বিশেষ খবরশিক্ষা

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ সমাবর্তন সম্পন্ন


মালিক উজ জামান, যশোর : যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ সমাবর্তন-২০২৩ সম্পন্ন হয়েছে। এই ৪র্থ সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রপতি চ্যান্সেলর প্রতিনিধি সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ডা: দিপু মনি বলেন, সকল শিক্ষার্থীকে সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে দেশের সেরা বিজ্ঞান বিদ্যাপীঠ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ যথাযথ উদ্যোগ গ্রহন করবে অবশ্যই। কেননা ২০৪১ সালে সরকারন যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে দূড় প্রতিজ্ঞ দক্ষ ও সুনাগরিক ছাড়া তা কখনোই সম্ভব নয়। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ জনশক্তি হিসাবে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতির মেধাবী শিক্ষার্থীদের তৈরি করা হচ্ছে। এদিন শিক্ষায় কৃতিত্বের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বর্ণ পদক ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম পিএইচডি ডিগ্রী অর্জনকারী হলেন নাইজেরিয়ার নাগরিক রায়ান ক্রিস্টোফার রুবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর প্রতিনিধি শিক্ষামন্ত্রী ডা: দিপু মনিকে ক্রেস্ট উপহার দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ডা: মো: আনোয়ার হোসেন। শিক্ষামন্ত্রী বিজ্ঞানী ডা: হাসিনা খান ও ভিসিকে ক্রেস্ট উপহার দেন।
শিক্ষা মন্ত্রী ডা: দিপু মনি আরো বলেন, একটি মডেল রাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজন স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট অর্থনীতি। একই সাথে তার পরিপূরক হিসাবে প্রয়োজন হবে দক্ষ উদ্যোক্তা। দেশকে পরিবর্তন করতে চাইলে শিক্ষায় যথেষ্ট উপযুক্ত হতে হবে শিক্ষার্থীকে। এজন্য কমুনিকেশন গ্যাপ থাকলে চলবে না। শিক্ষা মন্ত্রী ৪র্থ সমাবর্তনে সভাপতি হিসাবে বক্তব্য রাখেন।
সভাপতি আরো বলেন, উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়নে দেশে শিক্ষা কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে। এখন সহমর্মিতা, দক্ষতা, যোগ্যতা অর্জনের শিক্ষায় জাতি আত্মমর্যাদাশীল একটি টেকসই সকল নাগরিকের জন্য মঙ্গলজনক একটি সরকার পাবে। দক্ষতা অর্জন করতে না পারলে জীবনে ছন্দপতন হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার সহস্র বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর চাওয়া পাওয়ার আদলে একটি সুন্দর ও সার্বজনীন স্মার্ট রাষ্ট্র গড়তে অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই লক্ষ্য পূরনেই সরকার কাজ করছে। তিনি আরো বলেন নবীন শিক্ষার্থীদের সফলতায় ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত ও স্মার্ট রাষ্ট্র।
শনিবার সকালে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ সমাবর্তন যাত্রা শুরু করে। এরপর প্রধান মসজিদের মোয়াজ্জিন মো: রুহুল আমীনের কোরআন তেলাওয়াত করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রভাষক তাপস কুমার চক্রবর্তী গীতা পাঠ করেন। বাইবেল পাঠ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র অপূর্ব সরদার অপু এবং ত্রিপিঠক পাঠ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শুভতি রতœ চাকমা।
শিক্ষামন্ত্রী ডা: দিপু মনি এরপর ৪র্থ সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষনা করেন।
৪র্থ সমাবর্তনে প্রধান বক্তা ছিলেন পাট ও ইলিশের জন্ম রহস্য উন্মোচনকারী আলোচিত একুশে পদক প্রাপ্ত বিজ্ঞানী ডা: হাসিনা খান। তিনি বলেন, মানুষকে পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে হয়। উচ্চতর দক্ষতার সাথে কাজ করতে টিম ওয়ার্ক প্রয়োজন। এজন্য সকলকে ইন্দ্রিয় খোলা রাখতে হয়। কমুনিকেশন গ্যাপ থাকা চলবে না। সর্বদা জীবনে ভারসাম্য বজায়ে রাখতে হবে। তিনি আরো বলেন বায়োলজি আমাকে জীবনে নির্লোভ ও নির্দোষ থাকতে শিখিয়েছে। একটি সুন্দর দেহের জন্য যেমন কোষ টু কোষ সমন্বয় থাকতে হবে তেমনি জীবনেও সমাজের উন্নয়নে কাজের সমন্বয় থাকতে হবে।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো: আনোয়ার হোসেন স্বাগতিক বক্তব্য প্রদান করেন।
স্বর্ণপদক ও সনদপত্র বিতরণ পর্ব পরিচালনা করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আহসান হাবিব। আরো বক্তব্য রাখেন সকল বিভাগীয় ডীন। উপস্থিত ছিলেন, পাবনা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক হাফিজা খানম, ড. এইচ এম জাকির হোসেন, বিলকিস ফেরদৌস, যশোর সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ প্রমুখ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম পিএইচডি ডিগ্রী অর্জনকারী হলেন নাইজেরিয়ার নাগরিক রায়ান ক্রিস্টোফার রুবেন। তার পক্ষে এই পদক ও সনদপত্র গ্রহন করেন, সুপার ভাইজার ইকবাল কবির জাহিদ।
চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক ও সনদপত্র গ্রহনকারী শিক্ষার্থীরা হলেন,
২০১৩-১৪: মো: তারিকুজ্জামান, নওশিন ফারজান, জান্নাতুল আসমা।
২০১৪-১৫: অমিত কুমার মন্ডল, স্বপ্নীল বিশ্বাস, সায়েদুজ্জামান নিশি, মো: ইসমাইল।
২০১৫-১৬: শ্রীমন্ত রয়, স্বর্না বিশ্বাস, মোসা: শারমিন আক্তার, সজনী খাতুন ও জারিন খান মুন।
২০১৬-১৭: অটল মন্ডল, মোসা: বিউটি খাতুন, মাহাদিয়া তাবাসসুম, মো: সাফায়েত হোসেন, অনামিকা পোদ্দা ও রওনক আরা।
২০১৭-১৮: খাদিজা আক্তার রিতা, ফারহানা সুলতানা ও মো: তানভীর ইসলাম।
ভিসি এ্যাওয়ার্ড ও সনদপত্র পেয়েছেন;
২০১৩-১৪: মাহবুবা ডেইজী, সুরাইয়া সাইদুন্নাহার ও আসমা আক্তার।
২০১৪-১৫: মো: আবু হাসান, শোয়েব মোহাম্মদ ও ফারজানা আক্তার রিমা, পলি রানী কুন্ডু, ত্রিনা মিত্র, হোসনেয়ারা আক্তার ও উম্মে সাদিয়া।
২০১৫-১৬: রুনাপা শারমীন মুন, আতিকুর রহমান, মোছা: শামীমা আক্তার ও কাজী মুন্তারিন তাবাসসুম। আতিকুর রহমানের পক্ষে তার পিতা আজিজুল ইসলাম পদক ও সনদপত্র গ্রহন করেন।
২০১৬-১৭: মো: রুবেল মিয়া, তানজিলা হাসান ময়ুরী, এস.এম কদও, রিপা নুর চাদনী, নাসরিন সুলতানা ও সালমা জাহান লাভলী।
২০১৭-১৮: আনোয়ারা খাতুন, মন্দিরা দত্ত, সুরাইয়া আলম রজনী, তানজুম কবির খুকু, কবিতা খাতুন ও মো: রাকিবুল হাসান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button