চট্টগ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে এভারকেয়ার হাসপাতাল উদ্বোধন করলো এভারকেয়ার গ্রুপ
উন্নত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে ২০২১ সালে চালু হওয়া ৪৭০ শয্যাবিশিষ্ট এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রামে ২৭টি বিশেষ মেডিকেল ও সার্জিক্যাল সেবা
[ঢাকা, ১০ অক্টোবর, ২০২২] আজ বন্দরনগরী চট্টগ্রামে এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেছে এভারকেয়ার গ্রুপ। স্বাস্থ্য সেবাখাতের ইতিবাচক রূপান্তরে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোতে বিনিয়োগ করে এভারকেয়ার গ্রুপ। এর ধারাবাহিকতায়, আজ উদ্বোধন করা হাসপাতালটি চট্টগ্রামের সর্বপ্রথম মাল্টিস্পেশালিটি টারশিয়ারি কেয়ার হাসপাতাল। ২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে সেবাদান চালু ও কার্যক্রম শুরু করলেও কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির প্রাদুর্ভাবের কারণে হাসপাতালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন বিলম্বিত হয়।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী কার্যক্রম পরিচালনা করেন টিপিজি গ্রোথের কো-ম্যানেজিং পার্টনার ও এভারকেয়ার গ্রুপের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের চেয়ারম্যান ম্যাথু হোবার্ট; এভারকেয়ার হাসপাতাল বাংলাদেশের চেয়ারম্যান বব কুন্দানমাল এবং এভারকেয়ার গ্রুপের গ্রুপ সিইও ম্যাসিমিলিয়ানো কোলেলা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি; গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি; সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম. জহিরুল আলম দোভাষ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সহ অন্যান্য সম্মানিত অতিথিবৃন্দ।
এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রাম চালু হওয়ার গুরুত্ব প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি বলেন, “২০১৯ সালে আমরা যখন চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করি তখন জনগণের কাছে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা স্বপ্নের বাস্তবায়ন, আর এ লক্ষ্যে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে রূপান্তর করা। উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর মানুষের জন্য বিশ্বসেরা ও গুণগতমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ও উন্নত সেবা প্রদানে সক্ষম বৈশ্বিক হাসপাতাল চেইন এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রামের কার্যমক্রমের উদ্বোধন আমাদের লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।”
উদ্বোধনূ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি বলেন, “কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির সময় স্বাস্থ্যসেবা খাতে এক অভূতপূর্ব সঙ্কটের তৈরি হয়। তবে, বিশ্বজুড়ে আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা সাফল্যের সাথে সে সময়ের প্রতিকূল পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে সক্ষম হই। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিনিয়োগে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে এভারকেয়ার গ্রুপ। এভাবেই তারা এ দেশের প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে আমি মনে করি। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এ হাসপাতালটির উদ্বোধন বন্দরনগরী চট্টগ্রাম সহ চট্টগ্রাম বিভাগ ও এর আশেপাশের এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করবে।”
এভারকেয়ার গ্রুপের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের চেয়ারম্যান ও টিপিজি গ্রোথের কো-ম্যানেজিং পার্টনার ম্যাথু হোবার্ট দ্য রাইস ফান্ডের জন্য স্বাস্থ্য সেবাখাতে বিনিয়োগে নেতৃত্ব প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “উদীয়মান বাজারে রূপান্তরে লক্ষ্যে যে বিনিয়োগ করা হয় তা কীভাবে উচ্চ মানসম্পন্ন সেবা প্রদান করতে পারে এবং সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে পারে তার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রাম। ২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে চালু হওয়ার পর, হাসপাতালটি ইতোমধ্যে এ অঞ্চলে মানুষের জন্য স্কোলিওসিস কারেকশন সার্জারি ও চট্টগ্রামের প্রথম কম্প্রিহেনসিভ পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলোজি সেবা সহ নতুন এবং জটিল রোগের চিকিৎসা সেবা নিয়ে এসেছে। আমরা গর্বিত যে আমরা সেবার মান উন্নত করতে পেরে এবং বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের নতুন অধ্যায় শুরু করতে পেরে আমরা গর্বিত।”
অনুষ্ঠানে এভারকেয়ার গ্রুপের গ্রুপ সিইও ম্যাসিমিলিয়ানো কোলেলা বলেন, “দেশের বাইরে চিকিৎসা সেবা নেয়ার ক্ষেত্রে যেসব প্রতিকূলতা তৈরি হয়, নতুন চালু হওয়া এভারকেয়ার হাসপাতালের মানসম্পন্ন সেবার মাধ্যমে তা কমে আসবে বলে আমি মনে করি।” তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী পথরেখা তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য; একইসঙ্গে স্থানীয় প্রতিভা বিকাশে দেশব্যাপী চিকিৎসা সেবা খাতের অগ্রগতিতে সহায়তা করাও আমাদের লক্ষ্য, যাতে করে কমিউনিটির মানুষের স্বাস্থ্যসেবার চাহিদাপূরণে তারা স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত দক্ষতা অর্জন করতে পারেন।”
চট্টগ্রাম অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা পূরণে ৪৭০ শয্যাবিশিষ্ট এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রামে রয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ২৪/৭ জরুরি বিভাগ, ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ), ২৭টি বিশেষ ও উপ-বিশেষ বিভাগ। শীর্ষস্থানীয় কনসালটেন্ট ও চিকিৎসক, সার্বক্ষণিক সেবা এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির বিশেষায়িত এই হাসপাতালটি এ অঞ্চলের মানুষের জন্য গুণগতমানের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করবে। হাসপাতালটিতে ২৪/৭ ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলোজি অ্যান্ড কার্ডিয়াক সার্জারি সার্ভিস সহ কম্প্রিহেনসিভ হার্ট সেন্টার একটি মা ও শিশু সেন্টার, একটি নিউরোসায়েন্স সেন্টার, বোন অ্যান্ড জয়েন্টস সেন্টার এবং ডাইজেস্টিভ ডিজর্ডার সেন্টার সহ ১২টিরও বেশি উন্নত মানসম্পন্ন সেন্টার রয়েছে। এসব উন্নত মানসম্পন্ন সেন্টারের প্রত্যেকটির মাধ্যমে চিকিৎসার ক্ষেত্রে সর্বোত্তম সুযোগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হবে।
চট্টগ্রামের অনন্যা আবাসিক এলাকায় মোট ৪ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট আয়তনের ওপর নির্মিত হয়েছে এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রাম। এ হাসপাতালটি বাংলাদেশের একমাত্র হাসপাতাল যা হছে ফ্ল্যাগশিপ ফ্যাসিলিটি- এভারকেয়ার হাসপাতাল ঢাকার চেয়েও আয়তনে বড় ও সক্ষমতা বিবেচনায় এগিয়ে রয়েছে।
এভারকেয়ার হাসপাতাল বাংলাদেশর চেয়ারম্যান বব কুন্দানমাল বলেন, “এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রাম একটি মাল্টি-স্পেশালিটি হাসপাতাল, যা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও বিশ্বমানের মেডিকেল প্রফেশনাল দ্বারা পরিচালিত। আমাদের প্রত্যাশা এ হাসপাতাল চট্টগ্রামে ইতিবাচকভাবে সামাজিক পরিবর্তন ত্বরাণ্বিত করবে এবং ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য সেবাদানের ক্ষেত্রে নতুন মানদ- তৈরি করবে। চট্টগ্রামের প্রথম হাসপাতাল হিসেবে এটি মেডিকেল, সার্জিক্যাল ও রেডিয়েশন সহ ক্যান্সার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ও সর্বাধুনিক সেবা নিশ্চিত করবে।”