ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার সৌন্দর্য তুলে ধরতে ‘হিডেন হেরিটেজ: হোমস ইন ঢাকা’ প্রকল্পের উন্মোচন
[ঢাকা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২] রাজধানীতে অবস্থিত ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ের সাক্ষী ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর সৌন্দর্য তুলে ধরতে দ্য বেঙ্গল ইনস্টিটিউট ফর আর্কিটেকচারের ল্যান্ডস্কেপস অ্যান্ড সেটেলমেন্টস, ইইউএনআইসি (ইউরোপিয়ান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস ফর কালচার) ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের অংশীদারিত্বে সম্প্রতি রাজধানীর বংশাল এলাকার হাটুরিয়া হাউজে ‘হিডেন হেরিটেজ: হোমস ইন ঢাকা’ শীর্ষক এক প্রকল্প উন্মোচন করা হয়েছে।
ঢাকার ঐতিহাসিক দালানগুলোর দীর্ঘ ইতিহাস এবং এর পেছনের গল্পগুলো সংরক্ষণ করাই ‘হিডেন হেরিটেজ’ প্রকল্পের উদ্দেশ্য। রাজধানী ঢাকার বেশ কিছু ঐতিহাসিক দালান প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে মানুষের আকর্ষণ ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তবে, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সাথে সাথে সেসব ঐতিহাসিক দালানের জায়গায় নির্মিত হচ্ছে নতুন ভবন।
প্রকল্পটির আওতায় ঢাকা শহরে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সাথে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক, সামাজিক ও পরিবেশগত বিভিন্ন বিষয় সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং সেগুলো অনলাইন উপস্থাপনার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। ঢাকা শহরের প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন নিয়ে এ ধরণের উপস্থাপনা এবারই প্রথম। ওয়েব-ভিত্তিক উপস্থাপনার ক্ষেত্রে মাল্টিমিডিয়া প্ল্যাটফর্মের সাথে আরও থাকছে- ৩৬০ ডিগ্রি ফটোগ্রাফি সহ ভার্চ্যুয়াল ট্যুর, ভিডিও, স্থিরচিত্র, ড্রয়িং সহ আরও অনেক কিছু।
প্রকল্পটির জন্য এই পর্যায়ে পাঁচটি দালানকে নির্ধারিত করা হয়েছে। সেগুলো হলো- বংশালের হাটুরিয়া হাউজ, ইস্কাটনের কবির হাউজ, মগবাজারের রাজশাহী হাউজ, ধানমন্ডির আসাফ খানের বাসভবন এবং সূত্রাপুরের রেবতী মোহন দাস হাউজ। এ সময় আরও চারটি দালানের মালিক ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে ঐতিহাসিক এ স্থাপনাগুলোর ইতিহাস তুলে ধরেন।
গ্যেটে ইনস্টিটিউটের পরিচালক ক্রিস্টেন হ্যাকেনব্রোশ এবং আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকা এর পরিচালক ফ্রাসোয়াঁ গ্রজিয়াঁর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ প্রকল্প কীভাবে শুরু হয় এ নিয়ে তারা আলোকপাত করেন। এরপর, বেঙ্গল ইনস্টিটিউটের পরিচালক কাজী খালিদ আশরাফ এ প্রকল্পের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। আবাসিক স্থাপনা একটি শহরের জন্য কতোটা গুরুত্বপূর্ণ এবং নাগরিক জীবন, স্থাপত্য এবং জীবনধারার ক্ষেত্রে এর ভূমিকার ব্যাপারে তিনি উল্লেখ করেন। এ প্রকল্পের কিউরেটর সালাউদ্দীন আহমেদ এবং সদস্য নাসির খান ও রুবাইয়া নাসরিন ওয়েবসাইটটি সবাইকে দেখান। পরবর্তীতে, পাঁচটি স্থাপনার মধ্যে চারটি স্থাপনার মালিক ও প্রতিনিধিরা স্থাপনাগুলোর ইতিহাস ও এর পেছনের গল্প বলেন।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন ইতিহাস সংরক্ষণের গুরুত্বের ব্যাপারে আলোকপাত করেন। সবশেষে, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চার্লস হোয়াইটলি ‘হিডেন হেরিটেজ’প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেন এবং পুরান ঢাকার এক ঐতিহাসিক স্থানে উল্লেখযোগ্য এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন। কাওয়ালি আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠান শেষ হয়।