বিশেষ খবরশীর্ষ নিউজ

শেখহাটির দিপু হত্যায় চিহ্নিত ৪ আসামি লাপাত্তা

যশোরের শহরতলী ছোট শেখহাটির রিকসা চালক রিপন হোসেন দিপু হত্যাকান্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত চিহ্নিত ৫ জনের ৪ জনই আটক এড়াতে আত্মগোপনে গেছে। এদিকে পুলিশি অভিযানে আটক মামলার দুই নাম্বার আসামি আব্দুল আলিমের রিমান্ড চেয়ে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে।

আত্মগোপনে যাওয়া পলাতকদের খোঁজে দফায় দফায় অভিযান চলছে। এদিকে নিহত দিপুর বাবা রকিফুল ইসলামের অভিযোগ, মামলাটি ভিন্নখাতে নিতে স্থানীয় একটি মহল তার ছেলে ও অভিযুক্তদের মাদক ব্যবসায়ী গফুর সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে প্রচার করে ন্যায় বিচার বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে। তিনি এজাহার নামীয় সব আসামির দ্রুত আটক দাবি করেছেন।

১৯ জানুয়ারি পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে একই এলাকার সংঘবদ্ধ চক্রের সাথে গোলযোগ হয় দিপুর। এরপর ২০ জানুয়ারি ভোর রাতে ফোন করে ডেকে নিয়ে শেখহাটি ডিপের মাঠে ফেলে ৫/৬ জন হামলা চালায় দিপুর উপর। তাকে এলোপাতাড়ি ইট ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে থেতলে হত্যা করে। এ ঘটনায় দিপুর বাবা ২০ জানুয়ারি রাতে এলাকার ৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন। যার নাম্বার ৪৪। আসামি করা হয় ছোট শেখহাটির ইসলাম আলীর ছেলে রাব্বি (৩০), সিরাজ হোসেনের ছেলে আব্দুল আলিম ওরফে রানা হোসেন (২৮), আবুর ছেলে আসাদুল (২৯), তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে হৃদয় (৩০) ও ফজের আলীর ছেলে তাজু (৩৩)। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়।

নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম মামলায় উল্লেখ করেছেন, তার ছোট ছেলে দিপু হোসেন (২৪) রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। আবার মাঝে মধ্যে বিভিন্ন লোকজনের গরুর মাংশ কাটার কাজে সহায়তাও করে। ১ মাস আগে গ্রামের বাবু ওরফে টাক বাবু একটি গরুর মাংস বানাতে দিপু, আসামি রাব্বি এবং স্থানীয় সাঈদের সহায়তা করে। এতে ৩ হাজার টাকা পায় টাক বাবু। কিন্তু দিপুর ভাগের এক হাজার টাকা না দিয়ে আসামি রাব্বি ঘুরাতে থাকে। দিপু পাওনা টাকা চাইলে আসামি রাব্বি দিপুকে মারপিট খুন জখম করার হুমকি দিয়ে আসছিল। এরপর রাব্বির নেতৃত্বে অন্য আসামিরা ১৯ জানুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে ১০ টায় দিপুকে খোঁজাখুঁজি করে। এরপর পূর্বপরিকল্পিতভাবে ২০ জানুয়ারি আসামিরা মাংস কাটা টাকা চাওয়ার ঘটনায় শত্রুতার জের ধরে দিপুকে ধরে নিয়ে যায় চোখ মুখ গামছা দিয়ে বেধে। এরপর শেখহাটি মুন্সী বাঁশতলার বন্ধ ডিপকলের পাশে আব্দুর রব মুন্সীর মেহগনী বাগানে নিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে। হত্যাকান্ডের পর পুলিশি অভিযানে ২১ জানুয়ারি আসামি আব্দুল আলিম রানাকে আটক করা হয়। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে।

নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, তার ছেলে রিকসা চালক হলেও স্থানীয় একটি চক্র তাকে মাদক কারবারী ও মাদকসেবী বলে প্রচার করছে, যা সত্য নয়। এছাড়া তার আত্মীয় শেখহাটি আব্দুল গফুরকে মাদক সিন্ডিকেট প্রধান বলে এলাকার সূত্রে যে তথ্য গ্রামের কাগজে প্রকাশিত হয়েছে সে অংশটির ব্যাপারেও ভিন্নমত পোষন করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, আব্দুল গফুর এক সময় মাদক কারবার করলেও বর্তমানে সে ভাল পথে রয়েছে। মাছের ঘেরের ব্যবসা ও মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। তার ছেলে দিপু হত্যাকান্ডে জড়িতরা গফুর সিন্ডিকেট সদস্য বলে যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে তা সত্য নয়। তার ছেলে নিহত দিপু কখনও মাদক ব্যবসা করতো না। এলাকার একটি মহল মামলাটি অন্যখাতে নিতে আব্দুল গফুর ও তার নিহত ছেলেকে নিয়ে মিথ্যাচার করেছে।

এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই একরামুল হুদা গ্রামের কাগজকে জানিয়েছেন, মামলার পলাতক ও আত্মগোপনে যাওয়া ৪ আসামিকে খোঁজা হচ্ছে, কৌশলী অভিযান চলছে। দু’একদিনের মধ্যেই সবাই আটক হবে। এছাড়া এর আগে আটক আলিমকে চালান দেয়া হয়েছে। তার ৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button