যশোরাঞ্চলে ১৫০ কোটি টাকার স্বর্ণ জব্দ
মালিক উজ জামান, যশোর : এক বছরে যশোরাঞ্চলের বিভিন্ন সীমান্তে চোরাচালান সিন্ডিকেটে অভিযান চালিয়ে ১৮৫ কেজি স্বর্ণ জব্দ করে রেকর্ড করেছে বিজিবিসহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। উদ্ধার হওয়া ওই স্বর্ণের আনুমানিক মূল্য দেড়শো কোটি টাকা। চোরাকারবারী আটক ও স্বর্ণ উদ্ধার সাফল্যে তালিকায় প্রথম যশোর ৪৯ বিজিবি, দ্বিতীয় অবস্থানে ২১ খুলনা বিজিবি ব্যাটালিয়ন ও তৃতীয় অবস্থানে আছে যশোর জেলা পুলিশ।
উদ্ধারের বাইরে সীমান্তের বিভিন্ন চোরাচালানী ঘাট ও আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে দীর্ঘদিন বিপুল পরিমান স্বর্ণের বার ভারতে পাচার করেছে এক শ্রেণির চোরাকারবারী ও বহণকারীরা। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, দিনের পর দিন বছরের পর বছর এসব অভিযানে শুধু বহনকারী শ্রমিকই আটক হয়েছে। এবছরও একই অবস্থা। অনেকগুলো অভিযানে শুধু বহণকারী শ্রমিকই আটক হয়েছে। আর আটক এড়িয়ে ধরা ছোঁয়ার বাইরে আছে গড ফাদার রাঘব-বোয়ালরা। সোনা উদ্ধার ও বহনকারী আটকের পর মামলা হলেও পরবর্তী তদন্ত কার্যক্রম দূর্বল হওয়ায় চালানগুলোর মূল হোতাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়নি। বিভিন্ন সূত্র থেকে বলা হয়েছে, কেনার ক্ষেত্রে ভারতে স্বর্ণের উপর শুল্ক বেশি হওয়া এবং যশোরের বেনাপোল থেকে মাত্র ৮৫ কিলোমিটার যাতায়াত দূরত্ব সুবিধা হওয়ায় স্বর্ণ চোরাচালানীরা এই রুট পছন্দ ও ব্যবহার করছে। বেনাপোল শুল্ক ও গোয়েন্দা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা চোরাকারবারীদের বিভিন্ন পাচার কৌশল জেনে ফেলায় তারা কৌশল পরিবর্তনও করেছে বিভিন্ন চালানে।
কয়েকটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিজিবি ও যশোরের কয়েকটি থানা সূত্রে তথ্য মিলেছে, বাংলাদেশের ৩০ টি জেলার সাথে সীমান্ত রয়েছে। সীমান্ত জেলা গুলোর মধ্যে রয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ টি। সেগুলো হচ্ছে জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা। চট্টগ্রাম বিভাগের ৬ টি সীমান্ত জেলা রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, ফেনী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। রাজশাহী বিভাগের ১০ টি জেলা সীমান্তের সাথে যুক্ত রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, নওগাঁ, নবাবগঞ্জ ও রাজশাহী। এছাড়া খুলনা বিভাগের ৬ টি জেলার মধ্যে সীমান্ত এলাকা রয়েছে মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ঝিনাইদহ, যশোর ও সাতক্ষীরা। এসব সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন সোনার বড় বড় চালান পাচার হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। পাচারের সময় চলমান বছরে যশোরের সীমান্তগুলো থেকে যে সামান্য পরিমাণ সোনা ধরা পড়েছে তার ওজন ১৮৫ কেজি ৭৩৯ গ্রাম। ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে আটক হয়েছে ৫৫ জন স্বর্ণ পাচারকারী।
