চৌগাছায় চাঁদা না পেয়ে ঘেরে বিষ প্রয়োগ, কোটি টাকার মাছ নিধন
চৌগাছায় ২০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে রাতের আঁধারে ঘেরে বিষ দিয়ে কোটি টাকার মাছ মেরে সাবাড় করেছে দুর্বৃত্তরা। ২১ বিঘার ঘের মরা মাছের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এক রাতের মধ্যে নিঃস্ব হয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ঘের মালিক। অভিযোগ করা হয়েছে, প্রতিহিংসার জের ধরে চিহ্নিত সন্ত্রাসী শামীমের নেতৃত্বে এ অমানবিক কর্মকান্ড চালানো হয়েছে। তার সাথে ছিল ইমরান, ফয়সালসহ অন্তত ১০-১২ জন। বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা। ঘটনাটি ঘটে গত ৩০ জুন রাতে চৌগাছা উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের নগরবর্ণী গ্রামে।
ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষি ও ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জানান, এলাকার ঐতিহ্যবাহী বেড়গোবিন্দপুর বাওড় সর্বোচ্চ দামে ইজারা নেন তিনি। ইজারা পাওয়ার পর থেকে তার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে শামীম। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় নানা ধরনের হুমকি ধামকিও দেয়। এছাড়া, বড় ধরনের ক্ষতির পরিকল্পনা করতে থাকে সে। তার জের ধরে গত ৩০ জুন রাতে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলে করে একদল সন্ত্রাসী এসে তার ঘেরে বিষ ঢেলে দিয়ে সটকে পড়ে। পহেলা জুলাই সকালে দেখেন তার ঘেরের মাছ মারা যাচ্ছে। বিকেল হতেই সব মাছই মারা যায়। মারা যাওয়া মাছের মধ্যে ৫০০ মণ পাবদা, টেংরা ও ১০০ মণ সাদা মাছ রয়েছে। যার বাজার দাম প্রায় এক কোটি টাকা।
ঘেরের পাহারাদার ফারুক হোসেন জানান, একটি প্রাইভেটকার ও ৫-৬ টি মোটরসাইকেলে কয়েকজন অচেনা যুবক ঘেরের কাছে আসে। তাদের চলাফেরা দেখে তার সন্দেহ হয়। চলে যাওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে মাছ মারা যেতে থাকে।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হরিদাশ কুমার দেবনাথ বলেন, মাছের ঘেরটি তিনি পরিদর্শন করেছেন। বিষ প্রয়োগের কারণেই সব মাছ মারা গেছে, যা তাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে। তিনি আরও জানান, মৃত মাছ সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন।
চৌগাছা থানার ওসি তদন্ত জিল্লাল হোসেন জানান, বিষয়টি তারা জেনেছেন। ঘের মালিকের সাথে পুলিশের কথা হয়েছে। বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছেন। অভিযুক্ত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি চাঁদার দাবিতে সন্ত্রাসীরা ইউনিয়ন পরিষদে হামলা চালিয়ে চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে মারপিট করে। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ ও প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে শামীম জানান, তিনিও ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। তার জনপ্রিয়তা ও সুনাম রয়েছে। তার সুনাম ক্ষুন্ন করতে একটি পক্ষ এ ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। তিনি দাবি করেন, চেয়ারম্যান কাশেমের লোকজন নিজেরাই বিষ দিয়ে মাছ মেরে তাদের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।