দায়িত্বশীল ডিজিটাল অনুশীলনের প্রচারের উপর জাতীয় সেমিনারের প্রেস বিজ্ঞপ্তি
২১ জুন, ২০২২ তারিখে ওয়েস্টিন ঢাকায় National Seminar on Promoting Responsible Digital Practices অনুষ্ঠিত হয়। এ সেমিনারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জনাব আমিনুল ইসলাম খান; হিজ এক্সেলেন্সি চার্লস হোয়াইটলি, রাষ্ট্রদূত ও ডেলিগেশনের প্রধান, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি; মো. শহিদুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকা; এবং ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব, আইসিটি বিভাগ; সেমিনারে তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করে অনুষ্ঠানটি সজ্জিত করেন। সেমিনারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সাংবাদিক, গবেষক, আইনজীবী, সুশীল সমাজ সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, কর্পোরেট সংস্থা ইত্যাদিসহ বিভিন্ন সেক্টরের ১২০+ উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। এই চমৎকার সমাবেশটি ছিল দেশের সেরা কিছু মস্তিষ্কের মিলনস্থল।
ডিনেট “Foster Responsible Digital Citizenship to Promote Freedom of Expression in Bangladesh” প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে, এই প্রকল্পে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ফ্রেডরিক নওম্যান ফাউন্ডেশন ফর ফ্রিডম (এফএনএফ বাংলাদেশ) সহ-অর্থায়ন করছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হল বাংলাদেশে ভালো ডিজিটাল নাগরিকত্ব প্রচার করা যাতে সমাজে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করা যায়। প্রকল্পটি তরুণদের মাঝে ডিজিটাল দুনিয়ায় ইতিবাচক আচরণের সংস্কৃতিকে প্রচার করে এবং অনলাইনে স্বাধীনভাবে এবং নিরাপদে নিজেদের প্রকাশ করতে উৎসাহিত করার মাধ্যমে তরুণদের দায়িত্বশীল নাগরিক হতে সাহায্য করছে। এই প্রকল্পের অধীনে, ডিনেট ৫টি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে সংযুক্ত করে ঢাকা ও রাজশাহীতে ৫,০০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে। তিন বছর ব্যাপী প্রকল্পটি অনলাইন লার্নিং পোর্টাল (www.digitalcitizenbd.com), সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে ৫০,০০০-এরও বেশি ডিজিটাল নাগরিককে সচেতন করেছে।
এই আশ্চর্যজনক প্রকল্পের অংশ হিসাবে ডিনেট ২১ জুন, ২০২২ (মঙ্গলবার) সকাল ৯টা থেকে ১.৩০টা পর্যন্ত ওয়েস্টিন ঢাকায় ‘National Seminar on Promoting Responsible Digital Practices’-এর আয়োজন করে। সেমিনারে তরুণদের জন্য একটি নিরাপদ ডিজিটাল পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য প্রকল্পের অধীনে তৈরি করা বিভিন্ন গবেষণা তথ্য, জ্ঞান এবং শিক্ষা উপকরণ প্রদর্শন করা হয়। সেমিনারে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চর্চার পাশাপাশি অনলাইন জগতে তরুণরা যেসব প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয় সে বিষয়েও প্রাণবন্ত আলোচনা হয়। ডিনেট থেকে নিয়াজ ইসলাম আরিফ, ইলমা হক, নায়মা আক্তার জাহান প্রমুখ; এবং এফএনএফ বাংলাদেশ থেকে উলফগ্যাং হেইঞ্জ, ড. নাজমুল হোসেন, সালওয়া জাহান, ফ্যাবিয়ান ইসমাত এবং অন্যান্যরা সেমিনারে অংশ নেন।
জনাব আমিনুল ইসলাম খান; প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন যে,
