জিয়ার লাশ পাওয়া যায়নি। জিয়ার লাশ খালেদা, তারেক, কোকো বা তার পরিবার-পরিজন কেউ দেখে নাই। তাহলে লাশ গেল কোথায়।

তিনি বলেন, এরশাদ ধূর্ত লোক ছিলো বলে একটি বাক্স এনে লোক দেখানোর জন্য সংসদ ভবনে একটি অবৈধ স্থাপনায় কবর দিয়েছে। সেখানে বিএনপি নেতাকর্মী ফুল দেয়। কিন্তু কাকে ফুল দিচ্ছে সেটা কি তারা জানে? জানে না।

বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজকে আমার অবাক লাগে যখন বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনি। তাদের জন্মই হয়েছে হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে, যাদের সৃষ্টিই হয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাত থেকে, যাদের যাত্রা শুরু হয়েছে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়ার মধ্য দিয়ে কারচুপির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে; তাদের মুখে আর যাই হোক গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না। তাদের আবার কিছু প্রভু আছে, তারা আবার একই সাথে সুর মেলায় বাংলাদেশে এখন নাকি একেবারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতেই হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সাদেক খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়, মিজবাউর রহমান ভূঁইয়া রতন, সাজেদা বেগম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি প্রমুখ।

এছাড়া আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেন, গোলাম সারোয়ার কবির, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম মাজহার আনাম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহেরুন্নেসা মেরী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী মোরশেদ কামাল প্রমুখ। আলোচনা সভায় পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button