শীর্ষ নিউজ

চান্দিনা মুক্ত দিবস আজ ১২ ডিসেম্বর

॥ কামাল আতাতুর্ক মিসেল ॥
কুমিল্লা (দক্ষিণ), ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : ১৯৭১ সালের রক্তঝরা এ দিনে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানী  হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করে এ উপজেলাকে। ময়নামতি সেনা নিবাসে মিত্র বাহিনীর সেলিং এর কারণে ১১ ডিসেম্বর ভোরে পাকিস্তানী  হানাদার বাহিনী ময়নামতি সেনানিবাস থেকে বরুড়া হয়ে চান্দিনার উপর দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিভিন্ন স্থানে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করতে থাকে। আর ওই ঘটনাটি চান্দিনার মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খবর এলে মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় চান্দিনার মুক্তিযোদ্ধারা মানসিক ভাবে দ্বিগুণ শক্তিশালী হয়ে পাকিস্তানী বাহিনীকে প্রতিহত করতে এগিয়ে যায়। দুপুরে উপজেলা সদরের হারং উদালিয়ার পাড় এলাকায় পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। ১১ ডিসেম্বর দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গোলাগুলির এক পর্যায়ে পাকিস্তানী বাহিনীর গোলাবারুদ শেষ হয়ে গেলে ১২ ডিসেম্বর ভোরে আত্মসমর্পণ করে প্রায় ১৭ শতাধিক পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। উল্লাসিত মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে ধরে নিয়ে আসে বর্তমান চান্দিনা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে।পিাকিস্তানী হানাদাররা পালিয়ে যাওয়ার সময় করতলা গ্রামের একটি কেওড়াতলায় আটকে যায়। তখন মুক্তিকামী জনতা তাদেরকে দেখে মুক্তিযোদ্ধাদের খবর দিলে মুক্তিযোদ্ধাসহ শতাধিক মুক্তিকামী জনতা তাদেরকে আটক করার সময় পাকিবাহনী চারদিকে গুলি ছুড়তে শুরু করে। এসময় ২ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ ৪ জন মুক্তিকামী জনতা নিহত হয়। পাকিস্তানী বাহিনীর গোলাবারুদ শেষ হয়ে গেলে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে নিহত হয় ৬ জন হানাদার বাহিনী।
রক্তঝরা এ দিনে বীরমুক্তিযোদ্ধারা চান্দিনাতে উত্তোলন করে স্বাধীন বাংলার লাল সবুজের পাতাকা। আজকের দিনটি একদিকে যেমন আনন্দের অপরদিকে স্বজনহারাদের জন্য বেদনার দিন। দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের সময় চান্দিনা ও  তার আশ-পাশের বিভিন্ন স্থানে খন্ডযুদ্ধ সংগঠিত হয়। এতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ১০ মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগে চান্দিনাবাসী আজও গর্বিত। জাতীয় ভাবে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালিত হলেও আজকের দিনটি চান্দিনা বাসীর জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। দিবসটি উপলক্ষে চান্দিনাতে মুক্ত দিবস উদযাপিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা হাজী আবদুল মালেক বাসসকে জানান, সকালে চান্দিনা উপজেলা পরিষদ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য বিজয় র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button