অর্থ ও বাণিজ্যশীর্ষ নিউজ

সোনা পাচারে উদ্বিগ্ন যশোর অঞ্চলের সমাজপতিরা


মালিক উজ জামান, যশোর : মাত্র এক মাসে অন্তত: ২৫/৩০ কোটি টাকা মূল্যের স্বর্নবার পাচারের সময় ধরা পড়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। এর মধ্যে ৪/৫ দিনের ব্যবধানে পাচারের সময় আবারো আড়াই কোটি টাকার স্বর্নবার ধরা হয়েছে। এবারো যে পাচারকারী ধরা পড়েছে তার বাড়ি যশোরের চৌগাছা উপজেলায়। স্কুল কলেজের শিক্ষক ও সমাজসেবীরা বিভিন্ন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
একটি মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক আফতাব। তিনি জানান এটি ভয়াবহ অবস্থা। প্রায় দেখছি স্বর্নের বড় বড় চালান আটক করছে বিজিবি র‌্যাব পুলিশ। বোঝা যায় স্বর্ন চোরাচালান সিন্ডিকেট যশোর ঝিনাইদহ চুয়াডাঙ্গা কুষ্টিয়ায় বিস্তার রয়েছে। আর একজন শিক্ষক আব্দুল মজিদ জানান, প্রশাসন আটক করছে ঠিকই। তবে এর বাইরেও নিশ্চিত চোরাচালান হচ্ছে। কেননা সকলকে আটকানো অসম্ভব বর্তমান মুহুর্তে। তবে আশার কথা আগের যে কোন সময়ের তুলনায় এখন প্রশাসন বেশি তৎপর। এটা ভাল দিক। যশোরে সর্বশেষ আটক স্বর্ন পাচারকারীর নাম আনাম ইমাম হোসেন। ১৮ অক্টোবর ১০ কোটি টাকার সোনাসহ যে পাচারকারী ধরা পড়েছিলো তার বাড়িও চৌগাছায়। তার নাম সাজু। ওই সোনা ধরা পড়ে যশোরের কাশীপুর সীমান্ত এলাকার ব্যাংদহে। পাচারকারীসহ এত যে সোনা ধরা পড়ছে তার পরেও কেন পাচারকারীরা তৎপর এ জন্য সমাজপতিরা উদ্বিগ্ন। কিভাবে এতবড় সিন্ডিকেট একের পর এক স্বর্ন চোরা চালান অব্যাহত রেখেছে তা তাদের ভাবিয়ে তুলেছে। পাশাপাশি প্রশাসনের দক্ষতায় অনেক গুলো চোরাচালান ও চোরাচালানী এজেন্ট আটকে প্রশসনকে এরা ধন্যবাদ জানিয়েছেন। গত ২২ অক্টোবর ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর সীমান্ত থেকে ৩২ পিস সোনার বারসহ ইমাম হোসেন (৩০) এক যুবককে আটক করে ৫৮ বিজিবি। বড়বাড়ি গ্রামের বিকে নি¤œ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়।
আশঙ্কার কথা এই, সোনা চোরাচালানে মূল হোতারা থাকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তারা টাকার বিনিময়ে লোক দিয়ে পাচার করে। চৌগাছার সাজু এবং ইমাম সে ওই সোনা বহনকারী জন মাত্র। একটি চালান নিরাপদে পাচার করলে এরা বড় জোর ২/৫ হাজার টাকা জন খরচ পায়। তবে এর মূল হোতা থাকে পর্দার অন্তরালে। যাদেরকে আমরা সমাজপতি হিসেবে মান্য করি। তারা মঞ্চ দখল করে নীতি কথা আওড়ায়। তাই বলে আমরা এই ইমাম ও সাজুদের দুধ দিয়ে ধোয়া বলছিনে। কারণ পেশা তো আরো আছে। সমাজপতিরা জানান, ভালো পেশা ছেড়ে চোরাচালানের পথে কোন ভালো মানুষ আসতে পারে না। চালান আটকের পর বোঝা যায়, চোরাচালান থেমে নেই। পাচার করার স্বর্ন বার বার ধরা পড়েছে। যারা এর সাথে জড়িত তারা এতই অপ্রতিরোধ্য যে বার বার ধরা পড়লেও তারা থেমে নেই।
সমাজপতিরা জানান, অহেতুক চুনো পুটির পেছনে দৌড়ে চোরাচালান দমনের কাঙ্খিত সফলতা পাওয়া যাবে না। যতক্ষণ না এর হোতাদের দমন না করা যাবে। যারা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে, মানুষের অকল্যাণে চোরাচালান ব্যবসা করে সমাজের মধ্যমণি হয়ে হয়ে বসে আছে তাদের কালো হাত আগে ভাঙতে হবে। পালের গোদাকে সোজা করতে না পারলে অন্য কেউ সোজা হবে না। একজন ধরা পড়বে তো শতেক উদয় হবে। বার বার হবে একই পরিণতি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button