চট্টগ্রামবিশেষ খবর

চট্টগ্রামে তিন স্বতন্ত্রের জয়

 

নৌকা ও লাঙ্গলের বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে নেমে চট্টগ্রামে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুচ ছালাম, এম এ মোতালেব ও মুজিবুর রহমান।

রোববার রাতে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে স্থাপিত ফলাফল সংগ্রহ ও ঘোষণা কেন্দ্র থেকে তাদের জয়ী ঘোষণা করা হয়।

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগ নেতা আবদুচ ছালাম, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এম এ মোতালেব এবং চট্টগ্রাম-১৬ আসনে আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুর রহমান জয়ী হয়েছেন।

এরমধ্যে শেষ বেলায় চট্টগ্রাম-১৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। ভোট গণনার সময় তার ভোট বাতিল করা হয়।

বাঁশখালীর এ আসনে জেলা আওয়ামী নেতা মুজিবুর রহমান ঈগল প্রতীকে ৫৭ হাজার ৪৯৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আরেক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ কবির। তিনি ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৩২ হাজার ২২০ ভোট।

এবার ৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৭৮ ভোটারের মধ্যে ভোট দেন ১ লাখ ২৯ হাজার ২২৩ জন। এর মধ্যে বাতিল করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৯৬৮টি ভোট, যা মোস্তাফিজুরের বলা ধারণা করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম-৮ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ায় সেখানে নৌকার প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। পরে ছালাম স্বতন্ত্র হিসেবে ভোটে অংশ নেন।

ভোটের ফলে দেখা যায়, কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ছালাম ৭৮ হাজার ২৬৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী নগর আওয়ামী লীগের নেতা বিজয় কুমার চৌধুরী ফুলকপি প্রতীক নিয়ে ৪১ হাজার ৫০০ ভোট পেয়েছেনে।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী সোলায়মান আলম শেঠ তৃতীয় হয়েছেন, ভোট পেয়েছেন ৮২৪৫ ভোট (লাঙ্গল)।

চট্টগ্রাম-৮ আসনে মোট ভোটার ৫ লাখ ১৫ হাজার ৫৭৩ জন।

এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে জাসদের মঈন উদ্দিন খান বাদল ২ লাখ ৭২ হাজার ভোট পেয়ে বিজীয় হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আবু সুফিয়ান পান ৫৯ হাজার ভোট।

২০১৪ বিএনপিবিহীন নির্বাচনে জাসদের মইন উদ্দিন খান বাদল জয় পেয়েছিলেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।

২০০৮ সালে মইন উদ্দিন খান বাদল ১ লাখ ৫০ হাজার ৬৪৮ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এরশাদ উল্লাহ পান ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪৬৬ ভোট পান।

চট্টগ্রাম-১৫ নদভীকে হারিয়ে জয় পেলেন মোতালেব

ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেব এ আসনে ৮৫ হাজার ৬২৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন নদভী নৌকা প্রতীক নিয়ে ৩৯ হাজার ২৫২ ভোট পেয়েছেনে।

২০১৪ সাল থেকে এ আসনে জামায়াত ছেড়ে আসা নদভীকে প্রার্থী করছিল আওয়ামী লীগ। এবারও তাকে নৌকার প্রার্থী করা হয়। তবে স্বতন্ত্রের সুযোগ প্রার্থী হন উপজেলা চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে আসা মোতালেব।

চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া) আসনের এবার মোট ভোটার ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৪১১ জন। এবারে ভোট পড়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ১৫২ ভোট, বাতিল হয়েছে ৩২১১ টি ভোট, ভোটের হার ২৭ দশমিক ৫১ শতাংশ।

এ আসনে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ আলী হোসাইন (মোমবাতি) ৩৬২ ভোট, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মুহাম্মদ সোলাইমান কাসেমী (হাতছড়ি) ১৫০ ভোট, জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ ছালেম (লাঙল) ৩৮০ ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের (ছড়ি) ৮৬ ভোট পেয়েছেন।

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৮৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এলডিপির অলি আহমদ ছাতা প্রতীকে পান ২২ হাজার ২২৫ ভোট।

২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ১ হাজার ৮৬৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনএফর জয়নাল আবেদীন কাদেরী টেলিভিশন মার্কা নিয়ে ৪ হাজার ৪৪৮ ভোট পান।

২০০৮ সালে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী আ ন ম শামসুল ইসলাম দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ১ লাখ ২০ হাজার ৩৩৯ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এলডিপির অলি আহমদ ছাতা প্রতীক নিয়ে পেয়েছিলেন ৬৩ হাজার ৪১২ ভোট।

সীতাকুণ্ড উপজেলায় নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-৪ আসনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে আসা আল মামুন (নৌকা) পেয়েছেন ১ লাখ ৪২ হাজার ৭০৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির দিদারুল কবির (লাঙল) পেয়েছেন ৪ হাজার ৮৮০ ভোট।

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দিদারুল আলম নৌকা প্রতীক নিয়ে ২ লাখ ৬৬ হাজার ১১৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আসলাম চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীকে পান ৩০ হাজার ১৪ ভোট।

২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দিদারুল আলম নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৯১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম জাসদের আ ম ফ মফিজুর রহমান পান ৪ হাজার ৪২৬ ভোট। #বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমইউএসসিএম

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এবিএম আবুল কাসেম নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৯৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আসলাম চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীকে পান ১ লাখ ১২ হাজার ৯৩০ ভোট।

অন্যদিকে দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মিতা নৌকা প্রতীক নিয়ে ৫৪ হাজার ৭৫৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএমএ’র কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী পেয়েছেন ২৮ হাজার ৭০ ভোট।

দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের ১৫টি ইউনিয়ন ও সন্দ্বীপ পৌরসভা নিয়ে চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসন গঠিত।

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মাহফুজুর রহমান মিতা নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৬২ হাজার ৩৫৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির কামাল পাশা ধানের শীষ প্রতীকে পান ৩ হাজার ১২২ ভোট।

২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মাহফুজুর রহমান মিতা নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ১১ হাজার ৭৪৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির এম এ ছালাম লাঙল প্রতীকে পান ৩ হাজার ৪৬৬ ভোট।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মোস্তফা কামাল পাশা বিজয়ী হন। সেবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মো জামাল উদ্দিন চৌধুরী। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহফুজুর রহমান দ্বিতীয় হয়েছিলেন ভোট যুদ্ধে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button