জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাবে যশোরে কাঁচাবাজারে আগুন
মালিক উজ জামান, যশোর : জ্বালানি তেলে র মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে যশোরের কাঁচাবাজারে। কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রতি পণ্যের দাম কেজিতে ৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা করে বেড়ে গেছে। পেঁেপ থেকে শুরু করে মিষ্টি কুমড়া, পটল, বেগুন, টমাটো, শশা, কাঁচা ঝাল, পুইশাক, লাল শাক, গাজর, কাচা কলা, লাউ, কচুর লতি, ঢেড়স, ওলকপি, সবুজ শাক, কাকরোল, ঝিঙ্গে, পোল্লা, এমনকি পেয়াজ, রসুন, মসলার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নাভিশ্বাস উঠেছে ক্রেতার। অন্যদিকে কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা বলছেন তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ বেড়েছে। ফলে পন্য বেশী দামে বিক্রি করতে তারা বাধ্য হচ্ছেন।
যশোরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির মধ্যে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁপে। যা ছিলো ২৫-৩০ টাকা তা এখন ৩৫-৪০ টাকা। ১৫-২০ টাকা দরের প্রতি কেজি পটল ও ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। অর্থাৎ কয়েকদিনের ব্যবধানে বেড়েছে ১৫-২০ টাকা। ৩০-৩৫ টাকার শশা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা প্রতি কেজি। ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া চিচিঙ্গা ৬০-৭০ টাকা, ২০ টাকার ধুন্দল ৩০-৪০ টাকা, ২৫-৩০ টাকার কাঁকরোল ও কচুর মুখি আজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। ৫০ টাকার রববটি ৬০-৭০ টাকা। ৪০-৫০ টাকার উচ্চে-করলা এখন ৫০-৬০ টাকা, ৪০ টাকার বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। বাজারে নতুন আসা শীতকালীন সবজি শিম বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ৮০-৯০ টাকার টমেটো এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে। প্রতিকেজি গাজরের দাম ৮০-৯০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ১২০-১৫০ টাকা হয়েছে। ১৮০ টাকার কাঁচা মরিচ এখন ২০০ থেকে ২২০ টাকা কখনো কখনো ২৫০ টাকা দরেও বিক্রি হতে যায়। লাউ প্রতি পিছ ২০-৩০ টাকা ছিলো এখন ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা ও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। ২০-২৫ টাকার চাল কুমড়া ৩০-৩৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার ছিলো ২৫-৩০ টাকা যা এখন ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৩০ টাকার কাঁচা কলা ৩০-৪০ টাকা। শাকের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। ২০-২৫ টাকা কেজির লাল শাক ৩০-৪০ ও ৩০ টাকার পালং শাক বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। আর ২৫ টাকার লাউ শাক বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়। ক্রেতারা জানান, কাঁচা বাজারে সবকিছুর দাম বাড়ছে। মাছ মাংশ খাওয়ার উপায় নেই। সবজি খেয়ে থাকবো তাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
যশোর রেলস্টেশন কাঁচা বাজারের ক্রেতা আব্দুর রশিদ জানালেন, গত সপ্তাহে যে পটল ৪/৫ টাকা কেজি কিনেছি তার মূল্য এখন কয়েক গুন বেড়েছে। পিচ্চি এক লাউ এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০/৫০ টাকায়। বড় বাজারের খুচরা সবজি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত সাহা জানান, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় পণ্যের দাম বেড়েছে। পণ্যের দাম বাড়ায় তাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। শুধু মধ্যবিত্তরাই নয়, সীমিত আয়ের মানুষ সংসার চালাতে চরম বিপাকে পড়েছেন। কেউ গচ্ছিত পুঁজি ভেঙ্গে খাচ্ছেন, কেউ ধারদেনা করে চলতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ে অপারগতায় অনেকেই এখন তরি তরকারি ক্রয় কমিয়ে দিয়েছেন। এ সমস্যা আপামর যশোরবাসী সকলের। ক্রেতা বার বার অনুযোগ অভিযোগ করলেও তাতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।