টংকনেত্রী কুমুদিনী হাজংকে দেখতে গেলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি
ব্রিটিশ শাসন ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ টংক প্রথাবিরোধী আন্দোলনের সংগ্রামী মুখ কুমুদিনী হাজংকে দেখতে গেলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন।
আজ শনিবার নেত্রকোনার দুর্গাপুর সীমান্তবর্তী বহেরাতলীর গ্রামের বাড়িতে কুমুদিনী হাজংয়ের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেন। এসময় ফরিদা ইয়াসমিন তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। তিনি তাকে শীতবস্ত্র ও নগদ আর্থিক সহায়তাও প্রদান করেন।
এর আগে কুমুদিনী হাজংয়ের বহেরাতলীল গ্রামের বাড়িতে ফরিদা ইয়াসমিন পৌঁছালে তাকে দেখে আঙিনায় রোদ পোহাতে থাকা কুমুদিনী উঠে বসেন। কেমন আছেন, জানতে চাইলে হাজং ভাষায় ফরিদা ইয়াসমিনকে জবাব দেন তিনি। দুজনের মধ্যে কথোপকথন হয়। এসময় অতীত স্মৃতিকথা মন্থন করেন কুমুদিনী।
প্রসঙ্গত, বৃহত্তর ময়মনসিংহের সুসং জমিদারি এলাকায় টংক প্রথার প্রচলন ছিল। ফসল হোক বা না হোক, নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান খাজনা হিসেবে জমিদারকে দিতে হত তখন। ১৯৩৭ সালে শোষিত কৃষকেরা এ প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন, যা টংক আন্দোলন নামে পরিচিত। নেত্রকোনার দুর্গাপুর সীমান্তবর্তী বহেরাতলীর গ্রামের কুমুদিনী হাজং টংক আন্দোলনের একজন অন্যতম নেত্রী।
সমাজসেবায় অবদানের জন্য ২০১৯ সালে কুমুদিনী হাজংকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেয় বাংলা একাডেমি। এ ছাড়া তিনি অনন্যা শীর্ষদশ (২০০৩), ড. আহমদ শরীফ স্মারক (২০০৫), কমরেড মণি সিংহ স্মৃতি পদক (২০০৭), সিধু-কানহু-ফুলমণি পদক (২০১০), জলসিঁড়ি (২০১৪) ও হাজং জাতীয় পুরস্কার (২০১৮) পেয়েছেন।
তার ছেলে অর্জুন বলেন, অনেক জ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবী তার মাকে সম্মান দিয়েছেন, খোঁজ নেন। এতে তারা খুশি।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালে কুমুদিনীর স্বামী লংকেশ্বরের মৃত্যু হয়। তাদের তিন ছেলে, দুই মেয়ে। বড় ছেলে লমিন হাজং থাকেন একটু দূরে, বিজয়পুরের গুচ্ছগ্রামে। ছোট ছেলে সহদেব হাজং মুক্তিযুদ্ধের পর ভারতে চলে গেছেন। বড় মেয়ে মেনজুলি হাজং মানিকগঞ্জে ও ছোট মেয়ে অঞ্জুলী হাজং থাকেন ঢাকায়।