১ জানুয়ারি ২০২২ থেকে ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত যশোর, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, খুলনার অধিভুক্ত সীমান্তগুলো দিয়ে ভারতে পাচারকালে এই বিপুল পরিমাণের স্বর্ণ জব্দ করেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা। এর মধ্যে কয়েকটি চালান জব্দ করেছে যশোর জেলা পুলিশ। সোনা ও স্বর্ণের বার জব্দের তালিকায় সাফল্যের শীর্ষে রয়েছে যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটেলিয়ন। এ ব্যাটেলিয়ানের অধিভুক্ত সীমান্তগুলো দিয়ে জব্দকৃত স্বর্ণের পরিমাণ ৭৯ কেজি ৪৭৩ গ্রাম। যার বাজার মূল্য ৬৬ কোটি ৮৭ লাখ ৩৬ হাজার ৭শ’ টাকা। এসব স্বর্ণ পাচারের সাথে জড়িত থাকায় বিজিবি সদস্যরা ১৬ জনকে আটক করেছেন। আর উপস্থিতি বুঝতে পেরে তিনজন স্বর্ণ পাচারকারী পালিয়ে যাওয়ার তথ্য মিলেছে। বিজিবি সদস্যরা পলাতকদের বিরুদ্ধেও মামলা দিয়েছে থানায়। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে খুলনা বিজিবি ব্যাটেলিয়ন। এই ব্যাটেলিয়ানের অধিভুক্ত সীমান্তগুলো দিয়ে ভারতে পাচারের সময় জব্দ করে ৪২ কেজি ৪০৭ গ্রাম স্বর্ণ। এসব স্বর্ণের বাজার মূল্য ৩০ কোটি ২৯ লাখ ৮২ হাজার ১৭৮ টাকা। এসব স্বর্ণ পাচারের সাথে জড়িত থাকায় বিজিবি সদস্যরা ১৮ জন পাচারকারীকে আটক করেন। একই সময়ের মধ্যে সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের অধিভুক্ত সীমান্ত গুলো দিয়ে ৪ কেজি ৪৫১ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব স্বর্ণের বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৯ টাকা। এসব স্বর্ণ পাচারের সাথে জড়িত থাকার দায়ে বিজিবি সদস্যরা ৫ জন পাচারকারীকে আটক করতে সক্ষম হয়।
একই সময়ের মধ্যে ঝিনাইদহর মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটেলিয়ানের অধিভুক্ত সীমান্তগুলো দিয়ে জব্দ করা হয় ৩৮ কেজি ৪০ গ্রাম স্বর্ণ। যার বাজার মূল্য ২৬ কোটি ২৯ লাখ ১৪ হাজার ৪০১ টাকা। এসব স্বর্ণ পাচারের দায়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা আটক করেন ৮ জন পাচারকারীকে।
যশোরের শার্শা থানা ও যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখা যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ১৭ কেজি স্বর্ণসহ ৪জনকে আটক করেন। ১ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে বারোটার দিকে শার্শা উপজেলার সাতমাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৮ কোটি টাকার অধিক মূল্যের ৯ কেজি ৭৫৮ গ্রাম ওজনের ৩০টি স্বর্ণের বারসহ দু’জনকে আটক করে। এ সময়ে স্বর্ণ চোরাকারবারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হন। স্বর্ণ পাচারের সাথে জড়িত থাকার দায়ে পুলিশ কুমিল্লার হোমনা ও দাউদকান্দি উপজেলার রবিন (৩৫) ও আবুল কাশেম (৩৫) নামে দুই পাচারকারীকে আটক করে।
এছাড়া বেনাপোল থেকে দুই কেজি সোনাসহ একজন ভারতীয় ট্রাক চালককে আটক করা হয়েছে। ১৯ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রমকালে বিএসএফ ভারতীয় খালি ট্রাকটি তল্লাশি করে ট্রাকের নিচে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় চালক সাইফুল মন্ডল (৩৫) কে আটক করা হয়। ওই ট্রাকটি বেনাপোলে মালামাল আনলোড করে ভারতের পেট্রাপোল যাচ্ছিল। চেকপোস্টের কাছে পৌঁছালে ট্রাকটি থামিয়ে তল্লাশি করে ওই সোনা উদ্ধার করা হয়। চালক সাইফুল মন্ডলকে আটক করা হয়।
