নৌকার চেয়ারম্যান, ভোট চাইলেন আনারসের!
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
২০১৬ সালে নৌকা প্রতীকে আমি নির্বাচন করেছিলাম। সেই নির্বাচনে এই ফারুক চৌধুরী’র নেতৃত্বে রামদা বাহিনী দিয়ে বড়উঠানের প্রতিটি কেন্দ্রে আমার মা বোনদের নির্বিচারে হামলা চালিয়েছে। রামদা দিয়ে আঘাত করেছে। সেই আঘাতের কারণে ৬ নং ওয়ার্ডে দুইটি তাজা প্রাণ রিকশাচালক, নিহত হয়েছেন। তার রামদার আঘাতে নিহত হয়েছেন এক মেম্বার পদপ্রার্থীও।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) রাত ৭ টার দিকে উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের মিয়ার হাট এলাকায় কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীক প্রার্থী মোহাম্মদ আলীর নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন-বড়উঠান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদারুল আলম।
চেয়ারম্যান দিদারুল আলম আরও বলেন, ‘৭ নং ওয়ার্ডে গর্ভবতী মহিলাকে লাথি মেরে তার নবজাতক শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। ২০১৬ সালে সেই রামদা চৌদ্দ শিখে জমা না দিয়ে সেই লামদা আজকে এই বাড়ি থেকে ওই বাড়ি। সেই রামদার আঘাত আমাদের ভাই ছাত্রলীগ নেতা মামুন কে হত্যা করেছে। আজকে এই লামদার ভয়ে আমরা ঘুমাতে পারি না। একদিকে হাতি অন্যদিকে রামদার ভয়ে আমরা ঘুমাতে পারি না। যদি আপনারা মোহাম্মদ আলী ভাইকে নির্বাচিত করেন তাহলে আমি তাঁকে বলব, এই বড়উঠান থেকে রামদা গুলো উদ্ধার করে আমাদের শান্তিতে ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দেবেন।’
‘আমরা নৌকা বিরুদ্ধে নয়, আমরা ভূমিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নয়, আমরা প্রার্থীর বিরুদ্ধে, আমরা হাইব্রিডের বিরুদ্ধে। যারা আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান হয়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ভাইদের উপর গুলি চালিয়েছিল আমরা তাদের বিরুদ্ধে।’
নির্বাচনী অফিস উদ্বোধনকালে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বিগত ৬ বছরে কর্ণফুলীতে অবকাঠামোগত কোন উন্নয়ন হয়নি। যে সব উন্নয়ন দেখা যায়। এ গুলো সরাসরি আমাদের অভিভাবক মাননীয় ভূমিমন্ত্রীর উন্নয়ন। আমি কথা দিচ্ছি আগামীতে নির্বাচিত হলে জনগণের ক্ষতি হয়, এ ধরণের কোন কাজ আমি করব না। উন্নয়ন-ই হবে আমার প্রধান কাজ। উন্নয়নের লক্ষে আমার আনারস মার্কায় ভোট দিন।’
ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ মহি উদ্দিন মুরাদ বলেন, ‘আমরা কর্ণফুলী উপজেলাবাসী একটা কুচক্রী মহলের কাছে জিম্মি। নির্দিষ্ট কিছু লোক ভুল বুঝিয়ে মন্ত্রী মহোদয়কে আমাদের প্রতিপক্ষ করতে চেষ্টা করছেন। এটা সফল হবে না। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই। আমরা মন্ত্রী মহোদয়ের বিপক্ষে নয়। আমরা কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে। যারা উন্নয়ন কুক্ষিগত করে রেখেছেন আমরা তাদের বিরুদ্ধে। নির্দিষ্ট কিছু লোক উন্নয়ন প্রকল্প ভাগাভাগি করেছেন। ভবিষ্যতে তা হবে না। আমরা কর্ণফুলীকে একটি মডেল উপজেলা করতে চাই। এজন্য আগামী ২ তারিখ আপনারা আনারস ও উড়োজাহাজ প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাদের জয়যুক্ত করবেন। সেই প্রত্যাশা করছি।’
এছাড়াও ফারুক চৌধুরীকে উদ্দেশ্যে করে চেয়ারম্যান দিদার আরও বলেন, ‘এই বড়উঠান ইউনিয়নে আপনার বাড়ী। কিন্তু আপনি কোনদিন বড়উঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে আমাকে এক টাকাও বরাদ্দ দেননি। তার জন্য কোনদিন ঝগড়া করিনি। এই বড়উঠানের সন্তান হিসেবে আমি মনে করেছি আমাকে না দিলেও এই বড়উঠান ইউনিয়নের আনাচে কানাচে উন্নতি হবে, এই এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। অথচ কি হয়েছে?
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্র রাজনীতি থেকে আমরা বড় হয়েছি। সেই লক্ষ্য নিয়ে গতবার নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফারুক চৌধুরীকে নির্বাচিত করে পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলাম। আজকে সে দায়িত্ব নিয়ে কি করেছেন? এই পাঁচটি বছর বড়উঠান ইউনিয়নে একটি টাকাও আমার হাতে আসেনি। আমরা দেখেছি এই বড়উঠানের কিছু যুবক কে তিনি তার অফিসে বসিয়ে রেখে এক রাস্তা ১০ বার বরাদ্দ দিয়েছেন। একই রাস্তায় বারে বারে বরাদ্দ দেখিয়ে তিনি এই কর্ণফুলীকে লুটেপুটে খেয়ে ফেলেছে। পাঁচ বছর আমাদের কে ধোঁকা দিয়েছেন তিনি।’
এ সময় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ মহিউদ্দিন মুরাদ, সহ সভাপতি এস. এম সালেহ্, মঈনুদ্দিন মাইজভান্ডারী, যুবলীগ নেতা লিয়াকত আলী করিম, আবদুল হান্নান ফারুকী, বোরহান উদ্দিন, আমির আহমদ, ইউপি সদস্য সাইফুদ্দিন, জুবেদা আকতার, যুবনেতা মামুন, আরাফাত, মনির, মাসুদসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।