খেলা

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রদর্শিত

 

কক্সবাজার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ (বাসস) : কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রদর্শিত হয়েছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সৈকতের লাবণী বিচে সর্ব সাধারণের জন্য ট্রফিটি প্রদর্শিত হয়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আনুষ্ঠানিক সফরের বাংলাদেশ পর্বের অংশ হিসাবে প্রথম দিন সমুদ্র নগরী কক্সবাজারে প্রদর্শিত হলো।

বুধবার সকাল ১০টার আগেই পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে চ্যাম্পিয়ন ট্রফিটি প্রদর্শনের জন্য আনা হয় সৈকতে। সাড়ে ১০টার পরপরই ফটোসেশনের জন্য সৈকতের লাবণী পয়েন্টে জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত করা হয়। সেখানে উপস্থিত পর্যটক ও স্থানীয় দর্শনার্থীরা ছবি-সেলফি তুলে মুহূর্তটি স্মরণীয় করে রাখলেন।

আইসিসির এই ট্রফি দেখতে ভিড় করেন অনেক ক্রিকেটপ্রেমী দর্শনার্থী। তাদের আগমনে সৈকতে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নানান বয়সের মানুষ, স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা ট্রফি দেখার জন্য ছুটে আসেন। অনেকেই ট্রফির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে জমিয়ে রেখেছেন স্মৃতির পাতায়।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) পরিচালিত সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্র ‘উর্মি’র সামনে  ট্রফিটি প্রদর্শনের জন্য তৈরি করা হয় একটি বিশেষ মঞ্চ। সমুদ্রের শীতল বাতাস আর ঢেউয়ের অদ্ভুত মন মাতানো শব্দ মিশে এক অপূর্ব দৃশ্যের সৃষ্টি করে। অনেকের মতে এই আয়োজন কক্সবাজারের পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

পুরো বিষয়টির জন্য ছিল কঠোর নিরাপত্তা বলয়। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ টিম মোতায়েন ছিল। ট্রফি উন্মোচনের ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের ভিড়ে ‘উর্মি’র সামনের অংশ উৎসবের মঞ্চে পরিণত হয়। ট্রফি দেখতে এবং ছবি তুলতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন সবাই।

সেখানে উপস্থিত অনেকেই মনে করেন ট্রফিটি শুধু একটি সোনালি কাপ নয়, এটি বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের সফলতার স্বপ্ন। এটি আমাদের নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।

ট্রফি দেখতে আসা তামান্না নওরীন নামের এক তরুণী জানান, ‘কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে আইসিসি ট্রফি প্রদর্শনের বিষয়টি আমাদের জন্য দারুণ অনুভূতি এবং অনুপ্রেরণা। এই ট্রফি দেখে মনে হয় একদিন আমরাও বাংলাদেশকে বিশ্বকাপ এনে দিতে পারবো। সেই লক্ষ্যে খেলে যাওয়ার প্রেরণা পাবো।’

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক আরিফ চৌধুরী জানান, ‘এত কাছে বিশ্বকাপ আর কখনও দেখিনি। তাই আইসিসির এই চ্যাম্পিয়ন ট্রফিটি কাছে পেয়ে সত্যিই আমি আনন্দিত। এটি ভাগ্যও বলা চলে। কারণ আমি ট্রফিটির কাছে গিয়ে ছবি তুলেছি। স্মৃতি হিসেবে রাখার সুযোগ পেয়েছি।’

এই আয়োজন কেবল ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য নয়, কক্সবাজারের পর্যটনকেও প্রাণবন্ত করেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, ‘সৈকতে আইসিসি ট্রফি প্রদর্শিত হওয়ায় অনেকে কক্সবাজারকে গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। ভ্রমণের জন্য ইতিবাচক জায়গা হিসেবে পর্যটকরা কক্সবাজারকে বেছে নেবেন বলে আশা রাখছি।’

২০২৫ সালে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসর। রীতি অনুযায়ী টুর্নামেন্ট শুরুর আগে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোতে নেওয়া হয় ট্রফি। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলবে আট দল। স্বাগতিক পাকিস্তানের সঙ্গে রয়েছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ।

পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ থেকেই শুরু হয়েছে ট্রফির যাত্রা। ১৭ থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে ঘুরেছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। এরপর গিয়েছে আফগানিস্তানে। সেখান থেকেই এসেছে বাংলাদেশে। দুবাইভিত্তিক বহুজাতিক লজিস্টিক কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ড ট্রফির এই ভ্রমণ পরিচালনা করছে।

তিন কেজি এক’শ গ্রামের এ নান্দনিক ট্রফিটি লাবণী পয়েন্টে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ছিল। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে থাকবে ট্রফিটি। এই সময় সমর্থকরা ট্রফির সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগ পাবেন। ১৩ ডিসেম্বর মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নেওয়া হবে। সেখানে জাতীয় পুরুষ ও নারী দল, সাবেক ক্রিকেটার, অফিসিয়াল, সংগঠক, স্পন্সর ও গণমাধ্যমকর্মীরা ট্রফির সান্নিধ্য পাবেন।

বাংলাদেশ থেকে এই ট্রফি যাবে দক্ষিণ আফ্রিকায়। এরপর অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও ভারত ঘুরে ফিরবে আয়োজক দেশ পাকিস্তানে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button