ইউরোপের দেশ গ্রিসে বসবাসরত অনিয়মিত বাংলাদেশিদের বৈধ হওয়ার সুযোগ তৈরি হলেও নানা শর্ত থাকায় শঙ্কায় রয়েছেন প্রবাসীরা। গ্রিক সরকার কর্তৃক প্রকাশিত গেজেটে উল্লেখ রয়েছে, এসব অভিবাসীদের সিজনাল কর্মী হিসেবে ৫ বছরের জন্য বৈধতা দেওয়া হবে, পরে ফিরে যেতে হবে দেশে। অপরদিকে নিয়মিতভাবেই চলছে অনিয়মিতদের ধরার অভিযান। নিবন্ধন করতে যাওয়ার পথেও আটক হচ্ছেন অনেকেই। এছাড়াও বিভিন্ন ক্যাম্পে বন্দী থাকা বাংলাদেশিরাও জানাচ্ছেন মুক্তির আকুতি।
আইনের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে কথা হয় গ্রিসের মানবাধিকার ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ভাসিলিস কেরাসিওটিসের সাথে।
তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় বৈধ হওয়া বাংলাদেশিরা সিজনাল ভিসার চুক্তি অনুযায়ী ৯ মাস গ্রিসে থাকতে বা কাজ করতে পারবেন, গ্রিক-বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী ৫ বছর মেয়াদের পর আবারো নবায়ন করার সুযোগ থাকতে পারে, তবে শর্ত সাপেক্ষে। কিন্তু এখনই তা সঠিক করে কিছু বলা যাচ্ছে না।’
ভাসিলিস বলেন, ‘অনলাইন দরখাস্ত করার ঠিক কতদিন পর ফিঙ্গারের জন্য ডাকতে পারে, এর জবাব সঠিকভাবে কারো জানা নেই। কারণ সরকারি অফিসগুলোতে কাজের অনেক চাপ এবং সেই তুলনায় জনবল অনেক কম। তবে জমা দেয়ার পর থেকে ব্লে-বেভেয়সী নিয়ে আফিমি-আমকা-ইকা তৈরি করে কাজ করাসহ নিজ দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন।’
আইনজীবী ভাসিলিস কেরাসিওটিস এই আইনের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে বলেন, ‘যে কোনো পরিস্থিতিতে, এমনকি পূর্বে যদি বৈধতার আইনে কোনো দরখাস্তের আর্জি বাতিলও হয়ে যায়, তারপরও যেকোনো বাংলাদেশি বাংলাদেশ এবং গ্রিসের মৌসুমী শ্রমিকের আইন অনুযায়ী বৈধতার জন্য দরখাস্ত করতে পারবেন। বৈধ কাগজপত্রহীন বাংলাদেশিদের জন্য এটা একটা শিথিলযোগ্য আইন। ১৮০ দিন বা ৬ মাস সময়ের মধ্যে এই দরখাস্ত জমা করতে হবে, গ্রিক সরকার মনে করলে এর সময়সীমা বাড়াতেও পারে। তবে সরকারি ঘোষণার দিন থেকে বর্তমান সময় ৬ মাস।’
অপরদিকে কয়েক শতাধিক বাংলাদেশি গ্রিসের বিভিন্ন ক্যাম্পে বন্দী রয়েছেন। তারা সেখানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এবং মুক্ত করার জন্য আকুতি জানাচ্ছেন। তাদের মুক্তি ও বৈধকরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে আইনজীবী ভাসিলিস কেরাসিওটিস বলেন, ‘ক্যাম্পে থাকা লোকজন ক্যাম্প থেকে বের হওয়ার পর দরখাস্ত করতে পারবেন। আমার ধারণা পুলিশও বর্তমান আইন সম্পর্কে অবহিত আছে এবং তারাও চেষ্টা করছে আইনিভাবে বাংলাদেশিদের যত তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেয়ার জন্য, যেন সকলেই চুক্তি অনুযায়ী এই বৈধতা নিতে পারেন। এছাড়াও ক্যাম্পের ভেতর থেকে যদি দূতাবাসে নিবন্ধন করতে সক্ষম হয়, তাদের জন্য পথ খোলা থাকবে।’
এছাড়া আইনজীবীর মাধ্যমে দূতাবাসে নিবন্ধন করে পরে কোনো চাকরিদাতার ইচ্ছাপত্র সংগ্রহ করেও মুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় কয়েকজন বৈধ হয়ে মুক্ত হয়েছেন বলেও জানা গেছে। এদিকে ক্যাম্পের ভেতর থেকে নিবন্ধন করার জন্যও উদ্যোগ নিচ্ছে দূতাবাস।