পেঁয়াজে ঝাঁজ, চিনিতেও আগুন
জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
ঝাঁজ বেড়েছে পেঁয়াজের। চিনিতে লেগেছে আগুন। চিনিতে মজুদ সংকট দেখিয়ে চলছে যাচ্ছে তাই। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম হয়েছে আকাশচুম্বী। অনেক পণ্যের ক্ষেত্রে দ্বিগুণের বেশি দাম বাড়তেও দেখা গিয়েছে।
চিনি ও তেলের পর এবার অস্থির হতে শুরু করেছে পেঁয়াজের বাজার। মাসের ব্যবধানে পাইকারিতেই পণ্যটির দাম কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা। এর প্রভাবে খুচরায় পেঁয়াজের কেজিতে বাড়তি ২০ টাকা টাকা গুণতে হচ্ছে ক্রেতাদের। অপরদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম কমে আর বাড়ে। বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা অনেকটা দুর্বল বলেছেন ক্রেতারা।
আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে দেশে চিনির দাম কেজিতে ১৬ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা এসেছে। তবুও বাজারে এখন এর চেয়ে বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি। কেজি প্রতি ১৬ টাকা বাড়িয়ে প্রতি কেজি চিনি খোলা বাজারে ১২০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু আদৌও ক্রেতারা ওই দামে চিনি পাচ্ছেন না। আমদারি কারকরা শোনান নানা অজুহাত।
চট্টগ্রামের বৃহত্তর ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জে এক মাস আগে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৩৫ টাকায়। বর্তমানে পাইকারিতেই প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ঠেকেছে ৫০ টাকায়। অপরদিকে খুচরা বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০ টাকায়।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, গত মার্চ থেকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ আছে। পাশাপাশি স্থলবন্দর দিয়েও পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। তাই এখন পুরোপুরি দেশি পেঁয়াজের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। চাহিদা মেটাতে পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর থেকে পেঁয়াজ আনা হচ্ছে।
বাজার থেকে প্যাকেটজাত চিনি হাওয়া হয়ে গেছে, প্যাকেটজাত চিনি অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরেই এমনটি দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাজারে কী চলছে, সেটা বড় কথা না। ট্যারিফ কমিশন দেখে, কত দামে আমদানি করা হয়েছে, তার একটি গড় মূল্য নিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়। তবে এতে ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিয়ে থাকে। যেমন আজকে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু নতুন দামের চিনি আসার আগেই তারা সুযোগ নিয়ে ফেলে।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে কমতে শুরু করেছে মুরগির দাম। গতসপ্তাহে ২২০ টাকায় বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি আজ বিক্রি হচ্ছে ২১৫ টাকায়। পাশাপাশি কক ৩৪০ ও পাকিস্তানি লেয়ার ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিকেজি গরুর মাংস ৭৮০ থেকে ৮শ এবং খাসি ১১শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, ‘গত দুমাস ধরে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। তাই এখন পুরোপুরি দেশি পেঁয়াজের উপর আমরা নির্ভর করছি। সরবরাহও আমাদের ভাল রয়েছে যা দিয়ে বর্তমান চাহিদা সামাল দেয়া যাবে। তবে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসলে সরবরাহ আরো বেড়ে যাবে। তখন দাম অনেকটাই কমে যাবে।’
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘রোজার আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ে। কোরবানির আগে নানা অজুহাতে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম বাড়ে। এটা নতুন কিছু নয়। সরবরাহ ভাল তবুও কেন পেয়াজের বাজার চড়া বিষয়টি তদারকি করা দরকার। এজন্য প্রয়োজন নিয়মিত অভিযান এবং কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা।’