উচ্ছেদ হওয়া ব্যবসায়িদের পাশে নেই চরপাথরঘাটার চেয়ারম্যান!
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটার ব্রিজঘাট থেকে ৩ শতাধিক দোকান বিনা নোটিশে উচ্ছেদ করলেও দেখা মিলেনি সংশ্লিষ্ট চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী ছাবের আহমেদ কে! অথচ ওদিকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। গত (২৩ মে) এসব স্থাপনা চোখের নিমিষেই গুঁড়িয়ে দেয় সিডিএ। উচ্ছেদে অভিযানে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষ (সিডিএ) এর স্পেশাল মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা আফরোজ চৌধুরী।
কিন্তু চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে সাধারণ মানুষের পাশে দেখা যায়নি হাজী ছাবের আহমদকে। তবে গত নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম হক কে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়িদের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে। পাশাপাশি দোকানহারা ব্যবসায়িদের নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে ভূমিমন্ত্রীর কাছেও তিনি সাধারণ মানুষের কষ্ট তুলে ধরেছেন।
ফলে, গত ৫ দিন ধরে আশ্রয় হারা ব্রিজঘাট কাঁচা বাজারের ব্যবসায়িরা পূনরায় বাজার বসানোর সুযোগ পেয়েছেন। সিডিএ উচ্ছেদ ও ভাঙনে বিলীন হওয়া ধ্বংসস্তূপ থেকে দাঁড়াতে শক্তি খোঁজার চেষ্টা করছেন। কেননা, এসব ব্যবসায়িদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করার একমাত্র অবলম্বন এসব ক্ষুদ্র দোকানগুলো। নোটিশ বিহীন সিডিএ’র দুই দিনের উচ্ছেদে ৩০০ শত দোকানদারের প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারেরা দোকানের জিনিসপত্র ও মালামাল কুঁড়িয়ে নেওয়ার সময় পায়নি। এ রকম অভিযান খুবই অমানবিক বলে উল্লেখ করেছেন যুবলীগ নেতা সেলিম হক। উচ্ছেদে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারদের অভিযোগ, ‘তাঁরা দীর্ঘ ২০ বছর যাবত ব্রিজঘাট বাজারে ব্যবসা করে আসছিলেন। কিন্তু সিডিএ গুঁড়িয়ে দেয়। ধ্বংসস্তুপে আবারো যেন দোকান তৈরি করতে না পারে সেজন্য কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখেন। নতুন করে বাজার ইজারার টোল গুনতে হতো। তবুও তাঁরা উচ্ছেদের কবলে পড়ে দিশেহারা অবস্থায় থাকলেও স্থানীয় চেয়ারম্যান ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের কোনো দেখা মিলেনি। তাঁরা কী করবেন, তাঁরা কোথায় বসবেন, কী করবে—এসব নিয়েও জনপ্রতিনিধিদের কোনো মাথাব্যথা নেই।’
ব্রিজঘাট বাজারের কাঁচা তরকারি ব্যবসায়ি মো. সালাম বলেন, ‘সিডিএ উচ্ছেদ ও স্কেভেটর মেশিনে ভাঙনের শিকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। কিন্তু চেয়ারম্যান-মেম্বারেরা একদিনও খোঁজ নেয়নি।’ বাজার সমিতির সভাপতি জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘সিডিএ দোকান ভাঙেনি, সিডিএ আমরা গরিব মানুষের স্বপ্ন ভেঙেছেন।’
অন্যদিকে, কাঁচা বাজার সমিতির সভাপতি মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘দোকান হারিয়েছি। আয়-রোজগার করার কোন পথ নেই। আমরা অসহায় ছিলাম। চেয়ারম্যান-মেম্বারও খোঁজ নেয়নি। যুবলীগ নেতা মুহাম্মদ সেলিম হক ও আনোয়ার সাদত মোবারক পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমরা সাহস পাচ্ছি। তাঁরা মন্ত্রী মহোদয়ের কাছেও গেছেন। উনিই আমাদের অভিভাবক ও ভরসা।’
এ ব্যাপারে জানতে চরপাথরঘাটার ইউপি চেয়ারম্যান হাজী ছাবের আহমদ এর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে গতকাল খোয়াজনগর ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুন নুর তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানান, ‘স্থায়ী পূর্ণবাসন হলে চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী ছাবের আহমেদ অবশ্যই জানবেন। বিগত দুঃসময়ে চেয়ারম্যান সাহেব আপনাদের পাশে যেভাবে ছিলো। ভবিষ্যতেও থাকবে। চেয়ারম্যান সাহেব চিকিৎসার জন্য বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। উনি খুব তাড়াতাড়ি ফিরবেন।’