সৌদি আরবের জেদ্দায় ২৫০ জন বাংলাদেশি মানবেতরর জীবন যাপন
মোহাম্মদ ফিরোজ, সৌদি আরব : সৌদিআরব এর জেদ্দা আজিজিয়া নামক এলাকায় একটি সাপ্লাই কোম্পানিতে ২৫০ বাংলাদেশী মানবেতর জীবনযাপন করছে, জানা গেছে, দালালের পাল্লায় পড়ে ভালো কাজের আশায় কেউ দুইমাস আবার কেউ তিন মাস কেউ বা ছয়মাস ধরে অনাহারে শুকনা রুটি খেয়ে দিন পার করছেন।
সাপ্লাই কোম্পানী এইসব বাংলাদেশী শ্রমিকদের কাজ না দিয়ে দিনের পর দিন নির্যাতন করে যাচ্ছেন। কোম্পানির বাহিরে কাউকেই যেথে দিচ্ছে না, কিছু প্রতিবাদ করতে গেলে শ্রমিকদের মারধরের পাশাপাশি মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন ঐ কোম্পানিতে বন্দি থাকা শ্রমিকরা।
খবর পেয়ে সাংবাদিকরা ঐ কোম্পানির কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে, তারা কোন উত্তর না দিয়ে অফিসে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়।
এদিকে কোম্পানির ভিতরে থাকা শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে , শ্রমিকরা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলায় তাদের আরও বেশি নির্যাতন করছে বলেও জানান কিছু শ্রমিক।
শ্রমিকদের একজন জসিম জানান, দালালের মাধ্যমে প্রত্যেকেই ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা খরচ করে বাংলাদেশি এজেন্সীর মাধ্যমে সৌদি আরবে আগমন করেন। সৌদিআরব নিয়ে এসে একটি বন্ধ বাড়িতে রেখেছেন তাদের। শুধু তাই নয় তারা কাজ চাইলে মিশরীয় নাগরিক তাদেরকে বেদম প্রহার করছে এবং খাবার পানি না দিয়ে নির্যাতন চালাচ্ছেন।
ভুক্তভোগী বাংলাদেশিরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ দুতাবাসের সহায়তা কামনা করছে। জেদ্দা কনস্যুলেটের কনাসল জেনারেল এবং শ্রম কাউন্সেলর এম কাজী এমদাদুল ইসলামকে ঘটনাটি অবহিত করা হলে তারা তৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে একজন আইন সহকারীকে পাঠানোর কথা জানান এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যবস্থা করছেন বলেও জানান।
কুষ্টিয়ার মো. আশরাফুল রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন দেশে। সৌদি আরবে ভিসা আসেন গত মার্চ মাসে। সুদের ওপর টাকা চার লক্ষ টাকা ধার নিয়ে সৌদিআরব এসেছেন। চার মাস চাকরির না পেয়ে সুদের টাকা পরিশোধের চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই দিকে সুদের টাকার জন্য তার বাড়ীতে নির্যাতন চালাচ্ছেন বলে জানান আশরাফুল।
শুধুমাত্র আশরাফুল বা জসিম নয় আরও অসংখ্য বাংলাদেশী শ্রমিক সুদে, ঘরের জমি বা ফসলি জমি বিক্রি করে ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন করতে এইভাবেই দালালের মাধ্যমের সৌদিআরব আসেন, এসে কোন কাজ পান না, পাচ্ছেনা ঠিকমত খাবার, অনেকেই জানেন না তাদের নিয়োগকর্তা কে বা কারা? তাদের একামা বা কাজের অনুমতি পত্র না থাকায় কোথাও কাজের সুযোগ নেই।