যশোরে হারিয়ে যাওয়া নিশানের বাবার সাথে ‘অপহরণ নাটক’ উন্মোচন
মালিক উজ জামান, যশোর : অপহরণের নাটক সাজিয়ে ফেঁসে গেলেন যশোরের এক কলেজ ছাত্র। নিজেই নিখোঁজ হয়ে অপহরণের নাটক সাজান তাফহীমুল আলম নিশান নামে ওই কলেজছাত্র। এরপর মুক্তিপণ হিসেবে তিনি তার বাবার কাছে মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে তিন লাখ টাকা দাবি করেন। টাকাও পাঠান বাবা। কিন্তু একটি মোবাইল কোম্পানির এজেন্টের দোকানে সেই টাকা তুলতে গিয়ে কুষ্টিয়ায় র্যাবের কাছে ধরা পড়ে এই ছাত্র।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর এলাকায় একটি দোকান থেকে নিশানকে আটক করে র্যাব-১২। বিকেলে কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মো. ইলিয়াস খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিশান মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার মহেশপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। মাগুরা কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়েছেন তিনি। চাকরি সূত্রে যশোরে থাকেন তার বাবা। লেখাপড়ার পাশাপাশি নিশান যশোর শহরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবসা করেন। র্যাব জানায়, নিশান জুয়ায় আসক্ত। সম্প্রতি অনলাইন জুয়ায় তিনি বেশকিছু টাকা হেরে যান। অনলাইন জুয়ায় টাকা লগ্নি করার উদ্দেশে এমন নাটক সাজানোর কথা স্বীকার করেছেন তিনি। নিজের পাতা ফাঁদে নিজেই ফেঁসে গেছেন তিনি।
জানা গেছে, গত ২৩ অক্টোবর রাতে যশোর সদর উপজেলার পালবাড়ি এলাকা হতে আত্মগোপন করেন নিশান। এরপর রাত ১২টার দিকে নিশানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে তার বাবাকে মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হয়, তার ছেলে নিশানকে অপহরণ করা হয়েছে। ছেলেকে জীবিত ফিরে পেতে চাইলে তিন লাখ টাকা দিতে হবে। মুক্তিপণের টাকা পাঠানোর জন্য ভিকটিমের বাবাকে একটি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়া হয়। টাকা দিতে ব্যর্থ হলে পুত্রকে হত্যা করার হুমকিও দেওয়া হয়। পরদিন নিশানের বাবা যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। বাবার পাঠানো টাকা তুলতে নিজে আসে নিশান। এ সময় তাকে আটক করে র্যাব। নিখোঁজ হওয়ার আগের দিন বাবার থেকে ৫০ হাজার টাকা নেন নিশান। টাকাগুলো জুয়ায় হেরে বলেন হারিয়ে ফেলেছি। এরপর অপহরণের নাটক সাজান তিনি। আত্মগোপনে থাকার সময় তিনি কুষ্টিয়ার একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান নেন।
র্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মো. ইলিয়াস খান জানান, জিজ্ঞাসাবাদে নিশান এসব স্বীকার করেছেন। পরিবার থেকে অভিযোগ না দিলে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।