স্পট মনিরামপুর উপজেলার ঢাকুরিয়া গ্রাম বৃদ্ধ ও রোগগ্রস্থ জব্বার আলী গাজী কে বাদী ও স্থানীয় নেতার যোগসাজশে মামলায় ফাঁসিয়ে দিল পুলিশ
মালিক উজ জামান : আব্দুল জব্বার আলী গাজী (৭২)। বাড়ি ঢাকুরিয়া পশ্চিম পাড়া। নানা রোগে রোগগ্রস্থ একজন মুরুব্বী। এবার তাকে মামলার স্বাদ দিল মনিরামপুর থানা পুলিশ। গত তারিখে তাকে এস আই (নিঃ) মলয় বসু তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে থানায় নিয়ে বসিয়ে রাখে। পরদিন তাকে মামলায় আসামী দেখিয়ে চালান দেয়। সারা জীবনে এটিই এই বর্ষীয়ান মানুষটির প্রথম পুলিশ কতৃক হয়রানি ও মামলার ঘটনা। ভূক্তভোগী পরিবার মামলাটির সঠিক বা যথাযথ তদন্তের জন্য প্রশাসন তথা পুলিশের উর্দ্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
হোসেন আলী গাজীর পুত্র আব্দুল জব্বার আলী গাজী রাজমিস্ত্রী ছিলেন। এখন বয়স ও রোগগ্রস্থ হয়ে বাড়িতে থাকেন। তার হার্টের সমস্যা, মাজায় সমস্যা। তার বুকে চর্বি জমেছে। এখন তিনি কোন কাজই করতে পারেননা। অথচ তাকেই কিনা পুলিশ মামলায় চালান দিয়ে আদালতে পেশ করে বুড়ো বয়সে জেল খাটিয়ে দিলেন। অথচ জব্বার আলী গাজীর শ্যালক পুলিশের একজন কর্মকর্তা। তার শশুরবাড়ী গোপালগঞ্জ কাশিয়ানী। তার চাচা শশুরও একজন সরকারি বিশেষ বাহিনীর একজন কর্মকর্তা। কিন্ত এই সাদাসিদে মানুষটি জেল খেটে হতবাক হয়ে পড়েছেন। তিনি ও তার পরিবার খুবই ভেঙ্গে পড়েছেন।
গ্রামবাসী জানায়, একই গ্রামের মৃত বদিউজ্জামানের পুত্র ইজ্জত আলী (৫০) বাদী হয়ে মনিরামপুর থানায় একটি মামলা করেন। যার নম্বর ১৩/১৮৫, তাং-১৯/০৮/২০২২। ধারা ৪৪৮/৩০৭/৩২৬ পেনাল কোড ১৮৬০। তাদের পাশাপাশি বাড়ি। এরা গ্রামের নিরীহ আওয়ামীলীগ কর্মী সমর্থক সাধারন মানুষ। বাদি টিপু সুলতান গ্রুপের ঢাকুরিয়ার রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী মহি আজমের অনুসারী। এ কারনে ইজ্জত আলী নিরীহ গ্রামবাসীকে প্রায়ই ফাঁসিয়ে দেয়। মনিরামপুর থানা থেকে একটু দুরে বলে তৃনমূলের এই গ্রামের খবর কেউ রাখে না সেভাবে। এটিকে পুঁজি করে মহি আজম ও ইজ্জত আলী। মহি আজম মনিরামপুর উপজেলার ৪নং ঢাকুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ। তার অনুসারী ইজ্জত আলী টার্গেট করে লোকজনকে মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে অর্থ হাতস্থ করে বলে জোর অভিযোগ রয়েছে। সুযোগ পেয়ে এরা আব্দুল জব্বার গাজী কে এই মামলায় ষড়যন্ত্রমূলক ফাঁসিয়ে দিয়েছে ঐ অপচক্রটির সদস্যরা। একই মামলার অপর আসামী হচ্ছেন, একই গ্রামের মৃত আনছার গাজীর পুত্র শহিদুল ইসলাম (৫৯)। শহিদুল ইসলাম মোটর সাইকেল ভাড়া চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। গ্রামে তার কারো সাথে ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই।
গ্রামবাসী আরো জানায় ঐ মারামারির প্রকৃত দোষী গ্রামের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আকবরের পুত্র শাওন ওরফে ইলিয়াস গং। তার চাচাতো ভাই শিমুলের নামেও একাধিক মামলা বর্তমান। এই শাওন ওরফে ইলিয়াস এসব অপকর্মে জড়িত। তার সাথে কয়েকজন সাঙ্গ পাঙ্গ রয়েছে। তবে তারা মনিরামপুর থানা পুলিশের মোস্ট ওয়ান্টেড পার্সন। তারা বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকে। মাঝে মধ্যে গ্রামে এসে নানা অপকর্ম করে আবার গা ঢাকা দেয়। একারনে পুলিশ তাদের খুজে পায় না। শাওন ওরফে ইলিয়াস এখন বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। জনশ্রুতি রয়েছে তার চাচাতো ভাই শিমুলও বিদেশে চলে গেছে। তবে আদতে তাদের অবস্থান সম্পর্কে গ্রামবাসী বেশি কিছু জানেনা।
আব্দুল জব্বার আলী গাজীর একমাত্র পুত্র ঠিকাদার মোস্তাক হোসেন জানান তিনি ব্যবসা করেন। তার পিতা শারিরীকভাবে গুরুতর অসুস্থ। এ কারনে কোন কাজ কর্ম করতে পারেননা। তিনি বাড়িতেই থাকেন। তবে এবার একটি মহল ও পুলিশ তাকে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে। এতে আমরা পারিবারিকভাবে খুবই আপসেট হয়ে পড়েছি। তাছাড়া বাদী ইজ্জত আলী আব্দুল জব্বার আলী গাজীকে মামলায় আসামী হিসাবে চালান সম্পর্কে বলেন, তার সম্পর্কে আমার কোন ক্ষোভ নেই।
মনিরামপুর থানার এস আই (নিঃ) মলয় বসু জানান, তিনি উপরের দুই জন পুলিশ কর্মকর্তা সার্কেল এএসপি ও থানা ইনচার্জের নির্দেশে আব্দুল জব্বার গাজীকে মামলায় অন্তর্ভূক্ত আসামী করেছেন। আব্দুল জব্বার আলী গাজীর সাথে তার পরিচয় নেই। বা তার সাথে কোন ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। তিনি এসব বিষয়ে খুব বেশি কিছু বলতে পারবেন না।