বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা এবং সিআরআইয়ের চেয়ারম্যান সজীব ওয়াজেদ জয়।
যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে বর্তমান বিশ্বে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা বাংলাদেশের তরুণরা সমাধান করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলেও নিজের প্রত্যয়ের কথা জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার সাভারের শেখ হাসিনা যুব উন্নয়ন ইন্সটিটিউটে সিআরআইয়ের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইয়াং বাংলার উদ্যোগে দেশের তরুণ সংগঠকদের ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আমার এই বিশ্বাসটাই আছে যে, বাংলার মানুষ, আমরা নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারি। আপনার জানেন যে, এখন সারাবিশ্বেই অনেক সংকট চলছে, যুদ্ধ চলছে, সমস্যা চলছে। এই একটি কোভিড মোকাবিলা করলাম আমরা দুবছর আগে। কোভিড যেতে না যেতে এখন যুদ্ধ, সন্ত্রাস, সবকিছুর দাম বেড়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক চাপ পড়ছে।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, অনেকেই এখন ভয়ে ভয়ে থাকে যে, এই সমস্যা? আমাদের দেশ কীভাবে মোকাবিলা করবে?
উত্তরে সজীব ওয়াজেদ বলেন, এই কথাটা কেন বলছি এখানে। আপনারাই (তরুণ উদ্যোক্তারা) সেই সমস্যা সমাধাণের উদাহরণ। দেখেন সমস্যার কোনো দিন শেষ থাকে না। এই ১৪ বছর যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, এরমধ্যে আমরা কী কী সমস্যা দেখেছি? প্রথমেই ছিল বিদ্যুতের সমস্যা। এই যে লোডশিডং হয় এটা আমরা কীভাবে সমাধান করবো? তারপর অর্থনীতির। এতো মানুষকে কীভাবে খাওয়ানো হবে। এই অর্থনীতিকে কীভাবে আগানো যায়? এগুলো আমরা সমাধান করে দেখিয়েছি।
২০২০ সালে সারাবিশ্বে কোভিড মহামারীর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারপর আসলো কোভিড। এটা নিয়ে সবাই ভয়ে ছিল। সবাই আতঙ্কে। সারাবিশ্বেই আতঙ্ক। তবে কী দেখা গেল? আমরা বাংলাদেশে, নিজেদের মতো করে, নিজেদের পরিকল্পনায়, এই কোভিডকে কিন্তু বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের তুলনায় এমনকি সবচেয়ে ধনীর দেশের চাইতেও ভালোভাবে মোকাবিলা করেছি।”
প্রধানমন্ত্রী তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, “আমার নিজেরই আনন্দ লাগে যে, যখন দেখি আমাদেরই দেশে আপনারা (তরুণরা) রোবটিক হাব বানাচ্ছেন, এটা অসাধারণ। আমাদের দেশ থেকে আপনারা ক্লাইমেট চেইঞ্জ-এর জন্য দাবি করতে ইউএন-এতে প্রতিনিধি পাঠাচ্ছেন, এটা অসাধারণ।
আপনারা সবাই অসাধারণ কাজ করছেন- মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আপনারা অসাধারণ। আমাদর দেশটি একটি অসাধারণ দেশ। নিজেরা লড়াই করে, রক্ত দিয়ে এই দেশকে আমরা স্বাধীন করেছি। এই ১৬ কোটি মানুষকে আমরা খাওয়াতে সক্ষম হয়েছি। এই ১৬ কোটি মানুষের দেশকে ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে দরিদ্র থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করেছি।”
তরুণরা দেশের ভবিষ্যৎ উল্লেখ করে সজীব ওয়াজেদ বলেন, “আর এই তরুণ-তরুণীরা, এই ইয়াং বাংলার পুরস্কারজয়ীরা- আপনারাই হচ্ছেন ভবিষ্যৎ। আপনারা তরুণরাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। আপনারাই বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। আমার আশা আছে, বিশ্বাস আছে, আপনারাই বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশ থেকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করবেন। আর এটা আমাদের জীবনের মধ্যেই হবে।
আপনারা তরুণরা ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে গড়ে তুলবেন, এগিয়ে নিয়ে যাবেন- এ আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “আজকে একটি শব্দেই অনুভূতি জানাতে চাই যে, ’অসাধারণ’। আজকে যারা পুরস্কৃত হয়েছে শুধু তারাই নন, যারা ফাইনালিস্ট এবং এই যে ৬০০ জন অংশ নিয়েছেন আপনারা সকলেই আজকে বিজয়ী।
“নিঃসন্দেহে আপনারা দেশের ও দেশের মানুষের জন্য যেভাবে সেবা করছেন এটা আমাদের সকল নাগরিকদের এবং বিশ্বের জন্য একটা উদাহরণ। আপনাদের মত তরুণ-তরুণীরা নিজের প্রচেষ্টায় কারো কাছে হাত না পেতে নিজের মেধায়, নিজের চিন্তাধারায় কাজ শুরু করে দিয়েছেন, আপনারা কারও জন্য বসে নেই; এটাই হলো আমাদের চেতনা। এটাই আমাদের বিশ্বাস।”
বিকাল ৩টা জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে ষষ্ঠবারের মত জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতেই ইয়াং বাংলার কার্যক্রম নিয়ে একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়। এবারের পুরস্কারের জন্য প্রায় ৬ শতাধিক প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছিল। তাদের মধ্য থেকে ২৮ জনকে চূড়ান্ত পর্বের জন্য বাছাই করা হয়। ৫টি ক্যাটগরিতে পুরস্কৃত করা হয় ১০ প্রতিষ্ঠানকে। এছাড়া দুইজনকে দেয়া হয় আজীবন সন্মাননা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও সিআরআইয়ের ট্রাস্ট্রি নসরুল হামিদ বিপু। তিনি বলেন, দেখতে দেখতে ছয় বছর কেটে গেল। আজকে ইয়াং বাংলার সদস্য সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখ।
তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “দূর দূরান্তে থেকে তারা নিজেদের প্রচেষ্টায় অনেক কিছু করেছেন। জুরি বোর্ডে উপস্থিতি ছিলেন সমাজের বিশিষ্ঠ ব্যক্তিত্বরা। সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।”