যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু
মালিক উজ জামান, যশোর : যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর পাঁচদিন পরে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) তত্ত্বাবধায়কের নির্দেশে সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুর রহিম মোড়লকে প্রধান করে তিন সদস্যের এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তৌহিদুল ইসলাম, ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার আব্দুস সামাদ। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক বরাবর প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। উল্লেখ যে, গত ৯ অক্টোবর ঝিকরগাছা উপজেলার খাসখাল গ্রামের মৃত আমীর আলী ছেলে আব্দুল হান্নান (৫০) অসুস্থ অবস্থায় শহরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডা. এফএম মঞ্জুর হোসেনকে দেখান। তিনি দ্রুত আইসিইউতে ভর্তি হতে বলেন। কিন্তু রোগীর পরিবার গরীব হওয়ার কারণে তারা ৯ অক্টোবর রাতে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। যার রেজি: নং-৬০০১৭/২০২। পরে স্বজনরা রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের আইসিইউতে রোগীকে নিতে গেলে। আইসিইউর কর্তব্যরত চিকিৎসক তখন স্বজনদের জানান রোগীর অবস্থা ভালো আছে। এখানে রাখার কোনো প্রয়োজন নাই। এই বলে ওয়ার্ডের সামনে থেকে রোগীকে বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেন। পরে জেলার শীর্ষস্থানীয় নেতা তত্ত্বাবধায়ককে মোবাইল ফোনে রোগীর উন্নত চিকিৎসার কথা জানালেও রোগী হাসপাতাল থেকে কোনো চিকিৎসা সেবা পাইনি। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আইসিইউ এর করিডোরে আব্দুল মান্নানের মৃত্যু হয়। এ সময় ডা. প্রসনজিৎ চৌধুরীর রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনা ১০ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম মিলন জেলা আইন শৃঙ্খলা মিটিং এ অভিযোগ আকারে জেলা প্রশাসকের কাছে বিষয়টি জানান। তার পরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি। পরে বিভিন্ন মহলের চাপে পড়ে ও মৃতের অভিভাবক লিখিত অভিযোগ দিলে তত্ত্বাবধায়ক শনিবার তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
উল্লেখ যে, গত ২০২০ সালে পালবাড়ি এলাকার সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা একই রকম ঘটনায় চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেলেও পরিবার কোন বিচার পাননি। বিভিন্ন কৌশলে মৃতের স্ত্রীকে দিয়ে অভিযোগ উঠিয়ে নিয়ে ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক। এ ব্যাপারে মৃতের স্বজন রেজওয়ানুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, জীবন ও মৃত্যু আল্লাহর হাতে। মৃত্যু হতেই পারে তাই বলেকি চিকিৎসক রোগীকে না দেখেই রোগী সুস্থ বলে চিকিৎসা না দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিবেন। এব্যাপারে তদন্ত বোর্ডের সদস্য ডা. আব্দুস সামাদ জানান, তদন্তের বিষয় শুনেছি। চিঠি পেলে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হবে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জানান, অভিযোগ পেয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছি। রবিবার (১৬ অক্টোবর) নির্দেশনায় স্বাক্ষর করা হবে। অপরাধী যে হোক প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থ্যা নেয়া হবে।