মালয়েশিয়ায় নতুনভাবে বিদেশি কর্মীদের কোটা অনুমোদন বন্ধ করলেও আপাতত বাংলাদেশের জন্য নেই কোনো দুশ্চিন্তা। কারণ ইতোমধ্যে বাংলাদেশের জন্য ৩ লাখের বেশি কোটা অনুমোদন করে রেখেছে মালয়েশিয়া। এখন নিয়মিত কর্মী পাঠালেও এই কোটা পূরণ হতে বাংলাদেশের লাগবে আরও এক বছর। সে পর্যন্ত নিয়মিত কর্মী যেতে পারবে মালয়েশিয়ায়। বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানিকারক, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং মালয়েশিয়ার কূটনৈতিক সূত্রগুলো এ তথ্য জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী ভি শিবকুমার চলতি সপ্তাহে ফরেন ওয়ার্কার এমপ্লয়মেন্ট রিল্যাক্সেশন প্ল্যানে (পিকেপিপিএ) বিদেশি কর্মীদের জন্য নতুন করে কোটার আবেদন ও অনুমোদন ১৮ মার্চ থেকে পরবর্তী তারিখ ঘোষণা না করা পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করেছেন। এই স্থগিতাদেশের আগে নিয়োগকর্তাদের আবেদনের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট শ্রমিকের কোটা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত এ নির্মাণ, পরিষেবা, উৎপাদন, কৃষি, খনন, খনি এবং বৃক্ষ রোপণসহ মোটামুটি সব খাতেই ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৩৯৬ জন শ্রমিককে অনুমোদন দিয়েছি। এর মধ্যে বাংলাদেশের জন্য রয়েছে সাড়ে ৩ লাখের কোটা। মালয়েশিয়ার মন্ত্রী তার ঘোষণায় বলেছেন, যাদের যে কোটায় আনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শ্রমিক আনতে হবে। নিয়োগকর্তারা আগের অনুমোদিত কর্মীদের প্রবেশ নিশ্চিত করার পরই স্থগিতাদেশ পর্যালোচনা করা হবে। বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানিকারকরা বলছেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশের যে কোটা অনুমোদন হয়েছে তাতে আরও এক বছর যেতেও কোনো সমস্যা হবে না।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য যারা ডাটাবেজ পূরণ করেছেন তাদের যেতে কোনো বাধা থাকবে না।
কর্মী প্রেরণ আরও পরিচ্ছন্ন হওয়ার আশা : গতকাল ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক। বৈঠক শেষে প্রবাসী কল্যাণ সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, দুই দেশের আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে। এতে আমাদের যে অনলাইন সিস্টেম আছে, সেটাকে মালয়েশিয়ার সঙ্গে ইন্টিগ্রেট করা হয়েছে। এটা আগে হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হয়নি। তারা তা বাস্তবায়ন করতে সম্মত হয়েছে। আমরা আশা করছি, আগামী ১৫ এপ্রিলের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন হবে। এখান থেকে কর্মী নেওয়া, ক্লিয়ারেন্স এবং রিক্রুটমেন্টের সঙ্গে তাদের ডাটাবেজের সমন্বয় হবে। এর মাধ্যমে আমাদের দেশ থেকে কর্মী যাওয়ার বিষয়টি আরও পরিচ্ছন্ন হবে। সচিব বলেন, যে পরিমাণ ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছি, ওই পরিমাণ কর্মী এখন পর্যন্ত বিদেশ যেতে পারেনি। এখানে কিছু সমস্যা আছে। আমরা তাদের ভিসা প্রসেসিংয়ের জন্য বাড়তি সেন্টার চালু করতে বলেছি। এটা যত দ্রুত সমাধান করা যায় সে বিষয়টি দেখতে বলেছি। মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে খরচ যেন কম হয় এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যে ক্ষেত্রগুলো আছে, তারা যেন সেগুলো মনিটরিং করে। বাংলাদেশ থেকে কর্মী যাওয়ার ক্ষেত্রে বেশির ভাগ খরচ নিয়োগকর্তাদের বহন করার কথা। সেগুলো কতটুকু হচ্ছে সে বিষয়ে কথা হয়। প্রসেসিংটাকে ত্বরান্বিত করা এবং কর্মী কত দ্রুত পাঠানো যায় সেটিই ছিল আলোচনার মূল বিষয়। সচিব জানান, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে কিছু ফি আছে যেগুলো নিয়োগকর্তার বহন করার কথা। অনেক ক্ষেত্রে এগুলো কর্মী ও এজেন্টের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে এ বিষয়গুলো অতি দ্রুত স্পষ্ট করার কথা জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার কর্মকর্তারা।