যশোর জেলায় গ্রীষ্মকালীন শাক সবজির বাম্পার ফলন
মালিক উজ জামান, যশোর : যশোর কৃষি জোনের আওতায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলায় চলতি মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন শাক সবজির বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ বছর যশোর জেলায় গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫,১০০ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩,৩৯,৭৫০ মেট্রিক টন।
যশোরে এই মৌসুমে ৪৯,৯৬৬ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১০,৪৮,৫৩২ মেট্রিক টন সবজি। গত বছর বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজির দাম ভালো পাওয়ায় চাষির মুখে খুশির ঝিলিক মিলছে। এবারও একই সবুজ ফসলের বাম্পার ফলন মাঠে। কৃষক তাই বেজায় আনন্দে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলা হচ্ছে-যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর। যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসের শুরু থেকে গ্রীষ্মকালীন সবজির আবাদ শুরু হয়। এ আবাদ চলবে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত। যশোর জেলায় গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫,১০০ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩,৩৯,৭৫০ মেট্রিক টন। ঝিনাইদহ জেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০,২০০ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১,৯৭,৩৭০ মেট্রিক টন। মাগুরা জেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩,৫২৫ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫,২১৩ মেট্রিক টন। কুষ্টিয়া জেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭,৩৫০ হেক্টর জমিতে । এ জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১,৭৬,৪০০ মেট্রিক টন।চুয়াডাঙ্গা জেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৬১১ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১,৬৩,৬০৯ মেট্রিক টন এবং মেহেরপুর জেলায় গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫,১৮০ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১,৬,১৯০ মেট্রিক টন।
যশোর সদরের সাতমাইল এলাকার সবজি চাষিরা জানান, বিষা প্রতি জমিতে বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষে তাদের খরচ হয় ২০,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকার মতো। একবিঘা জমিতে তারা কমপক্ষে ৫০ থেকে ৭০,০০০ টাকার সবজি বিক্রি করে থাকেন। বাজার সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে খুচরা বাজারে এক কেজি বেগুন ৫০ টাকা, ধুন্দল প্রতিকেজি ২৫ টাকা, কুসি প্রতি কেজি ২৫টাকা, কাঁচকলা প্রতি হালি ২৫-৩০ টাকা, লাল শাক ও সবুজ শাক প্রতি কেজি ৫০-৬০টাকা, বরবটি শিম প্রতি কেজি ৩৫-৪০টাকা, পেঁপে প্রতিকেজি ২০ টাকা, ঝিঙ্গে প্রতি কেজি ৩০টাকা, উচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৩৫ টাকা, ক্ষিরা প্রতি কেজি ৫০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৩০ টাকা, কচু সাইজ ভেদে ২০-২০ টাকা, ডাটা প্রতি আটি ২০ টাকা এবং লাউ সাইজ ভেদে ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো: এখলাছ উদ্দিন জানান, যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলা সবজি উৎপাদনের জন্য উর্বর ভুমি। এখানকার উৎপাদিত সবজির চাহিদা দেশ বিদেশের সর্বত্র রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন সবজির বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।