বিশেষ খবরবিশ্ব

সৌদি আরবে যাওয়ার আগে কাজ সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার আহ্বান রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী

প্রতিনিধিঃসৌদি আরবে আসার আগে কাজ ও কোম্পানি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। আজ রোববার রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বিদেশে আসার আগে সকলকে অবশ্যই চাকুরির ধরণ, বেতন ভাতা, সৌদি কোম্পানি, নিয়োগকর্তা ও অন্যান্য সুবিধা সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে আসা উচিত। তাহলে বিদেশে এসে প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। এছাড়া সৌদি আরবে আসার আগে দক্ষতা অর্জন করে আসলে এ দেশে টিকে থাকা সহজ।   আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু চত্বরে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এসময় দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা ও সেবা প্রার্থী কয়েকশত অভিবাসী যোগ দেন।অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রম বাজার। বর্তমানে সৌদি আরবে প্রায় ২৮ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মী কর্মরত রয়েছেন। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৬ লাখ অভিবাসী কর্মী বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব এসেছে। চলতি বছরে নভেম্বর মাস পর্যন্ত সৌদি আরব হতে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানো হয়েছে ৩.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা মোট রেমিট্যান্সের ১৯ শতাংশ।

এ সময় রাষ্ট্রদূত উপস্থিত প্রবাসীদের কাছে জানতে চান তারা বৈধ পথে দেশে টাকা পাঠান কিনা। জবাবে প্রবাসীরা বলেন, তারা বৈধ পথেই দেশে টাকা পাঠান। রাষ্ট্রদূত এসময় সব প্রবাসীর বৈধ পথে দেশে টাকা পাঠানোর অনুরোধ করেন ও সরকার ঘোষিত সুবিধাদি নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠালে তা আপনার পরিবারই পাবে কিন্তু দেশে মার্কিন ডলারের রিজার্ভ বৃদ্ধি পাবে ও দেশের অর্থনীতির উপকার হবে।

রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যূলেট সীমিত লোকবল দিয়ে সৌদিতে বসবাসরত প্রায় ২৮ লাখ অভিবাসীকে আন্তরিকভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছর এ পর্যন্ত দূতাবাসের প্রচেষ্টায় বিভিন্ন কারণে মারা যাওয়া প্রবাসীদের ৯৬৯টি মরদেহ দেশে পাঠানো হয়েছে। একই সময়ে মৃত প্রবাসী কর্মীদের বকেয়া বেতন-ভাতা, সার্ভিস বেনিফিট ও মৃত্যুজণিত ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ১ কোটি সৌদি রিয়াল সমপরিমাণ প্রায় ২৮ কোটি টাকা বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে।

রাষ্ট্রদূত জানান, চলতি বছর দূতাবাসের সেইফ হাউজে ৫৭৯ জন আশ্রয়প্রার্থী নারী গৃহকর্মীকে নিরাপদ আশ্রয়, খাবার ও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। আইনগত সেবার মাধ্যমে শ্রম আদালতে মামলা করে তাদের বকেয়া পাওনা বাবদ মোট প্রায় ২ লাখ সৌদি রিয়াল সমপরিমাণ প্রায় ৫৫ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪২৮ জন নারী গৃহকর্মীকে সেইফ হাউজ হতে এবং সেইফ হাউজের বাইরে থেকে ৭৩৬জন নারী গৃহকর্মীকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া একই সময়ে ৯ হাজার ১০৭ জন বাংলাদেশি কর্মীকে প্রবাসী কল্যাণ কার্ড দেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দূতাবাসের শ্রম কাউন্সেলর মো. রেজায়ে রাব্বী। আলোচনা শেষে অভিবাসীদের জন্য ও দেশ, জাতির সার্বিক মঙ্গল কামনা করে দোয়া করা হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button