কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান কর্মসূচিতে অনড় ঢাবির সেই শিক্ষার্থী
দীর্ঘ ১০ দিন পরও রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান কর্মসূচিতে অনড় রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।
বাংলাদেশ রেলওয়ের বর্তমান টিকিট ব্যবস্থা, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও যাত্রী হয়রানি বন্ধসহ ছয় দফা দাবি নিয়ে গত ৭ জুলাই থেকে এই অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
রবিবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে মহিউদ্দিন রনি বলেন, “গত ৭ জুলাই থেকে আমি অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। ছয় দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব। যত বাধা-ই আসুক, কর্মসূচি থেকে পিছপা হব না।”
এ সময় তিনি আরও বলেন, “আমি বিভিন্ন দফতরে দাবি সংক্রান্ত কাগজপত্র দাখিল করব। সেই কাগজগুলো এখন প্রস্তুত করছি। সেজন্য কিছু সময়ের জন্য স্টেশন চত্বর ত্যাগ করে হলে গিয়েছিলাম, যেন সেই কাগজগুলো ঠিকমতো দাখিল করতে পারি। আর সেই অবস্থান কর্মসূচিও চলছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। এর আগে গত এপ্রিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের আধুনিকায়নের দাবিতে অনশন করেন তিনি। গত মাসে রেলের টিকিট কিনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ার পর ৭ জুলাই থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে অনশন শুরু করেন রনি। ১০ জুলাই ঈদের দিনও তিনি স্টেশনে এই কর্মসূচি পালন করেন।
গত ১৩ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে ঢাকা-রাজশাহী রুটের ট্রেনের আসন বুক করার চেষ্টা করেন মহিউদ্দিন। কিন্ত মুঠোফোনে ভেরিফিকেশন কোড (যাচাইকরণ কোড) দিয়ে তার পিন কোড (গোপন কোড) ছাড়াই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়। মহিউদ্দিন ট্রেনের কোনও আসন পাননি, এমনকি কেন টাকা নেওয়া হল, সে বিষয়ে কোনও ডকুমেন্টও (রসিদ) তাকে দেওয়া হয়নি। সেদিন কমলাপুর রেলস্টেশনে সার্ভার কক্ষে অভিযোগ জানালে সেখান থেকে তাকে ‘সিস্টেম ফল’ করার কথা বলা হয় এবং ১৫ দিনের মধ্যে টাকা না পেলে আবার যেতে বলা হয়। কিন্তু ওই মুহূর্তে ওই কক্ষে থাকা কম্পিউটার অপারেটর ৬৮০ টাকার আসন ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করেন বলে অভিযোগ মহিউদ্দিনের।
যে ছয় দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন মহিউদ্দিন, সেগুলো হল- টিকিট কেনার ক্ষেত্রে যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করা ও হয়রানির ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া, যথোপযুক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ, অনলাইনে কোটায় টিকিট ব্লক করা বা বুক করা বন্ধ করা ও অনলাইন-অফলাইনে টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা, যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া, ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক-তত্ত্বাবধায়কসহ অন্য দায়িত্বশীলদের কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক নজরদারি ও শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেলসেবার মান বাড়ানো এবং ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।