হুয়াওয়ে এশিয়া-প্যাসিফিক ডিজিটাল ইনোভেশন কংগ্রেসে ডিজিটাল ইকোনমি ও ইনোভেশনের ওপর গুরুত্বারোপ
[ঢাকা, ২২ মে, ২০২২] হুয়াওয়ে ও আসিয়ান ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে হুয়াওয়ে এশিয়া-প্যাসিফিক ডিজিটাল ইনোভেশন কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডিজিটাল ইনোভেশন ও ডিজিটাল ইকোনমির সম্ভাবনা উন্মোচনে এই কংগ্রেসটিতে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দশটিরও বেশি দেশের এক হাজার পাঁচশ’রও বেশি সরকারি কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ, গবেষক, পার্টনার ও বিশ্লেষকরা এ কংগ্রেসে অংশগ্রহণ করেন।
এখানে বিশেষজ্ঞ ও নেতাবৃন্দ চলমান তথ্য প্রযুক্তি খাতের অগ্রগতি, এই ইন্ডাস্ট্রিতে ডিজিটাল রূপান্তর ত্বরাণ্বিত করা, সবুজ ও কম-কার্বণ নিঃসরণসহ বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের ওপর আলোকপাত করেন।
কংগ্রেস চলাকালীন বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় দিন পৃথক পৃথক দুটি মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান কেন হু, আসিয়ান ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ডঃ ইয়াং মি ইং এবং হুয়াওয়ের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট সায়মন লিন।
বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার উল্লেখ করেন, “২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ কৌশল প্রস্তাবিত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের যোগাযোগ খাত দ্রুত বিকাশ করেছে। গত ২০২১ সালের শেষের দিকে দেশে মোবাইল নেটওয়ার্ক কভারেজ ৯৮ দশমিক পাঁচ শতাংশে পৌঁছেছে এবং মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন আঠারো কোটিতে পরিণত হয়েছে যা ২০১৮ সালে মাত্র চার কোটি ছিল”। মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, “এর ফলে বাংলাদেশের মানুষের জীবনে আমূল পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু এর কোনোটিই সব ইন্ডাস্ট্রি ও ইকোসিস্টেম সহযোগীদের সহায়তা ছাড়া সম্ভব হতো না।“
হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান কেন হু বলেন, “বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এবং তারা বর্তমানে ডিজিটাল ইনোভেশনের ক্ষেত্রেও সমানভাবে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।”
আসিয়ান ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ডঃ ইয়াং মি ইং বলেন, “কেবলমাত্র একটি দক্ষ দলের মাধ্যমেই একটি সামগ্রিক ও টেকশই এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল তৈরি করা সম্ভব। হুয়াওয়ে এশিয়া-প্যাসিফিক ডিজিটাল ইনোভেশন কংগ্রেস ২০২২ আসিয়ান ফাউন্ডেশন ও হুয়াওয়ের একত্রে কাজ করার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে, যা একইসঙ্গে একটি প্রতিভা বিকাশ-কেন্দ্রিক শিক্ষার ইকোসিস্টেম তৈরিতে সাহায্য করবে। এই উদ্যোগটি এই অঞ্চলে ডিজিটাল দক্ষতার ঘাটতি দূর করতে সাহায্য করবে।”
অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট সায়মন লিন ডিজিটাল খাতের বিপুল সম্ভাবনার সুযোগ নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন, “হুয়াওয়ে এশিয়া-প্যাসিফিকের ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে এবং একটি উন্নত ‘গ্রিন ডিজিটাল লাইফ’গড়তে এর গ্রাহকদের এবং সহযোগীদের সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে হুয়াওয়ে প্রায় ১০ হাজার এন্টারপ্রাইজ ও ক্লাউড পার্টনারদের সাথে কাজ করছে এবং স্পার্ক স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করেছে। হুয়াওয়ে এর সহযোগীদের সাথে একসাথে এক লাখ ৭০ হাজার স্থানীয় মানুষকে ডিজিটাল দক্ষতা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং পাঁচ বছরের মধ্যে আরও পাঁচ লক্ষ মানুষকে ডিজিটাল প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
আসিয়ান ইকোনমিক কমিউনিটির ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল সতবিন্দর সিং আসিয়ান ডিজিটাল মাস্টারপ্ল্যান ২০২৫ কে সফল করার রূপরেখা দিয়েছেন। পাশাপাশি চলমান মহামারী কীভাবে ডিজিটাল রূপান্তরের গতিকে ত্বরান্বিত করছে সে সম্পর্কেও তিনি তাঁর মতামত রাখেন। “কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে আসিয়ানে আরও ৬০ মিলিয়ন নতুন ডিজিটাল গ্রাহক যুক্ত হয়েছে, যার মাধ্যমে আসিয়ান এখন ৩য় বৃহত্তম ইন্টারনেট বেইজ হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে। বর্তমানে আসিয়ানে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে এবং আশা করা যাচ্ছে যে ২০২৫ সালের মধ্যে আসিয়ানের ডিজিটাল আয় ৩৬৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যাবে।” তিনি উল্লেখ করেন, “আসিয়ানে ডিজিটাল রূপান্তরের পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জন করে ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য বেসরকারি খাতসহ একাধিক স্টেইকহোল্ডারদের শক্তিশালী সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজন।”
অনুষ্ঠান চলাকালীন একটি প্যানেল আলোচনা ও চারটি ইন্ডাস্ট্রি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এসময়, হুয়াওয়ে সিম্প্লিফায়েড ক্যাম্পাস নেটওয়ার্কস ও এফটিটিও/এফটিটিএম সিনারিওসহ একাধিক ক্যাম্পাস সিনারিও’র সল্যুশন প্রকাশ করেছে এবং গসডিবি (একটি নতুন ক্লাউড স্টোরেজ ডেটাবেস) ও ডেভক্লাউড (আরো দক্ষ সফটওয়্যারের বিকাশে একটি ওয়ান-স্টপ ডেভওপস শপ) -এর মতো নতুন পণ্য ও সল্যুশন উন্মোচন করেছে।