বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়েছেন সিলেটবাসী
বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়েছেন সিলেটবাসী। এমন অবস্থায় নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন নগরের বাসিন্দারা। যাদের গ্রামের বাড়ি অন্য জেলায়, তারা সেখানে চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আশ্রয় খুঁজছেন আত্মীয়স্বজন আর পরিচিতজনদের বাড়িতে। বহুতল ভবনের নিচতলার বাসিন্দারা উঠে যাচ্ছেন দোতলা, তিনতলায়। আর যারা কোথাও যাওয়ার জায়গা পাচ্ছেন না, তারা ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। কিন্তু আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দারা ভুগছেন খাদ্যসংকটে। নিজেদের জমানো সঞ্চয় আর মানুষের সহায়তাই এখন তাদের ভরসা।
স্থানীয়রা জানান, টানা বৃষ্টি ও জমে থাকা পানির কারণে ঘর থেকে বের হওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যাতায়াত ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ায় ত্রাণ কার্যক্রমও খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। অনেকের ঘরে চাল-সবজি থাকলেও সেগুলো রান্না করে খাওয়ার মতো ব্যবস্থা নেই। বেশিরভাগ ঘরবাড়িতে পানির কারণে আগুন জ্বালানের ন্যূনতম সুযোগও নেই।
সিলেট উপশহরের বাসিন্দা নিতেশ সরকার বলেন, আগের কিছু চাল ছিল, আর সামান্য কিছু বাজার করতে পেরেছি। দোকানপাট সব বন্ধ। পানিতে রাস্তা ডুবে যাওয়ায় চলাচলেও সমস্যা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ছোট যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। রিকশা ও বড় যানবাহন পানি ডিঙিয়েই চলছে। নগরীর সুবিদবাজার রোডসহ একাধিক মূল সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। চারদিকে থৈ থৈ পানি। রাস্তা, দোকানপাট, বাসাবাড়ি, ঘরের মধ্যে পানি। কোথাও কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমর পর্যন্ত।
সিলেট সিটি করপোরেশনের বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (আশ্রয়কেন্দ্রের অতিরিক্ত দায়িত্ব) রুহুল আলম বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে কতজন রয়েছে, সেটি বলা যাচ্ছে না। এখন সব কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সরকারিভাবে ৩০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে, কিন্তু বৃষ্টির মধ্যে সেগুলোও আনা হয়নি। খাবার সরবরাহ এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে হয়নি। কিন্তু যে যেভাবে পারছেন, সহযোগিতা করছেন। এর বাইরে জনপ্রতিনিধিরাও এগিয়ে আসছেন।