টি-টোয়েন্টি সিরিজও আফগানিস্তানের
দলের বিপর্যয়ে দারুণ এক ফিফটি করলেন নাজিবউল্লাহ জাদরান। সেই সঙ্গে যোগ হলো মোহাম্মদ নবির ক্যামিও ইনিংস। তাতে যে উচ্চতায় পৌঁছাল আফগানিস্তানের স্কোর, রান তাড়ায় কিছুটা আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত তা ছুঁতে পারল না জিম্বাবুয়ে। হারারেতে রবিবার (১২ জুন) সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানের জয় ২১ রানে। এর ফলে, এক ম্যাচ বাকি থাকতেই তিন টি-টোয়েন্টির সিরিজটি জিতে নিল তারা। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করেছিল সফরকারীরা।
এদিন, নাজিবউল্লাহর ব্যাট থেকে এদিন আসে ৫৭ রান। ৪৬ বলের ইনিংসে এক ছক্কার সঙ্গে চার ৬টি। নবি খেলেন ৪ ছক্কা ও এক চারে ২২ বলে ৪৩ রানের ইনিংস। তাতে ৫ উইকেটে ১৭০ রান গড়ে আফগানিস্তান। ইনোসেন্ট কাইয়ার ৫৭ বলে ৫৪ ও সিকান্দার রাজার ২১ বলে ৪১ রানের ইনিংসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে রান তাড়ার রেকর্ড গড়ার আশা জাগায় জিম্বাবুয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত থেমে যায় তারা ১৪৯ রানে।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা আফগানিস্তানকে ভালো শুরুর আভাস দেন হজরতউল্লাহ জাজাই। প্রথম ওভারেই একটি করে ছক্কা-চার হাঁকান বিধ্বংসী এই ওপেনার। কিন্তু এরপর পথ হারিয়ে ফেলে দল। দ্বিতীয় ওভারে কিপার রেজিস চাকাভার দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরে যান রহমানউল্লাহ গুরবাজ (১)। টেন্ডাই চাতারাকে টানা দুই বলে চার-ছক্কা মেরে বোল্ড হয়ে যান জাজাই (১৩ বলে ২৮)। পরে এক ওভারেই জোড়া ধাক্কা খায় আফগানরা। উসমান গনিকে কট বিহাইন্ড করে ফেরান লুক জঙ্গুয়ে। ৯ বরে ১২ করে অসুস্থ হয়ে মাঠ ছেড়ে যান দারবিশ রাসুলি।
পাওয়ার প্লেতেই ৪ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে পড়া দলের হাল ধরতে পারেননি করিম জানাতও। পরে দলকে টানেন নাজিবউল্লাহ ও নবি। নাজিবউল্লাহ দারুণ ব্যাটিংয়ে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ৩৯ বলে। নবিও রান বাড়াতে থাকেন দ্রুত। পরপর দুই ওভারে এই দুইজনকে ফেরানোর সুযোগ পায় জিম্বাবুয়ে। কিন্তু ১৯ রানে থাকা নবির ক্যাচ ধরতে পারেননি ওয়েসলি মাধেভেরে। এক বল পর নাজিবউল্লাহর ক্যাচ মিস হয় মিড উইকেটে। ৫৪ রানে জীবন পেয়ে অবশ্য পরের ওভারেই ফিরে যান নাজিবউল্লাহ। রান আউটে কাটা পড়েন তিনি এক ছক্কা ও ৬ চারে ৫৭ করে। নবি অপরাজিত থাকেন ৪ ছক্কা ও এক চারে ২২ বলে ৪৩ রানে।
রান তাড়ায় তৃতীয় ওভারেই মাধেভেরেকে হারায় জিম্বাবুয়ে। শুরু ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন টাডিওয়ানাশে মারুমানি ও ইনোসেন্ট কাইয়া। তবে রানের গতিটা প্রত্যামিত রাখতে পারেননি তারা। ৫২ রানের জুটি আসে ৪৬ বলে। এই জুটি ভাঙেন নবি। দুজনের মধ্যে বেশি আগ্রাসী মারুমানিকে (২২ বরে ৩০) ফিরিয়ে দেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। এরপর জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনকে (২) টিকতে দেননি করিম।
রাজা যখন উইকেটে গেলেন, ৫৮ বলে তখন ১০৫ রান চাই জিম্বাবুয়ের। দ্রুত রান তুলে তিনি জাগিয়ে তোলেন দলের মিইয়ে থাকা আশা। তখনও পর্যন্ত ধীরগতিতে এগেতে থাকা কাইয়াও হাত খোলেন। তাতে প্রাণ ফেরে ম্যাচে। রশিদ খানের ওভারে মারেন একটি করে ছক্কা। আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে দুটি ছক্কায় ওড়ান রাজা। তবে দুইজনের রোমাঞ্চকর জুটি শেষ হয় রশিদের বলেই। ৪৪ বলে ৭০ রানের জুটি ভাঙে রশিদের গুগলিতে রাজা বোল্ড হলে। এক বল পর আফগান লেগ স্পিনার ফিরিয়ে দেন বিপজ্জনক রায়ান বার্লকেও। সেখানেই শেষ হয়ে যায় জিম্বাবুয়ের আশা। ৫২ বলে প্রথম ফিফটি করা কাইয়া রান আউট হন ম্যাচ শেষের এক বল আগে। ৫৪ রান করতে ৫৭ বল খেলে ফেলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তানের জয়টা হয় অনায়াসই। সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি মঙ্গলবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৭০/৫ (হজরতউল্লাহ ২৮, রহমানউল্লাহ ১, উসমান ২, রাসুলি ১২ আহত অবসর, নাজিবউল্লাহ ৫৭, করিম ১২, নবি ৪৩*, রশিদ ২*; এন্ডলভু ৩-০-২৬-০, চাতারা ৪-০-৩৩-২, টিরিপানো ৩-০-৩৪-০, জঙ্গুয়ে ৩-০-২৬-১, রাজা ৩-০-২৩-০, বার্ল ৩-০-১৫-১, মাধেভেরে ১-০-৯-০)
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৪৯/৭ (কাইয়া ৫৪, মাধেভেরে ৮, মারুমানি ৩০, আরভিন ২, রাজা ৪১, বার্ল ০, চাকাভা ৮, জঙ্গুয়ে ১*, টিরিপানো ১*; ফারুকি ৪-০-১৯-১, মাসুদ ৪-০-২৯-১, আজমতউল্লাহ ৪-০-৩৫-০, রশিদ ৪-০-৩২-২, নবি ২-০-১৮-১, করিম ২-০-১৪-১)
ফল: আফগানিস্তান ২১ রানে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে আফগানরা
ম্যান অব দা ম্যাচ: ফজল হক ফারুকি