বিনোদনশীর্ষ নিউজসংগঠন সংবাদ

গোপালগঞ্জে জমেছে শারদীয় উৎসব

 

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ২২ অক্টোবর, ২০২৩ (বাসস): সপ্তমীর রাতে গোপালগঞ্জে জমেছে  উৎসব। মন্ডপে মন্ডপে ঢাকের বাদ্য, শঙ্খনাদ আর  ঢাক-ঢোল মাতিয়ে তুলেছে পূণ্যার্থীদের মন।
সপ্তমীতে শুরু হয়েছে মূল পূজা। সপ্তমী তিথির সন্ধ্যাতেই ভক্তদের ভিড়ে  ম-পগুলো জনারণ্যে পরিণত হয়। নানা বয়সী পূণ্যার্থী দুর্গা প্রতিমার সামনে এসে প্রণাম করেন। কেউ কেউ দেবীর কাছে প্রকাশ করন মনেবাঞ্ছা।
ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুক্রবার শুরু হয়েছে  সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। স্বামীর ঘর স্বর্গ ছেড়ে মর্ত্যে পিতৃগৃহে পদার্পণ করছেন দেবী দূর্গা। ৫ দিনের এ সফরে তার সাথে রয়েছেন ৪ সন্তান গনেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী ও সরস্বতী। আরও আছে  কলা বউ।
ষষ্ঠী সন্ধ্যায় প্রথমে দেবীর বোধন হয়, জাগিয়ে তোলা হয় দেবীকে। পরে অধিবাস এবং দেবী পূজার জন্য আমন্ত্রণ করা হয়। সপ্তমীতে মাতৃরূপী দুর্গার মুখ উন্মোচিত হয় মন্ডপে। লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতীকে নিয়ে মন্ডপে অধিষ্ঠিত হন দশভূজা দেবী।
আজ রোববার মহা অষ্টমী ।  সকাল ৯ টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে মহা অষ্টমী বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভক্তরা উপবাস রেখে অঞ্জলি দেন  এবং প্রসাদ গ্রহণ করেন । এছাড়া কোন কোন মন্ডপে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সন্ধ্যায় সন্ধিপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, ত্রেতাযুগে ভগবান রাম তার স্ত্রী সীতাকে উদ্ধার করতে দেবী দুর্গার অকালবোধন করেন। ব্রহ্মার নির্দেশ অনুযায়ী দুর্গার সাহায্যে রাবণ বধ করে সীতাকে উদ্ধার করেন তিনি। দেবীর সেই আগমণের সময়ই দুর্গোৎসব।
রাম শরৎকালে দেবীকে আহ্বান করেছিলেন বলে এ পূজা শারদীয় দুর্গা পূজা নামেও পরিচিত। আর মর্ত্যলোকে আসতে দেবীর সেই ঘুম ভাঙানোকে বলা হয় অকাল বোধন।
গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলা ও ৪টি পৌরসভায় ১ হাজার ৩০১টি মন্ডপে মহাসমারোহে  অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুর্গা পূজা।
শনিবার  গোপালগঞ্জ শহরের মন্ডপগুলোতে দেখা যায়, আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে মন্দির প্রাঙ্গণ। নির্মিত হয়েছে প্যান্ডেল। শত শত ভক্ত এসেছেন দেবী দর্শনে। তাদের কেউ ছবি তুলছেন মন্ডপে। কেউবা প্রণাম করছেন দেবী দুর্গাকে। আবার অনেকে নেচে গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করছেন। মন্ডপগুলোতে নিরাপত্তা  ছিল ।
গোপালগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র নাথ বাড়ৈ মণি বলেন, সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, মহালয়ার দিন ‘কন্যারূপে’ ধরায় আসেন দশভূজা দেবী দুর্গা; বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তাকে ১ বছরের জন্য বিদায় জানানো হয়। তার এই ‘আগমন ও প্রস্থানের’ মাঝে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি পর্যন্ত ৫ দিন চলে দুর্গোৎসব।
শহরের সাহাপাড়া মন্দিরের পুরোহিত দীপংকর চক্রবর্তী  বলেন, পঞ্জিকামতে, দেবী দুর্গা এবার মর্ত্যে এসেছেন ঘোটকে অর্থাৎ ঘোড়ায় চড়ে। যাবেনও ঘোড়ায় চড়ে। এর ফল ‘ছত্রভঙ্গ’।
পুরোহিত আরো বলেন, “ঘোটকে দেবীর আগমন এবং গমন অশুভের বার্তা দিচ্ছে, তবে ভক্তের আরাধনায় দেবীর মন তুষ্ট হলেই মিলবে শান্তি।”
অষ্টমী ও নবমী শেষে মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসবের।
গোপালগঞ্জ শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হৃদয় হরণ বিশ্বাস বলেন, সপ্তমীর রাতে শহরের ১০ মন্ডপে ঘুরেছি। সবগুলো মন্ডপই ভাল লেগেছে। এখানে যেমন উৎসবের আমেজ রয়েছে। তেমনি পূজার ভক্তিপূর্ণ আবহ সৃষ্টি হয়েছে। সব মিলিয়ে মন্ডপগুলোর পরিবেশ আমরা ভাল লেগেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button