দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তাবিত সংসদীয় আসনের খসড়ার পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন সাবেক, বর্তমান এমপি ও অন্য জনপ্রতিনিধিরা। এ ছাড়া সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিলেও বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে দাবি-আপত্তি জানিয়েছেন। আজ সেই দাবি-আপত্তির পক্ষে-বিপক্ষে শুনানি শুরু করবে নির্বাচন কমিশন। চার ধাপে বিভাগওয়ারি এ শুনানি হবে। আজ প্রথমদিনে কুমিল্লা অঞ্চলের আবেদনগুলোর শুনানি হবে।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, ৩৮ সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে ১৮৬টি আবেদন পড়েছে। প্রকাশিত খসড়া ইসির পক্ষে ৬০ আবেদন এবং বিপক্ষে পড়েছে ১২৬ আবেদন।
সূত্র জানিয়েছে, আবেদনকারীদের মধ্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানসহ ১৪ জন বর্তমান এমপি রয়েছেন। সাবেক এমপিও রয়েছেন চারজন। এ ছাড়া বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী ঐক্য জোটের নেতারাও আবেদন করেছেন আসন নিয়ে। তবে শতাধিক দাবি-আপত্তির মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কিশোরগঞ্জে আসন বৃদ্ধির দাবিও রয়েছে। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কুমিল্লা অঞ্চলের আবেদনগুলোর শুনানি হবে আজ ৩ মে। সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শুনানি হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের। এরপর সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শুনানি হবে কুমিল্লা-১, ২, ৮, ৯ ও ১০ আসনের। বিকাল ৩টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত শুনানি হবে নোয়াখালী-১, ২ এবং চাঁদপুর ১, ২, ৩, ৪ ও ৫ আসনের। এ ছাড়া রাজশাহী অঞ্চলের আসনগুলো নিয়ে আবেদনের শুনানি হবে ৭ মে সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। ঢাকা, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর অঞ্চলের আবেদনের শুনানি হবে ১১ মে এবং বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের আবেদনগুলো নিয়ে শুনানি হবে ১৪ মে। আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের বেজমেন্টের সভাকক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য নির্বাচন কমিশনাররা আবেদনগুলো শুনবেন। শুনানিতে যুক্তি উপস্থাপনের সুযোগ পাবেন আবেদনকারীরা। এরপর কমিশন আবার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে। ইসি সূত্র জানিয়েছে, নির্ধারিত সময়ে ৩৮টি সংসদীয় আসন থেকে মোট ১৮৬টি আবেদন পাওয়া যায়। এর মধ্যে সীমানা বহালের পক্ষে ৬০টি ও সীমানা পরিবর্তন চেয়ে আবেদন পড়ে ১২৬টি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে খসড়া প্রকাশ করেছিল ইসি। তবে খসড়ায় আসনগুলোর বর্তমান সীমানাই বহাল রাখা হয়। নতুন প্রশাসনিক এলাকা (উপজেলা ও ওয়ার্ড) সৃষ্টি হওয়ায় শুধু ছয়টি সংসদীয় আসনে পরিবর্তন এসেছে। তবে তাতে কোনো আসনের বর্তমান সীমানার পরিবর্তন হয়নি। শুধু নতুন প্রশাসনিক এলাকার নাম যুক্ত হয়েছে। ইসির প্রকাশিত খসড়া নিয়ে কারও দাবি আপত্তি থাকলে তা ১৯ মার্চের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছিল। ইসি সারা দেশকে ১০টি অঞ্চলে ভাগ করে কার্যক্রম পরিচালনা করে। এর মধ্যে রংপুর ও সিলেট অঞ্চলে কোনো দাবি-আপত্তি আবেদন পড়েনি। সীমানার পক্ষে-বিপক্ষে আবেদনের মধ্যে কুমিল্লা অঞ্চলে সর্বোচ্চ ৮৪টি, রাজশাহীতে ৪৩টি আবেদন রয়েছে। এ ছাড়া বরিশালে ২৯টি, ঢাকায় ১৮টি, খুলনা ও ফরিদপুর অঞ্চলে ৫টি করে এবং ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে একটি করে আবেদন রয়েছে। দাবি-আপত্তির আবেদন নিয়ে শুনানি শেষে আগামী জুনের মধ্যে ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করা হবে।