নালার দু’পাশেই ৩ মাসে শেষ হল কাজ
কাজী ইব্রাহিম সেলিম : নালার দু’পাশেই একসাথে দেয়াল দিয়ে কাজে হাত দেয়ার ৩ মাসের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন করে দিয়ে জনগণকে বুঝিয়ে দিলেন যে, আমরা চাইলেই এ কাজটি ৩ মাসেও শেষ করতে পারি। অধিকাংশ মানুষের ঘর-বাড়ির পাশে নালার কাজ তিন বছরেও শেষ না করে কিছু সংখ্যাক সবল ও বিত্তশালীর পাশে ৩ মাসেই কাজ শেষ করা এটিতে স্বজনপ্রীতি কাজ করছে তা প্রতীয়মান হয়? মুরাদপুর-২ নম্বর গেইটের মতো চট্টগ্রাম শহরের প্রধান প্রধান জায়গাগুলোতে নালার কাজ একটু-আধটো করে বাকি কাজ ফেলে রাখা হয়েছে, শেষ করার বালাই নেই? এমনও কিছু জায়গা রয়েছে সেখানে দু’এক দিন কাজ করলে কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে কিন্তু সে একটুখানি কাজ শেষ না করেই মাসের পর মাস ধরে মানুষজনকে আটকা রাখা হয়েছে। তা দ্রুত শেষ করা হলে মানুষের যারযার ঘর-বাড়ির সামনে নালার উপর ব্রিজ-স্ল্যাব দেয়া হতো, এতে কোরবানীর পশু নিয়ে মানুষের ঘর-বাড়িতে যাওয়া আসার দুর্ভোগ পোহাতে হতো না, মানুষের সমালোচনা করার সুযোগটাও আর সৃষ্টি হতো না। শুরুতেই নালার কাজ করার জন্য মানুষের ঘরবাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠানের সামনে নালার উপরের ব্রিজ গুঁড়িয়ে দিয়ে ব্যবসায়ী ছালে আহমদের মতো মানুষগুলো নালায় পড়ে মরার মতো মরণফাঁদ সৃষ্টি করে জনব্যস্ততম জায়গাগুলোর যেখানে কাজ শুরু করা হয়েছিল সেসব জায়গায় প্রায় ৩ বছর হল, এখনো পর্যন্ত কাজ শেষ করা হয়নি। জবাবদিহিতা নেই বিধায় এসব গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নালার এক পাশে দেয়াল দিতে গিয়ে কাজ একটু করে বাকী কাজ ফেলে রেখে চলে যান, এর কয়েকদিন পর আবার আসেন কাজ আরেকটু করেন আবারো কাজ শেষ না করে ফেলে রেখে চলে যান, এভাবে দফায় দফায় জনসাধারণেকে সীমাহীন দুুর্ভোগে নিক্ষিপ্ত করা হয়েছে। বর্ষা এলে দেখাযায় নালার কাজ শেষ না হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেও পানি আটকা পড়ে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। স্ল্যাববিহীন নালায় পড়ে ছালে আহমদ ও শিশু কামালের মতো কত্থো মানুুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘঠেছে। মানুষের প্রাণহানির মতো বড়বড় দুর্ঘটনা ঘটার পরও দ্রুত কাজ শেষ করে মানুষের মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়নি। কাজ করার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করার পর কাজ দ্রুত শেষ করে সংযোগ দেয়া করণীয় হলেও কাজ ধীরগতিতে করে পুরো সাপ্তাহের জন্য মানুষজনকে বিদ্যুৎহীন জীবনযাপন করতে হয়েছে। মানুষের ফ্রিজে থাকা মাছ-মাংস, তরকারি নষ্ট হয়েছে। এভাবে বছর দেড়েকের মতো জনসাধারণ চরম ভোগান্তির শিকার হওয়ার পর নালার এক পাশে দেয়াল দেয়ার কাজ শেষ হলেও এরপর শুরু হয় নালার অপর পাশে দেয়াল দেয়ার কাজ। এতে করে আবারো শুরু হয় দুুর্ভোগ। এভাবে প্রায় ৩ বছরেও শেষ হয়নি কাজ, মিলেনি দুর্ভোগ থেকে মুক্তি! উর্ধ্বতন মহলের নজরদারীতে বিষয়টা এলে হয়তো সামনের দিনগুলোতে জনসাধারণকে এরকম দুর্ভোগে আর নিক্ষিপ্ত করা হবেনা। কিছু বিত্তশালীদের পাশে নালার দু’পাশেই একসাথে কাজ করে কাজে হাত দেয়ার ৩ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করে তাদেরকে যেভাবে মুক্তি দেয়া হয়েছে সে নিয়মে যেন পুরো চট্টগ্রামে ও সারাদেশে কাজ করে মানুষজনকে দুর্ভোগ থেকে মুক্ত করার অনুরোধ করছি। কাজে হাত দেয়ার ৩ মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার মতো কাজ ৩ বছরেও শেষ না করার দুর্ভোগ যেন আর কোনো মানুষজনকে পোহাতে না হয় সেসব বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীর সংশ্লিষ্টদের নজরদারী ও সুষ্ট ব্যবস্থাপনা কামনা করছি। কাজী ইব্রাহিম সেলিম, কবি ও কলামিস্ট।