নোনাপানিতে বিলবুডুলিয়ায় ধান-সাদা মাছ চাষে ক্ষতির আশঙ্কা
মালিকুজ্জামান, যশোর : যশোরের কেশবপুর উপজেলার বিলবুড়ুলিয়ায় প্রভাবশালী একজন চেয়ারম্যান নদীর লোনাপানি তার মাছের ঘেরে তুলছেন চিংড়ি চাষের জন্য। বিগত দিনে ওই বিলে মিঠাপানির সাদা মাছের চাষ করছেন এলাকার কৃষকরা। এখন বাগদা চিংড়ি চাষী, বড় বড় ঘের মালিক লোনাপানি তোলায় বিলে ধান চাষ ও ঘেরে সাদা মাছ চাষে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।
বিলবুড়লিয়ায় দেখা যায়, মঙ্গলকোট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরের মাছের ঘেরে দুটি স্যালো মেশিন দিয়ে জোয়ারের সময় ভদ্রা নদী থেকে বুড়লিয়া স্লুইসগেট কপাট খুলে নোনাপানি ওঠানো হচ্ছে। ওই বিলের সবচেয়ে বড় আব্দুল কাদেরের মাছের ঘেরটির আয়তন প্রায় ১২০ বিঘা। বিলে লোনাপানি ওঠানোয় মিঠাপানির মাছ মারা যাবে বলে আশঙ্কা করছেন অন্য ঘেরের মালিকেরা। সামনে বোরো মৌসুমে ধানের আবাদ না হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে কৃষকদের। ঘের মালিক মঙ্গলকোট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল কাদের বলেন, ‘কে পানি তুলছে, তা আমার জানা নেই।’ গত সোমবার গিয়ে শ্যালোমেশিন দিয়ে পানি ওঠাতে দেখা গেছে। চেয়ারম্যান বলেন, কিছু পানি হয়তো ওঠানো হচ্ছে। তবে তাতে কারও ক্ষতি করবে না।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বুড়ুলিয়া বিলে জমি রয়েছে প্রায় সাড়ে ৭০ হেক্টর। এতে ১৫০ এর মতো মাছের ঘের আছে। ঘেরে বছরের আট মাস মাছের চাষ করা হয়। বাকি সময় সেচ দিয়ে সেখানে বোরো ধানের আবাদ করা হয়ে থাকে। বরাবরই ঘেরগুলোয় মিঠাপানির রুই, কাতলা ও কার্প জাতীয় মাছের চাষ করা হয়। একই এলাকার কৃষক আব্বাস আলী জানান, বিলে তার দেড় বিঘা জমিতে ১টি মাছের ঘের রয়েছে। তিনি সেখানে মিঠাপানির মাছ চাষ করেন। একবার তার ঘেরে নোনাপানি ঢুকে যাওয়ায় ঘেরের সব মাছ মারা যায়। ওই বছর তার বোরো আবাদ হয়নি। একই মাঠের ঘের মালিক আবদুল আজিজ জানান, নোনাপানি তোলা হলে সাধারণ মৎস্য চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মাছ ও ধান আবাদ করতে পারবে না কৃষকেরা।
এ বিষয়ে উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা সজীব কুমার সাহা জানান, মিঠাপানির চাষে নোনাপানি তোলা হলে মিঠাপানির মাছ মারা যাবে। নোনাপানি তোলার বিষয়ে তারা খোঁজ নেবেন বলে জানান।