ব্রিজঘাট বাজার’ উচ্ছেদ নেই, আছে ইজারা সড়কে বিষফোড়া
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা খোয়াজনগর এলাকায় সিডিএ’র জমিতে গড়ে উঠা ‘ব্রিজঘাট কাঁচাবাজার’টি সড়কের উপর হলেও ২০ বছরেও প্রশাসনের কোন বিভাগের টনক নড়ছে না। নীরব রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং দক্ষিণ জোনের ট্রাফিক বিভাগ। বাজারটির জমি সিডিএ’র অধিগ্রহণকৃত হওয়ায় অনেক সময়ে সিডিএ উচ্ছেদ করলেও পুনরায় বাজার বসে যায় নিমিষেই।
ফলে, সড়কের উপর বাজার বসায় যান চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন বিকেল থেকে ওই সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। পথচারী থেকে শুরু করে চাকরিজীবি যাত্রীরাও সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এছাড়া যত্রতত্র রাস্তার উপর ভাসমান দোকান বসায় ঘটছে নানা দুর্ঘটনাও।
জানা যায়, পুরো মহাসড়ক আইন সংশোধন করে গত ডিসেম্বরে জারি করা আইন অনুযায়ী, সড়কের ভূমির প্রান্তসীমা থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত সংরক্ষিত অংশ। আগে থেকে অনুমতি না নিয়ে এই অংশে হাট-বাজার বসানো, অবকাঠামো তৈরি কিংবা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ওই অংশটি ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু এ আইন মানছে না সংশ্লিষ্ট কোন বিভাগ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, চরপাথরঘাটার ব্রিজঘাটে সড়কের উপর সন্ধ্যাবাজারটি সড়কের উভয় পাশ দখল করে রেখেছে। গড়ে উঠেছে ভাসমান দোকান পাট ও কাঁচাবাজার। ব্যস্ততম এ সড়কের দু’পাশের অংশ এখন তাঁদের দখলে। এতে সড়কের ওই স্থানে যানবাহন চলাচলে ব্যাপক বাধার সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, সড়কের উপর এভাবে বাজার বসানো পুরোপুরো অবৈধ। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্নে মানুষের চলাচল নিশ্চিত করতে এ বাজারটি উচ্ছেদ করা জরুরী। কিন্তু কেন বাজারটি সরানো হচ্ছে না এর কারণ অনুসন্ধানে কিছু তথ্য মিলে।
সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন বাজারটির ইজারা দরপত্র ঘোষণা করেন। ১৫ লাখে বাজারটি ইজারা পেয়েছেন এক ব্যক্তি। ২০ বছরের বেশি সময় ধরে বাজারটি বসলেও উপজেলা প্রশাসন কিংবা পরিষদ এর আগে বাজারটি কখনো ইজারা দেননি। বিগত সময়ে যে ৫ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কর্ণফুলীতে দায়িত্ব পালন করে গেছেন, তাঁরাও কখনো বাজারটি ইজারা দেওয়ার চেষ্টা করেননি।
জানা যায়, কর্ণফুলী উপজেলা প্রতিষ্ঠার আগেও একই প্রক্রিয়ায় ২০০৮ সালে পটিয়া উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী অফিসার মো. শহীদুল আলম পুরাতন ব্রীজঘাট বাজারটি ইজারা প্রদানের জন্য দরপত্র বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন। কিন্তু বিষয়টি সে সময় সিডিএ’র নজরে আসলে চিঠি দেওয়ায় ইজারা তালিকা থেকে বাজারটি বাদ যান।
উচ্ছেদ না করে কেন অবৈধ বাজারটি ইজারা দেওয়া হচ্ছে জানতে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুনুর রশীদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ওদিকে, চট্টগ্রাম দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, ‘এভাবে সড়ক ও জনপথের সড়কের উপর বাজার বসানোর ফলে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরী হয়। আইনে এসব বাজার সম্পূর্ণ অবৈধ। এসব বাজারের কারণে নিরাপদ সড়ক গড়ার উদ্যোগ সফল হচ্ছে না ।