৩০ মে বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন নির্বাচন
মালিক উজ জামান, যশোর : দেশের বৃহৎ স্থল বন্দর বেনাপোল এর প্রাচীনতম ব্যাবসায়িক সংগঠন সি এন্ড এফ এজেন্ট এসোসিয়েশন এর ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন ঘিরে জমজমাট নগরী। দুই প্যানেলে নবীন প্রবীণ সমন্বয়ে লড়ছেন ৩৮ জন সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী প্রার্থী। প্রার্থীরা সকলেই নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বৈধ ঘোষিত হয়েছেন।
শামসুর রহমান-মধু-লতা সমমনা পরিষদ আনারস মার্কার বিপরীতে ছাতা মার্কা নিয়ে লড়ছে সজল-ভারত-ফজলু ঐক্য পরিষদ। আগামী ৩০ মে ভোট অনুষ্ঠিত হওয়া কথা। ইতিমধ্যে নির্বাচন কে কেন্দ্র করে ভোটারদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে।ভোটের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায়ও। উভয় প্যানেলের চলছে পক্ষে বিপক্ষে প্রচারণা। এবারের নির্বাচনে বেনাপোল সহ দেশের ৭২৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে জানা যায়। ভোটার জানায় ‘প্রত্যেক প্রার্থী ভোটের আগে নানা ধরনের প্রতিজ্ঞা করে তবে ভোটের পরে করো খোঁজ পাওয়া যায় না।’ বন্দর নগরী বেনাপোলের সবচেয়ে বৃহৎ ব্যবসায়িক সংগঠন সি এন্ড এফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশান নির্বাচন কে ঘীরে নির্বাচনী মাঠ এখন জম জমাট। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রার্থীরা বৈধ্য প্রার্থী হিসাবে ঘোষিত হয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছে। দুটি প্যানেলে নবীন-প্রবীনের সমন্বয়ে ৩৮ জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে অবতীর্ন হয়েছেন।
দীর্ঘ বছর ধরে সংগঠনটির পরিচালনা পরিষদে থাকা প্রার্থীদের বিপরীতে এক ঝাঁক তরুণ প্রার্থী প্রতিদন্দ্বীতা করলেও সাধারন ভোটারদের অভিমত কথার ফুলঝুরি ছড়িয়ে বরাবরের মত এবারও নির্বাচনী বৈতরনী পার করবে নির্বাচিতরা। শামসুর রহমান- মধু-লতা সমমনা পরিষদের (আনারস মার্কা) প্যানেল হচ্ছে, সভাপতি প্রার্থী আলহাজ্ব শামছুর রহমান, সিনিয়র সহ সভাপতি আলহাজ্ব খায়রুজ্জামান মধু, সাধারন সম্পাদক এমদাদুর হক লতা। এছাড়া দুই সহ সভাপতি পদে কামাল উদ্দীন শিমুল ও আলহাজ্ব মহসিন মিলন, দুটি যুগ্ম সাধারন সম্পাদক পদে আলহাজ্ব জামাল হোসেন ও আলহাজ্ব নাসির উদ্দীন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে শাহাবুদ্দীন, অর্থ সম্পাদক পদে এনামুল হক মুকুল, সহ অর্থ সম্পাদক পদে মোঃ শাহাবুদ্দীন, কাষ্টমস বিষয়ক সম্পাদক পদে আব্দুল লতিফ, কাষ্টমস বিষয়ক যুগ্ম সম্পাদক পদে আলহাজ্ব আলমগীর সিদ্দীক, বন্দর বিষয়ক সম্পাদক পদে মেহের উল্লাহ, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে আসাদুজ্জামান, দপ্তর সম্পাদক পদে মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম, চেকপোষ্ট ও আন্তজার্তিক সম্পাদক পদে সুলতান মাহমুদ বিপুল, প্রচার প্রকাশনা ও প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক পদে সাজ্জাদুল ইসলাম সৌরভ প্রার্থী। এছাড়া দুটি নির্বাহী সদস্য পদে এই প্যানেলের দুই প্রার্থী আলহাজ্ব আমিনুল হক আনু ও সাহিদা রহমান সেতু। বীপরীত প্যানেলটি হচ্ছে সজন-ভারত-ফজলু ঐক্য পরিষদ (ছাতা মার্কা)। এরাও শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। প্রার্থীরা হচ্ছেন সভাপতি পদে আলহাজ্ব মফিজুর রহমান সজন, সিনিয়র সহ সভাপতি মাসুদুর রহমান লাল্টু, দুই সহ সভাপতি আলী কদর (সাগর) ও হাফিজুর রহমান (টিটু), সাধারন সম্পাদক ফজলুর রহমান, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আবু তাহের ভারত ও আসাদুজ্জামান খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম (বাবু), অর্থ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান (বাপ্পী), সহ অর্থ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, কাষ্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মোত্তালিব, কাষ্টমস বিষয়ক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সামাদ, বন্দর বিষয়ক সম্পাদক শরিফুল আলম (নয়ন), ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ইস্তিয়াক মোহাম্মদ শিল্পী, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সালাম, চেকপোষ্ট ও আন্তজার্তিক বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম (রয়েল), প্রচার প্রকাশনা ও প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক হায়দার আলী প্রার্থী। এছাড়া দুটি নির্বাহী সদস্য পদে প্রার্থী হলেন, তৌহিদুর রহমান ও আলিমুর রাজী (রাজিব)। আগামী ৩০ মে সংগঠনটির নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা। ইতি মধ্যে আসন্ন নির্বাচন ঘীরে দুই প্যানেলের প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। ব্যানার,লিফলেট বিতরন ও বিলবোড টাঙিয়ে তাদের প্রচার কাজ চালাচ্ছেন। এ কাজে প্রতিদন্দ্বী প্রার্থীরা সামাজিক মাধ্যমে কুরুচিপূর্ন ব্যাক্তিগত আক্রমনের স্বীকার হচ্ছেন। ফেসবুকে ভূয়া আইডি বা নিজিস্ব আইডি দিয়ে প্রার্থীদের দোষ ত্রুটি তুলে ধরে তাদের বয়কটের প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
বেনাপোল সি এন্ড এফ এজেন্ট নির্বাচনকে ঘীরে উৎসুক সাধারন জনগন। কেননা এই ব্যবসায়ীরা সরকারি রাজস্ব আয়ে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে। বাংলাদের বৃহৎ স্থল বন্দর বেনাপোলে অবস্থিত। তাই জনসাধারনের আগ্রহের এত ব্যাপকতা। দীর্ঘ দিন সংগঠনটির নির্বাচন না হওয়ায় এবার আসন্ন ভোট গ্রহণ নিয়ে সংগঠনটির সদস্য,সংশ্লিষ্ট জনগন মুখিয়ে রয়েছে।
বেনাপোলের স্থানীয় একাধিক সূত্র জানাই, ৩০ মে এর নির্বাচনে একাধিক শুল্কফাঁকি সহ নানা অনিয়মের দায়ে অভিযুক্ত ব্যাক্তিরা এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য ব্যবসায়ী (ভোটার) জানান, নির্বাচন আসলে ভোটারদের কদর বাড়ে। এখন ভোর সকালে দরজা খুললে নকসী কাঁথার প্যাকেট মিলছে। ২৭ তারিখের পর টাকা ভর্তি খাম মিলবে আশা করা যায়। ভোটের পর পূর্বের ন্যায় সাধারন ভোটাররা আবারো অবহেলায় পড়ে যাবে। ভোটের পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষের হয়রানী এড়াতে নবগঠিত নেতৃবৃন্দের কাছ হতে ব্যবসায়িক সংক্রান্ত কোন সুবিধা মিলবে না। কেননা তারা টাকা খরচ করে নেতা হয় নিজেদের ফাইল ছাড়াতে।
এবারের নির্বাচনে বেনাপোল সহ দেশ জুড়ে মোট ভোটার ৭২৪ জন। বেনাপোলে নির্বাচনী আমেজে এখনো পর্যন্ত শান্তি মুখর পরিবেশে নির্বাচনী প্রচার কাজ চলছে। সুষ্ঠ পরিবেশে ভোট গ্রহণ হবে বলে নির্বাচন কমিশন থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।