গত ৫ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া সপ্তাহব্যাপী বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে ৭ নভেম্বর গোপন সোর্সের মাধ্যমে তথ্য পেয়ে শার্শার গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা লক্ষণপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। ওই দিন দুপুর দুটোয় লক্ষণপুর আন্দলপোতা বেদেপুকুর এলাকা থেকে আটক করা হয় শার্শার টেংরালী ভেরদদারী পাড়ারমৃত আবু জাফর মল্লিকের ছেলে নাইম মল্লিক (২১) ও বহিলাপোতার টিলাপাড়ার শাহাজান মিয়ার ছেলে আজহারুল ইসলামকে (২২)। তাদের দখল থেকে ৬২ পিস বিভিন্ন আকারের ও ওজনের স্বর্ণের বার উদ্ধার হয়। যার ওজন ৭ কেজি ১২ গ্রাম। মূল্য অনুমানিক ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সর্বশেষ ২৪ ডিসেম্বর খুলনা ২১ বিজিবি বেনাপোলের পুটখালী সীমান্ত থেকে ১ কেজি ৯শ’৮৩ গ্রাম ওজনের ১৭টি স্বর্ণবার উদ্ধার হয়। মোটরসাইকেলসহ আটক হয় দুজন। আর পালিয়ে যায় দুজন।
সোনার চালানসহ আটককৃতদের অনেককে স্বর্ণমানব বলা হচ্ছে। গত এক বছরে বিশাল পরিমাণ স্বর্ণ উদ্ধার ও ৫৫ জন আটক হলেও ওই চোরাকারবারী চক্রের পালের গোদা গড ফাদাররা চলছে আটক এড়িয়ে। আর বহনকারী হিসেবে আটক হয়েছে চেকপোস্টের বিভিন্ন এন্টারপ্রাইজের কর্মী, পরিবহণ মালিক কর্মচারী, সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্মচারী, কৃষক, পাসপোর্ট দালাল, চেকপোস্টের লেবার ও বেকাররা। উদ্ধার ও আটককারী ইউনিট ও সংস্থা সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দিলেও পরবর্তী পুলিশি তদন্ত দূর্বল হয়েছে। তদন্তের গভীরে না গিয়ে শুধু আটককৃতদের নাম ঠিকানা লিখে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। দফায় দফায় রিমান্ডে এনে রাজধানী কিংবা দেশের বিভিন্ন জেলার সোনা চোরাকারবারীদের মুখোশ উন্মোচন করা হচ্ছে না। তাদের সাথে বহনের চুক্তি করা শ্রমিকরাই আটক হচ্ছে। যে কারণে নামকাওয়াস্তে তদন্ত করে বাদী আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার তথ্য দিয়ে তদন্ত সেরে ফেলা হয়েছে। অনেক মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। যে কারণে রাঘববোয়াল গডফাদাররা আটকের বাইরে রয়ে যাচ্ছে। এ বছরের বেলায়ও তাই হয়েছে। তবে সোনা উদ্ধারে রেকর্ড তৈরি করেছে বিগত বছরগুলোর তুলনায়।
এ ব্যাপারে ৭ কেজি সোনা চোরাচালান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শার্শা থানার এসআই সুমন সরকার জানান, তার কাছে থাকা মামলাটি যতœসহকারে তদন্ত হচ্ছে। ওই সিন্ডিকেটে জড়িত বলে আরো অনেকের নাম এসেছে, যা যাচাই বাছাই চলছে। একটি সুষ্ঠু তদন্ত করে গডফাদারের নাম বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং দ্রুত চার্জশিট দেয়া হবে।
সোনা চোরাচালানের বিষয়ে খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইঞ্জিনিয়ার তানভীর রহমান জানান, সীমান্তে চোরাচালান রোধে বিজিবি সব সময়ই কাজ করে যাচ্ছে। বিজিবি অভিযান চালিয়ে সোনা জব্দ করে ও আসামির বিরুদ্ধে মামলা প্রদান করে। এরপর এসব মামলার তদন্তভার পুলিশের উপর বর্তায়। নেপথ্যে থাকা চোরাকারবারীকে সামনে আনাবে তদন্তকারী ইউনিট। এরপরও বিজিবি সজাগ ও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
আটক ও উদ্ধারে বেশি সাফল্য দেখানো যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সায়েদ মিনহাজ সিদ্দিকী জানান, তিনি ব্যাটালিয়নে যোগদানের পর থেকে সীমান্ত জুড়ে চোরাচালান রোধে ব্যাপক তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। যে কারণে এক বছরে সীমান্ত জুড়ে অভিযানে বিপুল পরিমাণ সোনা জব্দ করা সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে ১৬ নভেম্বর বেনাপোলের আমড়াখালিতে তল্লাশি চালিয়ে সাড়ে ১৫ কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে ১৬ কেজি স্বর্ণের চালান উদ্ধার ঘটনা ঈর্ষণীয়।