ডিজিটাল নাগরিকত্ব এবং অনলাইনে স্বাধীন মতপ্রকাশের মতো অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়ের উপর ভিত্তি করে এই জাতীয় সেমিনার আয়োজনের জন্য আমি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রেডরিক নওম্যান ফাউন্ডেশন ফর ফ্রিডম এবং ডিনেটের প্রশংসা করি। আমি বিশ্বাস করি যে এফআরডিসি প্রকল্প যেসকল উদ্যোগগুলো গ্রহণ করেছে যা আজ এখানে উপস্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো বাংলাদেশের যুবকদের জন্য অত্যন্ত সহায়ক এবং কেবল তা শুধু জাতীয়ভাবে নয়, বিস্তৃত বিশ্ব মঞ্চেও এগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। (ভাবানুবাদ)
সেমিনারে মো. শহিদুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকা বলেন,
আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য তখনই সম্ভব হবে যদি আমাদের দেশের ডিজিটাল ডিভাইস এবং ইন্টারনেট সুবিধা ব্যবহারকারীরা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সর্বোত্তম ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হন। এবং আজ যেমন আমরা জানতে পেরেছি যে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে ডিজিটাল জগতের জন্য প্রস্তুত করার সর্বোত্তম উপায় হল তাদের এই বিষয়ে যথাযথভাবে শিক্ষিত করা। (ভাবানুবাদ)
এম শাহাদাত হোসেন; নির্বাহী পরিচালক, ডিনেট মতামত দিয়েছেন যে:
বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার সাথে থাকে সমান দায়িত্ব, তাই অন্যায্য, বিদ্বেষপূর্ণ এবং ভুল তথ্য শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে…….. দিন শেষে আমরা চাই আমাদের তরুণরা তাদের বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগ করে বিবেকবান নাগরিক হোক; যা সমাজের উন্নয়নে সহায়ক হবে। (ভাবানুবাদ)
এফআরডিসির প্রকল্প ব্যবস্থাপক আসিফ আহমেদ তন্ময়; যুগ্ম পরিচালক, ডিনেট তার সমাপনী মন্তব্যে বলেন:
আজকের সেমিনারের মাধ্যমে, আমি আশা করি ডিজিটাল স্পেসে দায়িত্বশীল ও আইনানুগভাবে বিচরণ করার গুরুত্ব সম্পর্কে সকলকে সচেতন করার মাধ্যমে আমরা সমাজে একটি ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা ইতিমধ্যে প্রকল্পের সাথে যুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই প্রকল্পের ফলে অনেক ইতিবাচক প্রভাব প্রত্যক্ষ করেছি যার কারণে আমি বিশ্বাস করি যে এখানে উপস্থিত প্রত্যেকে সারাদেশ থেকে আরও শিক্ষার্থীদের জন্য এই উদ্যোগগুলোকে প্রসারিত করতে তাদের সমস্ত সমর্থন এবং সহযোগিতার সাথে এগিয়ে আসবে। (ভাবানুবাদ)
এই জাতীয় সেমিনারের লক্ষ্য হল তরুণদের বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত যুবক ও কিশোর-কিশোরীদের সমর্থনে সুরক্ষা ব্যবস্থা, নীতি এবং আইন শক্তিশালী করার জন্য এডভোকেসি করা। সেমিনারে আলোচিত বিষয়গুলোতে ডিনেট সরকারি ও বেসরকারি খাতের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাবে। ডিজিটাল দুনিয়ায় গঠনমূলক আলোচনার সময় এবং তাদের মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করার সময় তরুণদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার অভাব মোকাবেলায় অবদান রাখার অঙ্গীকার নিয়ে সেমিনারটি সমাপ্ত হয়; একই সময়ে, যুবক এবং কিশোর-কিশোরীদের জন্য অনলাইনে একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরি করার দিকে কাজ করতে একাতত্মা ঘোষণা করেন সবাই যেখানে তারা ক্ষতিকারক ডিজিটাল নিয়ম এবং অসহিষ্ণু অনুশীলনকে চ্যালেঞ্জ করার দক্ষতাসহ সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার মাধ্যম হওয়ার সুযোগ পাবে।