নতুন সাজে যশোর রেল জংশন
মালিক উজ জামান, যশোর : যশোর রেল জংশন বা রেলস্টেশনটি আধুনিকায়নের লক্ষ্যে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে চার নম্বর লাইন সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেচে কর্তৃপক্ষ। এর আগে তিনদিনের মধ্যে যশোর রেলস্টেশনের আশপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
৪ নম্বর লাইন সম্প্রসারণ হলে ভারত থেকে আসা ৪২ বগির ট্রেনগুলো স্টেশনে রেখে পণ্য খালাস করা যাবে। এ জন্য সংস্কার করা হচ্ছে ক্রসিং গেট। এসব কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হাতে নেয়া হয়েছে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ। ইতিমধ্যে রেলগেট এলাকায় রেললাইন সংস্কার করা হয়েছে।
চার নম্বর লাইন সম্প্রসারণের সুবিধার্থে আশপাশের অবৈধ স্থাপনা তিনদিনের মধ্যে উচ্ছেদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অন্যথায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তা উচ্ছেদ করা হবে বলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে। যশোর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণ ও উঁচুকরণ, নতুন সেড নির্মাণসহ নানা কর্মযজ্ঞ আগেই শুরু হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে যশোর রেলস্টেশনকে আধুনিক করার আশ্বাস দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেলস্টশনে দেখা যায়, পুরোদমে আধুনিকায়নের কাজ চলছে। একপাশে চলছে শেডের কাজ, অন্যপাশে প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ কাজ হচ্ছে। এছাড়া মাইকিং করে সকল অবৈধ স্থাপনা সরানোর কথা বলা হয়েছে এক সপ্তাহ আগে। এসময়ে অনেকের দীর্ঘদিনের বসত ঘর ভেঙে নিয়ে যেতে দেখা যায়। কেউ কেউ কাঁদতে কাঁদতে এলাকা ছেড়ে গেছেন। আবার কেউ কেউ এখনো অন্যত্র সরে যেতে মালামাল গোছাতে ব্যস্ত।
রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে চার নম্বর লাইনের ৭৫০ মিটার রাস্তা সম্প্রসারণ করা হবে। অনেক আগের কাঠের স্লিপার সরিয়ে নতুন করে কংক্রিটের স্লিপার বসানো হবে। রেললাইনের আশপাশে অন্তুত ৪০-৫০ টি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এর আগেও বেশ কয়েকবার উচ্ছেদের জন্য নোটিশ করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ, গত বুধবার মাইকিং করা হয়। মাইকিংয়ে পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়।
এ বিষয়ে সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী ওয়ালি উল হক জানান, যশোর স্টেশনে ভারত থেকে ৪২ বগির যে মালগাড়ি আসতো সেগুলো আনলোড করা যেতো না। সেক্ষেত্রে অর্ধেক যশোর রেলস্টেশনে বাকিটা সিঙ্গিয়া কিংবা রূপদিয়া স্টেশনে রাখতে হতো। এতে করে জটিলতা বাড়তো। যশোরের চার নম্বর লাইনটি সম্প্রসারণ করা হলে এ সমস্যার নিরসণ হবে। চার নম্বর লাইন সম্প্রসারিত হলে যাত্রীবাহী ট্রেনের জন্যও উপকারে আসবে। তিনি আরও জানান, অবৈধ স্থাপনা শুক্রবারের মধ্যেই সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে এখানে কাজ শুরু হবে বলে।
উল্লেখ্য, রেলস্টেশনে আধুনিকতার ছোঁয়া দিতে ইতিমধ্যে রেলের বগির সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্ল্যাটফর্ম উঁচু করার কাজ চলছে। বাড়ানো হয়েছে দৈর্ঘ্যও। দুই প্ল্যাটফর্মের ওপরে দেয়া হচ্ছে যাত্রী ছাউনি। করা হচ্ছে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থাও। স্টেশনের অভ্যন্তরে বহিরাগতদের প্রবেশে আসছে কড়াকড়ি। চালু করা হচ্ছে এক্সেস কন্ট্রোল সিস্টেম। যাতে বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণের সুযোগ কেউ আর না পায়। এসব কাজ শেষ হবে আগামী জুন মাসে।
দেখা যায়, রেলস্টেশনের পূর্ব পাশে একটি ওভারব্রিজ রয়েছে। তবে তা থাকলেও তার অবস্থা বেহাল। মুজিববর্ষ উপলক্ষে যশোর রেলস্টেশনের উন্নয়ন কাজ শুরু হওয়ায় যাত্রীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তারা একটি ওভারব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।