৫৮ বিজিবি ঝিনাইদহ মহেশপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেপ্টেন্যান্ট কর্নেল শাহীন আজাদ জানান, বিজিবি সদস্যরা সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান রোধে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। চৌগাছার যাদবপুর বড়বাড়ি গ্রামের রাস্তায় একটি মোটরসাইকেলসহ ইমাম হোসেন (৩০) নামে এক পাচারকারীকে প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের ৩ কেজি ৭১৯ গ্রাম ওজনের ৩২ পিস স্বর্ণের বারসহ উদ্ধার সাফল্যের একটি অংশ।
সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবির অধিনায়ক লেপ্টেন্যান্ট কর্নেল মেজর রেজা আহমেদ জানান, চোরাচালান রোধে সাতক্ষীরা সীমান্ত জুড়ে বিজিবি সার্বক্ষনিক সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। যে কারণে চোরাকারবারীরা এখন আর সাতক্ষীরায় সীমান্ত রুট ব্যবহার করতে গেলেই ধরাশায়ী হচ্ছে। এ অঞ্চলে সোনা জব্দের হার অনেকাংশ কমেছে। সর্বশেষ ১ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা কলারোয়া কেড়াগাছি হরিদাস ঠাকুর আশ্রমের সামনে অভিযান চালিয়ে ১ কেজি ৮৬৫ গ্রাম ওজনের ১৬টি স্বর্ণের বারসহ আব্দুল হামিদের ছেলে ইজিবাইক চালক অহিদুজ্জামান (৩৫) কে আটক করা হয়। জব্দকৃত স্বর্ণের বাজার মূল্য ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এরকম আরো অনেক চালান জব্দ করা হয়েছে। বিজিপি সাতক্ষীরা কাজ করছে, দেশসেবায় নিয়োজিত আছে।
দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়ন কমান্ডার অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কে এম আজাদ, বিপিএম (সেবা), পিপিএম (সেবা), পিএসসি জানান, ২০ জানুয়ারি ২০১৩ সালে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের রিজওয়ান কমান্ডারের সদর দপ্তর স্থাপনের ফলে সীমান্ত পর্যবেক্ষণ অনেকটা বেড়েছে। যশোর রিজিয়নের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত। পূর্ব ও উত্তরে রয়েছে পদ্মা নদী। এই অঞ্চলটি ৬টি সীমান্ত জেলা নিয়ে অবস্থিত। সাতক্ষীরা, যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়া। এছাড়াও প্রশাসনিক জেলা হিসেবে খুলনা, বাগেরহাট, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, মাগুরা, রাজবাড়ী জেলা এবং সমগ্র বরিশাল বিভাগ এই অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকার আওতাধীন (মোট জেলা ১৮)। এই অঞ্চলে দুটি সেক্টর রয়েছে। সীমান্ত অঞ্চল সাতক্ষীরা, যশোর এবং ঝিনাইদহ জেলার অংশ খুলনা সেক্টরে এবং কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা এবং ঝিনাইদহ জেলা রয়েছে কুষ্টিয়া সেক্টরের অধীনে। এই অঞ্চলে সীমান্তের বেল্টের দৈর্ঘ্য ৬৪৪ কিলোমিটার যার মধ্যে আছে ২৫৯ কিলোমিটার নদী সীমানা। এ অঞ্চলে রিজিয়ন কমান্ডারের সদর দপ্তর থাকায় সীমান্তগুলো দিয়ে সোনা পাচারের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পাচার অনেকাংশে বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে। যেসব পাচারকারী এসব সীমান্তগুলো দিয়ে ভারতে বা ভারত থেকে বাংলাদেশে সোনা ও মাদকদ্রব্য পাচারের চেষ্টা করছে সেগুলো অহরহ ধরা পড়ছে। এছাড়া নেপথ্যে থাকা রাঘববোয়াল গডফাদার শনাক্তে প্রচেষ্টা চলছে।