ট্যুরিস্ট পুলিশেই স্বস্তি পর্যটকদের
ভদ্র, সৌজন্যমূলক এবং সদাচরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিটি পর্যটন স্পট পর্যটকদের জন্য নিরাপদ করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটন স্পটে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত, মনোরম পরিবেশ প্রস্তুত, আস্থা বৃদ্ধি, আইনগত সহায়তা প্রদান, জীব-বৈচিত্র সংরক্ষণ এবং সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এতে পর্যটন স্পটে পর্যটকদের ভিড় প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১ হাজার ৩৯৩ জনবল নিয়ে পর্যটকদের নিরলস সেবা দিয়ে যাচ্ছে পুলিশের এই সংস্থাটি। বর্তমানে ১০৪টি পর্যটন স্পটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
জানা গেছে, বিশাল কর্মক্ষেত্র থাকলেও কম জনবল, যানবাহন ও ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। আইনী প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতার কারণে চাইলেও অনেক কাজ করতে পারছে না। ট্যুরিস্ট স্পটে রেস্ট রুম ও টয়লেট ফ্যাসেলিটির অভাব রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও যানবাহনের অভাব পর্যটকদের স্পটে যেতে সমস্যা হচ্ছে। স্পটগুলোতে রাত্রিকালীন পর্যাপ্ত আলো এবং পার্কিং ব্যবস্থা কম থাকায় সমস্যায় পড়ছেন পর্যটকরা। হকার ও ফটোগ্রাফারদের উৎপাত তো রয়েছেই।
ট্যুরিস্ট পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পর্যটন স্পটসমূহে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাসহ দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। চুরি-ডাকাতি ও ছিনতাই রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ট্যুরিস্ট স্পটসমূহে পর্যটকদের তাৎক্ষণিক সেবা প্রদান ও প্রতিকার মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। হ্যালো ট্যুরিস্ট অ্যাপস, ফেসবুক, ওয়েবসাইট, হটলাইনসহ বিভিন্ন প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে পর্যটকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ট্যুরিস্ট এবং তাদের সম্পত্তি রক্ষায় ফৌজদারি মামলার তদন্ত করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিআইজি মো. ইলিয়াছ শরীফ বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা প্রদানের মাধ্যমে দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে পুলিশের একটি বিশেষায়িত ইউনিট হিসেবে ট্যুরিস্ট পুলিশ গঠিত হয়েছে। পর্যটকদের জন্য একটি নিরাপদ গন্তব্য পরিণত করা এবং পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে শুরু থেকেই ট্যুরিস্ট পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে পর্যটকদের বিশ্বমানের সেবা ও নিরাপত্তা প্রদানের মাধ্যমে তাদের আস্থা অর্জনে ট্যুরিস্ট পুলিশ সক্ষম হয়েছে।
পর্যটকদের বিশ্বমানের পর্যটন সেবা ও নিরাপত্তা প্রদানের মাধ্যমে দেশের পর্যটন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে ২০১৩ সালের ৬ নভেম্বর ট্যুরিস্ট পুলিশ গঠিত হয়। ২০২০ সালের ৩ জুন ট্যুরিস্ট পুলিশের বিধি গেজেট আকারে প্রকাশ হয়। ট্যুরিস্ট পুলিশের সদর দফতর ছাড়াও ৪টি ডিভিশন, ১১টি রিজিউন, ৪২টি জোন ও ৩২টি অপারেশনাল জেলা রয়েছে। ট্যুরিস্ট এলাকাগুলোতে নিরাপদে ভ্রমণে ট্যুরিস্ট পুলিশ বদ্ধপরিকর। ফলে দিন দিন এসব এলাকার পরিবেশ উন্নতিসহ দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, আজ মঙ্গলবার বিশ্ব পর্যটন দিবস। এ বছরের বিশ্ব পর্যটন দিবসের প্রতিপাদ্য ‘পর্যটনে নতুন ভাবনা’। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় আলোচনা সভা, বর্ণাঢ্য র্যালিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিবসটি উপলক্ষে ‘পর্যটন গন্তব্য নিরাপদ ঝুকি-বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশের করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। কর্মশালাটি রাজধানীর আগারগাঁও পর্যটন ভবনে অনুষ্ঠিত হবে।