বৃষ্টির জন্য ঝিকরগাছায় মাঠে কৃষকের নামাজ আদায়
মালিক উজ জামান, যশোর :
‘এখন শরৎ কাল থাকবে আকাশে মেঘ বৃষ্টি
গরমের তাপদাহ নেই পানি হায় একি অনাসৃষ্টি
হায়রে বঙ্গ কৃষকের কান্না পাল্টেছে তবে কৃষ্টি
হে বিধাতা সদয় হও দাও অভাগায় একটু দৃষ্টি’
বৃষ্টির দাবিতে মানুষ যশোরে বড়ই উতালা। ভরা বর্ষা মৌসুমেও জমিতে পানি না থাকায় আমন ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। পানির অভাবে অনেকের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। অনেকে সেচ দিয়ে কোনোমতে চারা জীবিত রেখেছেন। পাট জাগ দিতে না পারায় মাঠেই শুকিয়ে যাচ্ছে। পানির হাহাকার অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে দোয়া ও নামাজ আদায় করেছেন যশোরের ঝিকরগাছার কৃষক ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
তীব্র রোদ উপেক্ষা করে রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে গঁজালিকান্দা বিলে এতে অংশ নেয় কলাগাছি, উত্তর দেউলী ও আন্দোলপোতা গ্রামের শত শত কৃষক। ইস্তিসকার নামাজে ইমামতি করেন কলাগাছি সরদারপাড়া জামে মসজিদের ইমাম আলী হায়দার। তিনি বলেন- মানুষ, জীবজন্তু, পশুপাখি অনাবৃষ্টি ও অতিখরায় ভুগছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে মহান আল্লাহতায়ালার নিকট আমরা মাফ চেয়ে দোয়া করেছি। উত্তর দেউলী গ্রামের কৃষক উজ্জ্বল হোসেন বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় ধান-পাট নিয়ে এলাকাবাসী দুঃচিন্তায় আছি। যে বিলের মধ্যে আমরা নামাজ পড়লাম এ সময় এখানে গলা সমান পানি থাকে। পল্লী চিকিৎসক এসএম শামীম বাবু বলেন- পানির অভাবে নাভিশ্বাস উঠে গেছে। ইস্তিসফার নামাজের অংশ নিতে শনিবার মাইকিংও করা হয়েছে। ঝিকরগাছা কৃষি কার্যালয়ের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৮০০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কলাগাছি, আন্দোলপোতা, মাইটকোমড়া, আমিনি, চান্দেরপোল, বল্লা, বারবাকপুর, বেজিয়াতলা, বোধখানা, বর্ণি, খাসখালীসহ অধিকাংশ গ্রামের কৃষকেরা বৃষ্টির জন্য হাহাকার করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, গত ৪০ বছরের মধ্যে এবার বৃষ্টিপাত সবচেয়ে কম হয়েছে। আমন ধানের আবাদ করতে বৃষ্টির প্রয়োজন। বৃষ্টির পানিতে ইউরিয়া সারের উপাদান রয়েছে। সে কারণে এবার ফলন কম হতে পারে।